আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে চীনের। এরমধ্যেই প্রথমবারের মতো প্রশান্ত মহাসাগরে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রসমৃদ্ধ সাবমেরিন পাঠাতে যাচ্ছে চীন। ঠিক কবে থেকে সাবমেরিনটি মোতায়েন করা হবে সে ব্যাপারে চীনের সেনা কর্তৃপ কিছু না জানালেও তারা বলছে এ ধরনের পদকক্ষেপ অনিবার্য।
নিত্য নতুন অস্ত্র ব্যবস্থা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে চীনের প্রতিবন্ধক শক্তি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে তাদের আর বিকল্প কিছু করার ছিল না বলে দাবি করেছে চীনা সেনাবাহিনী।
দণি চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। গত মার্চে দণি কোরিয়ায় থাড পেণাস্ত্রবিরোধী স্টেশন স্থাপন এবং উৎপেণের আধাঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে চীনে আঘাত হানতে সমতাসম্পন্ন পেণাস্ত্র পরীার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। আর এর পর থেকেই বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা আরো চরমে পৌঁছে। সে উত্তেজনাকে আরেক ধাপ বাড়িয়ে পেণাস্ত্রসমৃদ্ধ সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণা দিলো চীনা সেনাবাহিনী।
ব্যালাস্টিক পেণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন প্রযুক্তি নিয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে চীন। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটি, প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধ ও নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে এত দিন সাবমেরিন মোতায়েন করতে পারেনি দেশটি। এ পর্যন্ত প্রতিরোধক নীতিমালার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে এসেছে চীন।
দেশটির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতিতে চীন কখনো আগ বাড়িয়ে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করবে না। তবে সম্প্রতি কংগ্রেস বরাবর পেন্টাগনের দেয়া এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, ‘২০১৬ সালেরই কোনো একটি সময়ে চীন প্রথম পারমাণবিক প্রতিবন্ধক টহল চালাতে পারে।’ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আগেই এ ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রবিশিষ্ট সাবমেরিন মোতায়েনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে টর্পেডো অর্থাৎ বিস্ফোরক মুখ এবং পেণাস্ত্রকে একসাথে করে তা নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে হয় এবং তাদের তা ব্যবহারের অনুমতি দিতে হয়।
উত্তর কোরিয়া তাদের চতুর্থ পারমাণবিক পরীা চালানোর পরই যুক্তরাষ্ট্র দণি কোরিয়ায় থাড পেণাস্ত্রবিরোধী অস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বেইজিং কর্তৃপরে দাবি চীনের বেশ কিছু এলাকা থাড সিস্টেমের আওতায় পড়বে। সিউল কর্তৃপকে সতর্ক করে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, থাড প্রযুক্তি স্থাপন করা হলে দণি কোরিয়ার সাথে মুহূর্তেই দেশটির সম্পর্ক নষ্ট হবে।
গত মঙ্গলবার হাইনান দ্বীপ থেকে ৫০ মাইল দূরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিমান ও দু’টি চীনা যুদ্ধবিমানের মধ্যে প্রায় সংঘর্ষই হতে যাচ্ছিল। এ হাইনান দ্বীপে চীনের চারটি জিন কাস ব্যালাস্টিক পেণাস্ত্র সাবমেরিন রয়েছে। আর পঞ্চমটি এখনো নির্মাণাধীন। একই অঞ্চলের বিতর্কিত দ্বীপগুলোর কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নৌবাহিনীও কাছাকাছি হয়ে গিয়েছিল যা দুই দেশের জন্য অস্বস্তিকর ছিল।
২৭ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম