আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভাবছেন তো, এই চারের মধ্যে সম্পর্ক কোথায়? এসব কীসের সূত্র?
আসলে এটা একটা লড়াই। বিরল অসুখে আক্রান্ত মিহির নামে বছর আটেকের এক শিশুকে বাঁচাতে এ ভাবেই প্রাণপাত করছেন হায়দরাবাদের ৪০ জন নার্স। প্রায় দু-বছর ধরে, ২৪x৭ ঘণ্টা জেগে, পালা করে তাঁরা কর্তব্য পালন করে যাচ্ছেন।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, বিরল জেনেটিক ডিজঅর্ডার নিউরোফাইব্রোমেটোসিস টাইপ-১ এ আক্রান্ত মিহির। কার্গিল সৈনিক মনোজকুমার শিকদারের সন্তান মিহিরকে ২০১৪-র ৯ জুন কেআইএমএস হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। দু-বছর পূর্ণ হতে ২৮ দিন আরও বাকি। এই সময়টার মধ্যে মিহিরের জন্য ১৬,৫৬০ ঘণ্টা ননস্টপ ডিউটি করে ফেলেছেন নার্সরা! তিনটে শিফটে, নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেয়াল রাখছেন শিশুটির।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক নার্স দিবসে সামনে আসে খবরটি। শিশুটির জন্য নার্সদের এমন অঙ্গীকার দেখে, সকলেই অভিভূত। নার্সিং স্কুলে দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু, ভালো নার্স হতে গেলে লাগে অপরিসীম ধৈর্য। সমবেদনা ও ভালোবাসা। যার কোনও হাতে-কলম পাঠ হয় না। অথচ, এই তিনগুণের উপরই নির্ভর করে রোগী কত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। বলছিলেন হাসপাতালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (নার্সিং) ডেবরা জোসেফ।
শুধু এই নার্সরাই নন, ডাক্তাররাও বলছেন আট বছরের শিশুটির লড়াই থেকে তাঁরাও অনেক কিছু শিখছেন। জিনের এই বিরল অসুখের লক্ষণ অনেকটা মোয়ামোয়া সিনড্রোমের মতো। এই অসুখে মস্তিষ্কের রক্তনালিগুলো সংকীর্ণ হয়ে আসে। দেখা যায় শিরদাঁড়ার সমস্যা। শ্বাসকার্যের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখতে বাইরে থেকে নল লাগাতে হয়।
নন্দা কিশোর নামে এক ডাক্তারের কথায়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছে শিশুটি। তার থেকে আমাদের সবারই শেখার রয়েছে। তিনি জানান, জিনের এই অসুখের কারণে মিহির কোনও দিনই হাঁটতে পারবে না। কিন্তু, ভবিষ্যতে যাতে অন্তত বসতে পারে, সর্বক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকতে না-হয়, এখন সেটা অন্তত নিশ্চিত করতে চাইছেন ডাক্তাররা। যদি এটা সম্ভব হয়, সেটাই হবে আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি, বলছিলেন নন্দা।-এই সময়
১৪ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ