আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। খ্রিষ্টানদের প্রার্থনার জন্য গির্জা নির্মাণ করছেন মুসলিমরা। আর এটি বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক দেশে নয়। এটি হচ্ছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে গোজরা এলাকায়।
সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতি যেখানে চ্যাঞ্জেনের মুখে, জাতিগত সংঘাত যাদের নিত্যদিনের সমস্যা, সেই পাকিস্তানে ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন নজির সবার দৃষ্টি কাড়ে নিশ্চয়।
পাঞ্জাব প্রদেশের গোজরা এলাকায় খ্রিষ্টানদের জন্য গির্জা নির্মাণের এ উদ্যোগ নিয়েছেন যে মুসলিমরা, তারা উঁচুতলার ধনী নন, সাধারণ কৃষক শ্রেণির মানুষ। তাদের স্বল্প আয় থেকে টাকা জমিয়ে এ মহৎ কাজ করার চেষ্টা করছেন। নির্মানের কাজও চলছে পুরোদমে।
গির্জা নির্মাণের মাধ্যমে তারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে চান। দেখিয়ে দিতে চান, ব্যক্তিগত সম্পর্ক-ভালোবাসার কাছে সাম্প্রদয়িকতার বিষাক্ততা কিছুই নয়।
গির্জা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন যারা, তাদের মধ্যে ইজাজ ফারুক একজন। একটি সংবাদ মাধ্যমেকে তিনি বলেছেন, ‘প্রতিদিন মসজিদে নামাজ আদায় শেষে গির্জার কাজ দেখতে যান।’ তিনি আশাবাদী, এই গির্জা নির্মাণের পর খ্রিষ্টান–মুসলিমরা একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে এবং প্রার্থনা করতে পারবেন।
২০০৯ সালে গোজরায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় গির্জা ও খ্রিষ্টানদের ঘরবাড়ি। ওই সাম্প্রদায়িক হামলায় নিহত হয় ১০ জন।
ইজাজ ফারুক ওই সংবাদ মাধ্যমকে আরো জানান, গোজরা দাঙ্গার পর তারা সবাইকে আরো বেশি কাছাকাছি আনার চেষ্টা করছেন। আর গির্জা নির্মাণের মাধ্যমে তারা দেখাতে চান, খ্রিষ্টান-মুসলিম একটা সম্প্রদায়ের মতো, যেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে পারে।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ফারইয়াল মসিহ বলেন, ‘ধর্মের ওপরেও আছে বন্ধুত্ব। এই গ্রামের খ্রিষ্টান-মুসলিম প্রতিবেশী হিসেবে বাস করেন। তাদের আলাদা বাড়ি নেই।’
তিনি বলেন, ‘একে অপরের বিয়ে উৎসবে যোগ দিচ্ছি। সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছি। গোজরায় যা ঘটেছিল তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় আমি সেই প্রার্থনাই করি।’-রাইজিংবিডি
১৪জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এআর/এমএম