মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬, ১২:৩২:২৩

সেহরি খাওয়ার জন্য পুরো গ্রামের মুসলিমদের শেষ রাতে জাগিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল একটি হিন্দু পরিবার

সেহরি খাওয়ার জন্য পুরো গ্রামের মুসলিমদের শেষ রাতে জাগিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল একটি হিন্দু পরিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাত তখন তিনটা। উত্তর প্রদেশের বেনারসী শাড়ির জন্য বিখ্যাত মুবারকপুর গ্রামের সব বাসিন্দা তখন গভীর ঘুমে। কিন্তু একজন লোক তখনো জেগে আছেন, সঙ্গে আছে তার ১২ বছর বয়সী পুত্র সন্তান।

রাত ১টায় তারা জেগে ওঠেন এবং প্রায় দুঘণ্টা ধরে গ্রামের মুসলিম পরিবারগুলোকে জাগিয়ে তোলেন, যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা পবিত্র রমজানের সেহরি খেয়ে নিতে পারেন।

গুলাব যাদব (৪৫) এবং তার পুত্র অভিষেক প্রতিটি মুসলিম পরিবারের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়েন এবং তারা না ওঠা পর্যন্ত স্থানত্যাগ করেন না।

যাদবের বাবা চিরকিত যাদব ১৯৭৫ সালে অসাধারণ এই ট্র্যাডিশন চালু করেছিলেন। গুলাব বলেন, তখনো তিনি এতো ছোট ছিলেন যে এর কারণ বুঝতে পারেননি।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় এতে প্রশান্তি আসে। এটাই শেষ কথা। আমার বাবার পর আমার বড় ভাই কয়েক বছর এ কাজ করেন। এরপর আমি এ কাজ শুরু করি এবং এখন প্রতিবছর রমজান এলেই গ্রামে ফিরে আসি।

গুলাব যাদব একজন দিনমজুর এবং বেশিরভাগ সময় দিল্লিতে কাজ করেন। তবে রমজান এলেই উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় আজমগড় জেলার গ্রামটিতে ফিরে আসেন। গুলাবের প্রতিবেশী শফিক জানান, যখন এই ট্র্যাডিশন চালু হয় তখন তার বয়স চার বছর।

শফিক বলেন, দেখতেই পাচ্ছেন, এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। তিনি পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান। এতে দেড় ঘণ্টা লেগে যায়। তিনি ঘুরে ঘুরে দেখেন যে আজানের আগেই কারো সেহরি খাওয়া যেন বাদ না পড়ে। এর চেয়ে পবিত্র কাজ আর কী হতে পারে?

ভারতের কিছু মৌলবাদী হিন্দুর মুসলিম বিদ্বেষ, এমনকি শুধু ধর্মের কারণে মুসলিমদের হত্যার মত ঘটনার বিপরীতে গুলাব যাদব এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সূত্র: এনডিটিভি
২১ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে