আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাটে ২০০২ সালে গুলবার্গ সোসাইটিতে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার ঘটনায় দোষী ১১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। এর আগে অভিযুক্ত ৬৬ জনের মধ্যে ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। এর মধ্যে ১২ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড আর একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে ৩৬ জনকে।
শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়। মুসলিম নিধনের ওই দাঙ্গা সংঘটিত হওয়ার প্রায় ১৪ বছর পর এই রায় প্রদান করা হলো।
২০০২ সালে গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরের দিন গুলবার্গ সোসাইটিতে দাঙ্গা বাধে। এতে ৬৯ জন নিরীহ মুসলিমকে রশিতে ঝুলিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে উগ্রবাদী হিন্দুরা।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেসের সাবেক সংসদ সদস্য এহসান জাফরিও। সব মিলিয়ে ওই দঙ্গার ঘটনায় প্রায় ১ হাজার মানুষ নিহত হন, যাদের অধিকাংশই মুসলিম।
এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দাবি জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ন্যায়বিচার এবং শান্তির জন্য নাগরিক সমাজ নামে দু’টি সংগঠন।
পরে সুপ্রিম কোর্ট ২০০৮ সালের মার্চে সাবেক কেন্দ্রীয় তদন্ত অধিদফতরের (সিবিআই) প্রধান আরকে রাঘবনকে প্রধান করে গুজরাট সরকারকে বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেয়।
গঠিত তদন্ত দল এই মামলা চালিয়ে যায় আহমেদাবাদে গঠিত বিশেষ আদালতে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওই মামলার বিচার কাজ শেষ হয়। সে বছরের ৩১ মে আদালতকে রায় ঘোষণার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
সাত বছর ধরে বিচার প্রক্রিয়ার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শুক্রবার এই রায় দেওয়া হলো। তবে বিচারপ্রার্থী মুসলিমরা এই রায়ে অসোন্তুষ প্রকাশ করেছেন। নিহত সংসদ সদস্য এহসান জাফরির স্ত্রী বলেন, ‘এটি ন্যায় বিচার নয়। আমরা এই রায়ে হতাশ’।
উল্লেখ্য, দাঙ্গার সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেসময় দাঙ্গা বন্ধ করার জন্য মোদি কোনো তৎপরতা চালাননি বরং সংশ্লিষ্ঠ অনেকেই মনে করেন দাঙ্গার পেছনে যারা ইন্ধনদাতা তাদের মধ্যে মোদিও একজন। -বিবিসি
১৭ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম