আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গের সঙ্গে বৈঠক করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফেসবুকের হেডকোয়ার্টারে তাদের দু’জনের মধ্যে ৪৫ মিনিট কথাবার্তা হয়। মোদি জুকেরবার্গকে ভারতের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তার সরকার কতটা আন্তরিকতা ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে, সে–ব্যাপারে বিস্তারিত বিবারণ দেন।
কথা প্রসঙ্গে ইউপি এ সরকারের নীতিপঙ্গুত্বের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা নিয়েও দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়। মোদি বলেন, দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে সামান্য সময়ে যোগাযোগ গড়ে তোলার ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ার কোনও বিকল্প নেই। কোনও নির্বাচিত সরকারও যদি ভুল করে, তবে সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের প্রতিবাদ জানাতে পারেন। এর ফলে সরকারের পক্ষেও দ্রুত নিজের ভুল শুধরে নেওয়া সম্ভব হয়।
মোদি ফেসবুক দপ্তরে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই ‘ডিজিটাল ভারত’ গড়তে মোদির ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের প্রোফাইলে ছবি পাল্টে ফেলেন মার্ক জুকেরবার্গ। সেখানে জুড়ে দেন ভারতের ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা। এবং লেখেন, গ্রামীণ জনসাধারণকে ইন্টারনেটে যুক্ত করা এবং বিভিন্ন পরিষেবা অনলাইনে দেওয়ার ভারত সরকারের কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েই তিিন প্রোফাইল বদলেছেন। এরপর মোদিও তার প্রোফাইল বদলে দেন। মোদি এবং জুকেরবার্গ দু’জনে বৈঠক সেরে যখন টাউন হলে পৌঁছন, তখন সেখানে বলিউডের জনপ্রিয় গান বাজছিল।
তারা পৌঁছতেই সমবেত জনতা ‘মোদি মোদি’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। জুকেরবার্গের সঙ্গে বৈঠকের সময় মোদির ৯৫ বছর বয়সী মা হীরাবেন মোদি কীভাবে নরেন্দ্র মোদিকে বড় হতে সাহায্য করেছেন, সে–কথা জুকেরবার্গ জানতে চাইতেই মোদি আবেগপ্রবণ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জুকেরবার্গ মোদিকে বলেন, কিছু কিছু জিনিস আছে, যার আবেদন সকলের কাছেই সমান। যেমন পরিবার। আমার বাবা–মা দু’জনেই এখানে হাজির। আমি বুঝি আপনার মা আপনার জীবনে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের চোখের জল সামলাতে সামলাতে মোদি শৈশবে তাদের দারিদ্রপীড়িত পরিবারের সন্তানদের দেখভালের জন্য তার মায়ের পরিশ্রমের কথা বলতে থাকেন। কিছুক্ষণ থেমে তিনি বলেন, এটা শুধু নরেন্দ্র মোদির জীবনেই নয়, ভারতের অধিকাংশ মা–ই তাদের সন্তানের জন্য সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেন। মোদি জুকেরবার্গের মা–বাবাকে অভিনন্দন জানান।
মোদি বলেন, আপনার সন্তান পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে। উপস্থিত জনতাকে উঠে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন মোদি। জুকেরবার্গের সঙ্গে বৈঠকে মোদি ভারতের অর্থনীতির বর্তমান আয়তন আড়াই গুণ বাড়িয়ে ২০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ করেন। টাউন হলের সভায় উত্তর দেওয়ার জন্য মোদির কাছে প্রায় ৪০ হাজার প্রশ্ন এসেছিল। মোদি মাত্র ৬টির উত্তর দেন। তার মধ্যে ২টি জুকেরবার্গের।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি