আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, প্রায় ৩৮ বছর আগে যে চেতনা নিয়ে শত্রুদেরকে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছিল সেই বিপ্লবী চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (র) এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক সমাবেশে এ আহ্বান জানান আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী। রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে দশ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেন। ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইমাম খোমেনীর নেতৃত্ব ইরানে ইসলামি বিপ্লব চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয় এবং আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে।
প্যারিস টুডের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, আজ ৩ জুন (শুক্রবার) এক সমাবেশে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “আমাদের জন্য ছোট বড় নানা শত্রু আছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে আমেরিকা ও ব্রিটেন।”
সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় সর্বোচ্চ নেতা ইরানের সঙ্গে আমেরিকার নানা শত্রুতার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনকে দিয়ে ইরানের ওপর আট বছরের যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল এই আমেরিকা। এছাড়া, ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করেছে মার্কিন সেনারা, ইরানের তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে আমেরিকা এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র মাধ্যমে আমেরিকা ইরানে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী সুস্পষ্ট করে বলেন, “কোনো ব্যক্তি বা সরকার যারা ইসলামের জন্য কাজ করছে তারা যদি আমেরিকাকে বিশ্বাস করে তাহলে তারা এক সময় আমেরিকার হাতেই থাপ্পড় খাবে।”
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিপ্লবী চেতনার কারণেই ইরানের সঙ্গে আমেরিকার শত্রুতা। তারা ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে এই বিপ্লবী চেতনার কারণে। এর কারণ হচ্ছে শত্রুরা ইসলামি বিপ্লবকে ভয় পায়।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “কেন তারা বিপ্লবের বিরোধিতা করে? এর কারণ হলো ইরান তখন সম্পূর্ণভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল; এখন সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এর পাশাপাশি ইরানের বিপ্লব অন্য অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে গেছে।”
ইমাম খোমেনীর নেতৃত্বে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবকে ইরানের জনগণের জন্য “বিশেষ ও অনন্য” সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বিপ্লবের পথ থেকে যেকোনা রকমের বিচ্যুতির বিরুদ্ধে জাতিকে সতর্ক করেন।
গত বছরের জুলাই মাসে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে পরমাণু সমঝোতার পর পশ্চিমা দেশগুলোর আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করার বিষয়ে সর্বোচ্চ নেতা ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদেরকে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেছেন, “শত্রুরা সবসময় হুমকি-ধামকির ভাষা ব্যবহার করবে তা নয়; বরং কখনো কখনো তারা চিঠি লিখে বা সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাতে পারে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান যদি তাদের দ্বারা প্রতারিত হয় তাহলে বুঝতে হবে ইরানের সরকার শত্রুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে।”
৩ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই