আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বোরকা পরার কারণে শিক্ষিকাকে চাকরিচ্যুত করতে বাধ্য করানোর প্রতিবাদে কাশ্মিরের দিল্লি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদের মুখে অবশেষে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলো স্কুল কর্তৃপক্ষ। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের দিল্লি পাবলিক স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ২৯ বছর বয়সী ওই শিক্ষিকা দিল্লি পাবলিক স্কুলের জীববিজ্ঞান পড়ান। গত বুধবার তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
ঘটনার ব্যাপারে ওই শিক্ষিকা বলেন, আমি যখন স্কুলটিতে যোগ দিই, তখন আমাকে বোরকা পরার ব্যাপারে কোনো শর্ত দেয়া হয়নি।
শিক্ষিকা বলেন, গত দু'মাস ধরে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন এর অধ্যক্ষ, যিনি একজন নারী। সম্প্রতি তিনি স্কুলে ফিরে আমাকে বোরকা না পরার ব্যাপারে একটি বার্তা পাঠান।
অধ্যক্ষ নির্দিষ্ট করে আমাকে বলেন যে, এ স্কুলের চৌহদ্দিতে কোনো ইসলামী পোশাক বরদাশত করা হবে না।
তিনি বলেন, এরপর স্কুলের চেয়ারম্যানও আমাকে বলেন, স্কুলের ভেতরে বোরকা পরা উচিত নয়। তার এ কথা আমি প্রত্যাখ্যান করি। এরপর তারা আমাকে স্কুলের চাকরি ছাড়তে বলেন।
ওই শিক্ষিকাকে পদত্যাগ করানোর ঘটনা জানাজানি হলে গত শুক্রবার ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তারা কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চেয়ে ওই শিক্ষিকাকে চাকরিতে ফেরানোর দাবিতে স্লোগান দেয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর ঘটনা জানাজানি হলে শনিবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় জম্মু-কাশ্মির রাজ্যসভা।
সেখানে পিডিপি-বিজেপি জোট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নাঈম আখতার বলেন, জম্মু-কাশ্মির ফ্রান্স নয় যে, এখানে বোরকা পরা যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা বহুধর্ম-বহু সংস্কৃতির সমাজে বসবাস করে আসছি। আমাদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ বন্ধন রয়েছে। এ ধরনের কোনো ঘটনা বরদাশত করা হবে না।
জোট সরকারের শরিক বিজেপি নেতা রাভিন্দার রায়না বলেছেন, কারো ধর্মীয় অনুভূতিতেই আঘাত করা উচিত নয়। আমরা ফ্রান্সের মতো বোরকা নিষিদ্ধের আইন করবো না।
এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রোববার স্কুল কর্তৃপক্ষ অনিচ্ছাকৃতভাবে মানুষের আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে জানিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সূত্র : এনডিটিভি, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস
২০ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম