বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬, ০৭:৪৩:১১

এবার চুড়ান্ত, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে হিলারি

এবার চুড়ান্ত, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে হিলারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিতেই গিয়েছিলেন গত সপ্তাহে। আমেরিকার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন হিলারি ক্লিন্টন। তবু একটা নিয়মরক্ষার লড়াই ছিল, কারণ শেষ দেখে ছাড়ার পণ করেছিলেন হিলারির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী, ভারমন্টের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসি-‌র শেষ প্রাইমারি জিতে হিলারির আর কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীই রইল না। সেনেটর স্যান্ডার্সকে হেলায় হারিয়ে নভেম্বরে আমেরিকার সাধারণ নির্বাচনের আগে ডেমোক্র‌্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের নামে সিলমোহর লাগিয়ে নিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব। সদ্য হিলারিকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই যা বাকি। ফেব্রুয়ারিতে আয়েওয়া থেকে শুরু হয়েছিল প্রাইমারি অভিযান। শেষ হল গতকাল ওয়াশিংটন ডি সি-‌তে।

গত সাড়ে ৩ মাসের টানটান লড়াইয়ে অনেকবারই হিলারিকে হারিয়ে বাজিমাত করেছেন স্যান্ডার্স। তবে ডেলিগেটের সমর্থনের নিরিখে আগাগোড়া এগিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি। হিলারি বনাম স্যান্ডার্সের টানা লড়াই শেষে দু’‌জনের যথাক্রমে ২,২১৯ এবং ১,৮৩২ ডেলিগেটের সমর্থন জুটেছে। এছাড়া ৫৮১ জন সুপার ডেলিগেটের সমর্থনও পেয়েছেন হিলারি। শেষ প্রাইমারি জিতে জুলাইয়ে ফিলাডেলফিয়াতে ‘‌ডেমোক্র‌্যাট কনভেনশন’‌-‌এর আগে চাঙ্গা হিলারি সব সমর্থকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের প্রতিযোগিতায় ইতি টানার কথা ঘোষণা করে ‘‌ডেমোক্র‌্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি’‌-‌র চেয়ারপার্সন ডেবি ওয়াজারম্যান স্কাল্টজ জানিয়েছেন, ‘‌হিলারি ক্লিন্টন এবং বার্নি স্যান্ডার্স— দু’‌জনকেই ধন্যবাদ!‌ বুদ্ধিদীপ্ত এবং যুক্তিসম্মত প্রচারের মাধ্যমে ওরা আমেরিকার ভোটদাতাদের ভরসা জুগিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর খোঁজ শেষ। এখন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।’‌

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই আগেই শুরু করেছিলেন হিলারি। ডেমোক্র‌্যাটদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ঝাঁঝ বাড়ালেন আরও। অরল্যান্ডোয় সন্দেহভাজন আইসিস বন্দুকবাজের হামলার প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের ওবামার বিরুদ্ধে বিষোদ্গারকে একহাত নিলেন। এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ওবামা যা করছেন, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য!‌ ‘‌চরমপন্থী মুসলিম’‌ শব্দ দু’‌টি উচ্চারণ করতেও ভয় পাচ্ছেন!‌ ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘‌লজ্জাজনক’‌ আখ্যা দিয়ে হিলারি বলেছেন, শুধু ওবামাকেই নয়। হামলায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, যারা আহত হয়েছেন, তাদেরও অপমান করলেন ট্রাম্প। দায়িত্বশীল রিপাবলিকান নেতৃত্বের ওদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মন্তব্যের নিন্দা করা উচিত!‌’

ওবামার নামে কুৎসা করা ট্রাম্পের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এমনও জানিয়েছেন হিলারি। বলেছেন, ট্রাম্পই রটিয়েছিলেন যে ওবামা নাকি আমেরিকায় জন্মাননি। ওকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার হাওয়াই আমেরিকারই অংশ!‌ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসলামকে সরাসরি জড়িয়ে দেওয়ার যে রাজনীতি করছেন ট্রাম্প তাতে বিদ্বেষ বাড়বে আরও, সতর্ক করে দিয়েছেন হিলারি। অরল্যান্ডো–কাণ্ডের পর এমনিতেই ট্রাম্পের মুসলিম–বিদ্বেষ আরও একবার জোরালোভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। তাকে ধিক্কার জানিয়েছেন ওবামা নিজেই।

ওবামা বলেছেন, ‘‌মুসলিমদের বিরুদ্ধে যেসব আলটপকা মন্তব্য করছেন ট্রাম্প, তা আদতে মার্কিন মূল্যবোধের পক্ষে অবমাননাকর!‌ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার লড়াইকে পিছিয়ে দিতে পারে এই ধরনের মন্তব্য।’‌ ওবামা জানিয়েছেন, ‘‌এতদিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের নীতির নিন্দা করতেন বিরোধী পক্ষ। এখন ওদের নেতা বলছেন, ‘‌চরমপন্থী ইসলাম’‌ শব্দ দু’‌টি ব্যবহার করতে। ওর মত, এছাড়া নাকি আইসিস-কে জব্দ করা যাবে না। তবে সন্ত্রাসকে অন্য নামে ডাকলে তা পাল্টে যায় না!‌ শুধু রাজনৈতিক বিভ্রান্তি তৈরি হয়।’‌

সব শুনে ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‌ওবামা তো দেখছি, অরল্যান্ডোর সেই বন্দুকবাজের থেকে আমার ওপর বেশি চটেছেন!‌’‌ ক্যালিফোর্নিয়ার এক জমায়েতে তার টিপ্পনী, ‘‌এই যে ওর এত রাগ, সেটা যদি ওই বন্দুকবাজ সম্প্রদায়ের ওপর দেখাতেন, তা হলে অরল্যান্ডোর মতো ঘটনাই ঘটতো না!‌’‌

১৬ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে