আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটেনে ২৩শে জুনের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় হওয়ার পর ধরেই নেয়া হচ্ছিল লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসনই হচ্ছেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
ভোটের পরদিন প্রধানমন্ত্রী ক্যমেরন পদত্যাগের পর সেই ধারণা আরো শক্ত হয়। কারণ ইইউ ছাড়ার পক্ষের প্রচারণায় বরিস জনসনই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গণভোটে অপ্রত্যাশিত ফলাফলের কৃতিত্ব তাকেই দিচ্ছিলেন অধিকাংশ বিশ্লেষক।
কিন্তু আজ ৩০ জুন বৃহস্পতিবার প্রার্থী হওয়ার সময়সীমা শেষের কয়েক মূহুর্ত আগে দুদুবার নির্বাচিত লন্ডনের সাবেক মেয়র অপ্রত্যাশিতভাবে লড়াইয়ে না নামার সিদ্ধান্ত জানান।
তার এই ঘোষণাকে নাটকীয় বললে কম বলা হবে, ব্রিটেনের বিশ্লেষকরা একে পলিটিক্যাল বম্বশেল, অর্থাৎ একটা রাজনৈতিক বোমা ফাটানোর সঙ্গে তুলনা করছেন।
কেন তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা এখনো পরিষ্কার করেননি। তার এই সিদ্ধান্ত অনেককেই হতবাক করেছে।
তবে এই নাটকীয়তার আগে আজ আরো নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে, ব্রিটেনের রাজনীতিতে। ইইউ ছাড়ার পক্ষে বরিস জনসনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন যিনি, কনজারভেটিভ পার্টির আরেক নেতা, মাইকেল গভ, তিনি হঠাৎ আজ দলের নেতা হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন।
অথচ আশা করা হচ্ছিল, মাইকেল গভ বরিস জনসনকেই সমর্থন দেবেন এবং তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বরিস জনসন হয়তো এমন আশংকা করছেন যে জেতার জন্য যতজন এমপির সমর্থন দরকার হবে, তার হয়তো সেই সমর্থন নেই।
বরিস জনসনের এই ঘোষণার পর, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন - সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন পর্যন্ত যারা কনজারভেটিভ পার্টির নেতার হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে এখন সবচেয়ে সুবিধেজনক অবস্থানে চলে এসেছেন থেরেসা মে, যিনি এখন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রশ্নে গণভোটে তিনি সরাসরি কোন পক্ষ নেননি, ফলে দলের উভয় অংশের দিক থেকে তিনি সমর্থন পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ধরে নেয়া হচ্ছে থেরেসা মে'র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন ব্রেক্সিটপন্থী আইনমন্ত্রী মাইকেল গভ।
বিরোধী লেবার পার্টিতেও নেতৃত্ব নিয়ে বড় ধরণের বিরোধ তৈরি হয়েছে।
লেবার পার্টি ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে, কিন্তু গণভোটে হেরে যাওয়ার পর অনেকেই দলের নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বের সমালোচনা করে রীতিমত বিদ্রোহ করেছেন। তার ছায়া মন্ত্রীসভার বেশিরভাগ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। দলের পার্লামেন্টারি পার্টির বেশিরভাগ সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ব্রিটেনের বড় দুটি দলেই এখন কার্যত নেতৃত্বশূন্যতা দেখা যাচ্ছে।-বিবিসি
৩০ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই