সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬, ০৫:৫২:২৬

নাইট ক্লাবে হামলার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব নেতারা যা বললেন

নাইট ক্লাবে হামলার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব নেতারা যা বললেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডোর একটি সমকামী নাইট ক্লাবে হামলার ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও বিদ্বেষপ্রসূত কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে হোয়াইট হাউসসহ সব রাষ্ট্রীয় দপ্তরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

গত শনিবার রাতে অরল্যান্ডোর ‘পালস’ নামের ক্লাবটিতে এক বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হন। এক পর্যায়ে পুলিশের একটি দল সেখানে ঢুকে হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করে। প্যারিস টুডের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।

ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় বারাক ওবামা বলেন, “আমেরিকার একজন নাগরিক হিসেবে আমরা এই বর্বরোচিত হত্যা, নিরীহ লোকজনের ওপর ভয়ানক হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাই। যদিও এখন পর্যন্ত তদন্তকাজ প্রাথমিক অবস্থায় আছে, এরপরও আমরা বলতে পারি, এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং বিদ্বেষপ্রসূত কাজ।”

তিনি বলেন, “এতেগুলো নিরীহ মানুষের মৃত্যু আবারও মনে করিয়ে দিল যে, আমেরিকায় একটি প্রাণঘাতি অস্ত্র সংগ্রহ করে মানুষের দিকে গুলি চালানো কতোটা সহজ। আমরা এরকম একটি দেশ চাই কি না - সে সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে।”

ওবামা বলেন, “আমরা ভয়ের কাছে নতি স্বীকার করব না কিংবা একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াব না। এর পরিবর্তে আমরা আমাদের লোকজনকে রক্ষা ও আমাদের জাতীয়তাকে আগলে ধরে আমেরিকান হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকব। একই সঙ্গে যারা আমাদের হুমকি দেবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

সমকামীদেরও সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, একজন আমেরিকানের ওপর আঘাত মানে পুরো জাতির ওপর আঘাত।

হিলারির বিবৃতি : আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ঘটনা আমাদের আবারও বলল, যুদ্ধের জন্য যে অস্ত্র, তার স্থান আমাদের রাস্তায় হবে না।”

সমকামীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমাদের মুক্তভাবে, নির্ভয়ে বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমেরিকায় বিদ্বেষের কোনো স্থান হবে না।”

ট্রাম্পের টুইটার বার্তা : অরল্যান্ডোর ঘটনাকে ‘ইসলামি জঙ্গিদের কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ওবামার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

অরলান্ডো হামলার পরপরই এক টুইটারবার্তায় তিনি বলেন, ‘ইসলামী জঙ্গিবাদ’ নিয়ে তিনিই ঠিক বলে যারা সমর্থন করেছেন তাদের ধন্যবাদ। আমাদের দৃঢ় ও সতর্ক হতে হবে। এর পর পরই এক টুইটারবার্তায় তিনি বলেন, ‘ওবামা কি ইসলামিক জঙ্গিবাদ নিয়ে কোনো কথা বলবেন? এমনটি না করলে অপমানিত হয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত।’ একই সময় ধর্মীয় উসকানি দিয়ে ট্রাম্পের অপর টুইটবার্তা আসে। তিনি বলেন, অরলান্ডোর বন্দুকধারী ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ক্লাবে যাওয়া ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

অপর এক টুইটারবার্তায় আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করেন ট্রাম্প বলেন, ‘অরলান্ডোতে যা ঘটেছে তা মাত্র শুরু। আমাদের নেতৃত্ব দুর্বল ও অকার্যকর। আমি এই নিয়ে বলেছি এবং নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছি। বিষয়টি কঠিন হবে।’

রাজনীতি না করতে মুসলিম নেতার আহ্বান : ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস’-এর প্রধান নিহাদ আওয়াদ মানুষের আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে রাজনীতি না করতে রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আমেরিকায় মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ দেখাশোনাকারী সর্ববৃহৎ এই সংস্থাটির প্রধান নিহাদ আওয়াদ বলেছেন, সন্ত্রাসী এবং উগ্রপন্থীরা ওই হামলার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। ধরণের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

আইএসের দায় স্বীকার : পালস ক্লাবে হামলাকারী ওমর মতিন (২৯) মার্কিন নাগরিক বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ জানায়, নিহত ওমর ফ্লোরিডার এসটি লুইস কাউন্টিতে বাস করতেন।

তবে, তাকফিরি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দায়েশের বার্তা সংস্থা আমাক এক বার্তায় দাবি করেছে, তাদেরই এক সদস্য ওই হামলা চালিয়েছে। হামলার আগে মতিন মার্কিন পুলিশকে ফোন করে দায়েশের প্রতি আনুগত্যের কথা বলেছেন বলে লস এঞ্জেলেস টাইমসের খবরে দাবি করা হয়েছে।
১৩ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে