আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলির গ্রামের বাড়ি কেনটাকির লুইসভিলে শুক্রবার তার দাফন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ আলীকে চির বিদায় জানাতে অংশ নিতে সেখানে জড়ো হয়েছে হাজারও মানুষ। ইসলামের এই সিফাহ সালারের মহান যোদ্ধার মৃত্যুশোকে কাতর কয়েক হাজার মানুষ প্রার্থনা করেছে তার জানাজায়। তাকে মুসলিম রীতিতে শেষ বিদায় জানানো হচ্ছে। তার নামাজে জানাজায় শরীক হতে সারা বিশ্ব থেকে মুসলমানরা সমবেত হন যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকির লুইসভিলেতে।
মোহাম্মদ আলির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিনি মুষ্টিযুদ্ধের রিংয়ে আজীবন আগ্রাসী লড়াই করেছেন। প্রতিপক্ষ বুঝে ওঠার আগেই ধরাশায়ী করেছেন তাকে। কিন্তু রিংয়ের বাইরে তিনি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম মানুষ, যে কিনা মানুষের শান্তি ও মঙ্গল চান। এটা অতি দুর্লব এক বৈশিষ্ট্য তার।
বৃহস্পতিবার কেনটাকি এক্সপোজিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত তার জানাজায় শরীক হতে ১৪,০০০ বেশি লোক টিকিট কিনেন। সারাবিশ্বের টিভি ও অনলাইনে তার জানাজার নামাজ প্রচারিত হয়।
মোহাম্মদ আলি তিনবার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। একাধারে একজন দক্ষ ও চতুর খেলাড়ি, রাজনৈতিক কর্মী এবং মানবতাবাদী আলি গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের একটি হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে সেপটিক শকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আয়োজকরা বলছেন, মুসলিমদের হিরো হিসেবে বিবেচিত মুহাম্মদ আলীর জানাজায় শরীক হওয়াটাকে অনেকেই বিরল সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
মাত্র ২২ বছর বয়সে ইসলামের পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন হেভিওয়েট বক্সিংয়ে তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মুহাম্মদ আলী।
গত ৫০ বছর তিনি ছিলেন একজন খ্যাতিসম্পন্ন মুসলিম, বিশেষ করে আমেরিকায়।
মুহাম্মদ আলীর মৃত্যুর মাধ্যমে আমেরিকার জনগণ মুসলিমদের সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানার সুযোগ পাবেন বলে আশা করছেন জানাজার আয়োজকরা।
গত শুক্রবার ৭৪ বছর বয়সে মারা যান মুহাম্মদ আলী। প্রথমে তিনি ন্যাশন অব ইসলামে যোগদান করলেও পরে ইসলামের মূলধারা সুন্নী ইসলামে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে তিনি বিশ্বের মুসলিমদের অনুপ্রেরণার উৎসে পরিণত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান ইসলামি পণ্ডিত এবং মুহাম্মদ আলীর জানাজায় ইমামতি করা ইমাম জায়েদ শাকির বলেন, ‘ বিশেষ যে কারণে মুহাম্মদ আলী অসংখ্য মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিলেন তা হলো তিনি তার ধর্মবিশ্বাস ও নীতির জন্য তার খ্যাতি, অর্থ, বিত্ত, গ্ল্যামারসহ সবকিছু বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ছিলেন।’
শুক্রবার তার জন্য সর্বধর্মীয় স্মৃতিচারণ সভার আয়োজন করা হয়েছে যাতে ইহুদি এবং খ্রিষ্টানরাও অংশ নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মসজিদগুলোতে তার জন্য বিশেষ দোয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মুহাম্মদ আলীর জানাজায় শরীক হতে ১৫৫০০ টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেয়া হলে তা এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। পরে টিকিটের সংখ্যা আরো বাড়ানো হয়।
১০ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম