আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমরা নিঃসন্তান। তবে ওঁর দাদার ছেলে দেবাঞ্জন ওঁকে বাবার মতো দেখতো। খুব ভালবাসত তার কাকাকে। এভারেস্টে নতুন করে বরফ পড়তে শুরু করেছে বলে শুনেছি। উদ্ধার অভিযানও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাকে মেনে নিতেই হবে যে, আমার স্বামী আর ফিরবেন না। রাজ্য সরকারের প্রতি আমার কোনও অভিযোগ নেই। আবহাওয়া যদি খারাপ হয়ে থাকে, তবে শেরপারাই বা আর কী করবেন। ওঁরা তো মানুষ। তবে আমার অনুরোধ, পরের বার যেন ওঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। নেপালে রওনা হওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে ওঁকে ছাড়তে গিয়েছিলাম। সেই শেষ দেখা। ফোনে কথা হতো। গত ১৬ মে রাত ৯টা নাগাদ শেষ কথা হয়েছিল। কোনও সরঞ্জাম নিতে যাতে ভুলে না যান, সে কথা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছিলাম। যতটা সম্ভব সাবধানে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু ওঁদের দলের সকলেই দুর্ঘটনায় পড়লেন। শুধু সুনীতা হাজরা ফিরতে পেরেছেন। তবে তিনি-ও অসুস্থ বলে শুনেছি।
আমরা নিঃসন্তান। তবে ওঁর দাদার ছেলে দেবাঞ্জন ওঁকে বাবার মতো দেখতো। খুব ভালবাসত তার কাকাকে। দেবাঞ্জন আমাদের ছেলেরই মতো। ক্লাস টেনে পড়ে ও। দুর্ঘটনা সম্পর্কে সব কিছুই শুনেছে। তার পর থেকেই বলছে, ‘‘আমি নিজে দেখতে চাই, ব্যালকনি জায়গাটা কেমন। আমি নিয়ে আসব কাকাকে।’’ আসলে ছোটকাকার স্বপ্নগুলো ওর খুব প্রিয়। দাদা এখনও নেপালে রয়েছেন। তিনি শহরে ফেরার পরেই সিদ্ধান্ত নেব, এর পরে কী করব। কর্মক্ষেত্রে আমার স্বামীকে অনেকেই ‘পাহাড়ি গৌতম’ বলে ডাকতেন। লালবাজারেও তিনি ওই নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তাই তাঁর দুর্ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশকে সব সময়ই পাশে পেয়েছি। অনেকেই পাশে থেকেছেন। কিন্তু এবার আমাকে শক্ত হতে হবে। আমাকেও মানতে হবে সত্যিটা। শুধু একটাই আর্জি, ওঁর দেহ যেন নামিয়ে আনা হয়।-এবেলা
৩০ মে, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ