আন্তর্জাতিক ডেস্ক :আজব দেশে এই সমাজে কষ্ট করে লেখাপড়া শিক্ষে মানুষ গড়ার কারিগরে পদে নিয়োগ হবে তার বেতন হবে কি না একজন ড্রাইভার থেকেও কম। আর একজন ড্রাইভার শিক্ষা হয় তো টেনেটুনে ক্লাস টেন পাস করে। সম্প্রতি চারজন শিক্ষক ও একজন ড্রাইভার নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়েছে একটি স্কুল। সেখানে ড্রাইভারের বেতন দেয়া হবে ৭ হাজার টাকা। তবে আশ্চর্যের বিষয়, শিক্ষকের বেতন নাকি মাত্র ৫ হাজার টাকা। কম তো কম, একজন গাড়ির চালকের থেকেও নাকি কম মাইনে পাবেন শিক্ষক।
তাও আবার শিক্ষক পদে আবেদন করতে গেলে বিএড ডিগ্রি লাগবে। ইংলিশ, অংক, সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। আর গাড়িরচালক হতে গেলে টেনেটুনে ক্লাস টেন পাস করলেই চলবে। তবে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা থাকলে বয়সটা আর কোনো বাধাই থাকবে না।
ভারতের গুজরাটের একটি বিদ্যালয়ের এ বিজ্ঞাপন প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন মহলে শোরগোল শুরু হয়ে গেছে। বাবাসাহেব আম্বেদকর ওপেন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক যোগেন্দ্র পারেখ এ বিষয়ে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে চিঠিও লিখেছেন। চিঠি লিখেছেন রেজিস্ট্রারকেও।
যোগেন্দ্র সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গান্ধিজি বিশ্বকে সত্যাগ্রহ শিখিয়েছেন। এখন সেটা গান্ধিগিরি নামে পরিচিত। এবার নতুন শিক্ষকদের সময় এসেছে গান্ধিগিরি দেখানোর। তাদের উচিত, চালকের পোস্টে আবেদন করা। এর ফলে ওই বিদ্যালয় শিক্ষকতা করানোর জন্য কাউকে পাবে না।’
সেইসঙ্গে তিনি মনে করেন, ‘এই বিজ্ঞাপন শিক্ষাব্যবস্থাকে খাটো করেছে। গান্ধিজি বৈষম্যের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু গুজরাত বিদ্যাপীঠ এসব বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না। ড্রাইভারদের যে মাইনে দেয়া হচ্ছে সেটাও তো অনেকটাই কম। শিক্ষকদেরটা তো ছেড়েই দিন। বিজ্ঞাপন দেখে মনে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠান শিক্ষকতাকে মোটেও গুরুত্ব দেয় না।’
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বহু ছাত্রছাত্রী শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠে। তারা যদি এ বিজ্ঞাপন দেখে তাহলে তাদের মনে কী প্রভাব পড়বে সেটা ভেবে দেখা উচিত। আমার মনে হয়, এখনই ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, আজই গুজরাত কুমার বিনয় মন্দির স্কলের ইন্টারভিউটি হবে। ১০ জুন বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই নিয়োগ হবে চারজন শিক্ষক ও একজন গাড়িচালক।
এ বিষয়ে অবশ্য উলটো সুরই শুনিয়েছেন গুজরাটের ওই স্কুলের রেজিস্ট্রার রাজেন্দ্র খিমানি। তিনি বলেছেন, ‘একজন ড্রাইভার ১০ ঘণ্টা কাজ করেন, সেখানে শিক্ষক তো কাজ করেন বেশি হলে ৬ ঘণ্টা। তাছাড়া শিক্ষকরা প্রায়ই চাকরি ছেড়ে চলে যান। আমরা পরবর্তীতে বেতন বাড়াই, যারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’-বাংলামেইল
১৭জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এআর/এমএম