আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গরমের ফল তরমুজ৷ মূলত গরম দেশেই কদর সেটির৷ মেরুদেশে তার দেখা মেলে না৷ কৃত্রিমভাবে তৈরি রঙিন বরফের গোলাও জনপ্রিয় অনেক দেশে৷ কিন্তু তা বলে সত্যি বরফও রঙ পাল্টে গোলাপি হতে পারে৷ এতদিন পর্যন্ত দেখা না গেলেও বরফ ঢাকা অনেক প্রান্তরে দেখা মিলেছে গোলাপি বরফের৷ আর তা নিয়ে বেশ চিন্তিতই বিজ্ঞানীরা৷
গোলাপি এই বরফের নাম দেয়া হয়েছে ওয়াটারমেলন স্নো৷ তা কী করে বরফ এমন গোলাপি হয়ে উঠল? বিজ্ঞানীরা বলছেন আসলে বরফ রঙ পাল্টায়নি৷ বরফের উপর জন্ম নেয়া লালাভ রঙের এক অ্যালগির কারণেই এই রঙ বদল৷ বিশেষ ধরনের এই শৈবাল হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রাতেও জন্ম নিতে পারে৷ সূর্যরশ্মি শোষণের পরই স্বাভাবিক সবুজ এই শৈবাল থেকেই এক ধরনের প্রাকৃতিক ‘সানস্ক্রিন’-এর তৈরি হয়, যা গোলাপি আভায় আছন্ন করে রেখেছে৷
কেন এই শৈবালের কারণে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা? বিজ্ঞানের খুব সহজ সূত্র বলছে, এর ফলে বরফ গলার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে অনেক গুণ৷ ধরা যাক, গ্রীষ্মে সাদা জামার পরিবর্তে কেউ কালো জামা পরেছেন, তাতে তার গরম বেশি লাগে, কেননা কালো জামা তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি৷ ঠিক একইভাবে এখানেও, গোলাপি শৈবালের তাপ শোষণের ফলে বরফ গলার সম্ভাবনা বাড়ছে৷ বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বরফ গলা এমনিতেই বিজ্ঞানীদের মাথাব্যথার কারণ, তা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এই শৈবাল৷ যত বরফ গলবে তত বংশবিস্তার করবে এই শৈবাল৷ ফলে গুণিতক হারে বরফ গলতেই থাকবে৷
মেরুপ্রদেশ থেকে অন্যান্য বরফ ঢাকা অঞ্চলে এখন অল্প পরিমাণেই দেখা গিয়েছে এই ‘ওয়াটারমেলন স্নো’৷ তবে ছোট্ট কারণ যে বড় বিপর্যয় হয়ে দেখা দিতে পারে তা আঁচ করেই চিন্তিত বিজ্ঞানীরা৷ ইতিমধ্যেই এ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন জার্মান রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী স্টিফেন লুতজ৷ শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যোসেফ কুকও নমুনা সংগ্রহ করে পুরো বিষয় খতিয়ে দেখছেন৷ গোলাপি বরফ আখেরে যে হিমবাহগুলোকেও দ্রুত গলিয়ে দিতে পারে পারে সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা৷ আর তাই এর আগ্রাসন রুখতে কী করা যায় তারই সন্ধানে আছেন এই বিজ্ঞানীরা।
২৬ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই