আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সমকামীদের নাইটক্লাবে হামলাকারী ওমর সিদ্দিক মতিন তার প্রাক্তন স্ত্রীকে পেটাতেন। তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলেও দাবি তার প্রাক্তন স্ত্রীর।
ওমর মতিনের প্রাক্তন স্ত্রী সিতোরা ইউসিফি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটনপোস্টকে বলেন, ‘তিনি মানসিকভাবে স্থিতিশীল ছিলেন না। তিনি আমাকে পেটাতেন। তিনি ঘরে ফিরেই পেটানো শুরু করতেন, কখনও কাপড় না ধোয়ার জন্য, কখনও অন্য কোনও অজুহাতে।’
ইউসিফি জানান, ২০০৯ সালে একটি ডেটিং সাইটে ওমর মতিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তিনি ওমরের কাছে ফ্লোরিডায় চলে আসেন। সে বছর মার্চে তারা বিয়ে করেন। ফোর্ট পিয়ার্সে ওমরের পারিবারিক বাড়িতেই তারা থাকতেন।
তিনি বলেন, ‘তাকে দেখতে স্বাভাবিক মানুষ বলেই মনে হতো।’ তার প্রাক্তন স্বামী খুব বেশি ধর্মপ্রাণ ছিলেন না বলেও জানান ইউসিফি। তিনি জানান, ওমর মতিন মসজিদের চেয়ে বেশি সময় কাটাতেন জিমে। বিয়ের পর ওমরকে কখনও ইসলামি উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট হতেও দেখেননি তিনি। ওমর নিভৃতচারী ছিলেন বলেও ইউসিফি উল্লেখ করেন।
২০১১ সালে ইউসিফির সঙ্গে ওমরের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে তিনি অপর এক নারীকে বিয়ে করেন, তাদের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। ওমরের দ্বিতীয় স্ত্রী তার সম্পর্কে কোনও কথা বলতে চাননি বলে ওয়াশিংটনপোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও তার বিচ্ছেদ ঘটেছে।
ওমরের এক বন্ধু জানিয়েছেন, বিবাহ বিচ্ছেদের পর ওমর সৌদি আরবে যান কিছু সময়ের জন্য। তখন থেকেই তিনি ধর্মের প্রতি আরও আকৃষ্ট হন। তবে ইসলামিক স্টেট (আইএস) অথবা অন্য কোনও সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রতি ওমরের সহানুভূতি ছিল, এমনটা ওমরের ওই বন্ধু নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে আইএস ওমরকে তাদের যোদ্ধা বলে দাবি করেছে।
উল্লেখ্য, নাইটক্লাবে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ জন নিহত হন। আরও ৫৩ জন আহত হন ওই ঘটনায়। শনিবার (১১ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডো শহরের পালস নাইটক্লাবে ঢুকে গুলি চালান ওমর। এরপর তিনি নাইটক্লাবে অবস্থান করা লোকজনকে জিম্মি করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, ওমর মতিনের কাছে একটি রাইফেল, একটি পিস্তল এবং দুটি সন্দেহজনক যন্ত্র ছিল। স্থানীয় সময় আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে এসডব্লিউএটি-এর বিশেষ কমান্ডোরা জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য অভিযান চালান। ওই অভিযানে ওমর মতিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। -ওয়াশিংটনপোস্ট, বাংলা ট্রিবিউন
১৩ জুন/ এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম