বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬, ০১:৩৫:২২

তুরস্কের সাবেক সেনাপ্রধানের রুমে যেভাবে টেপ রেখে আসতেন তুরকান

তুরস্কের সাবেক সেনাপ্রধানের রুমে যেভাবে টেপ রেখে আসতেন তুরকান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ১৫ জুলােই তুর্কি সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনের চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হতে শুরু করেছে। তুরস্কের সেনাপ্রধান হুলুসি আকার-এর সহকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকান স্বীকার করেছেন তিনি গুলেনপন্থি টেরর অর্গানাইজেশনের (ফেতু) সদস্য। গত ১৫ই জুলাই যে ব্যর্থ অভ্যুত্থান ঘটে তাতে এই সংগঠন জড়িত বলে তিনি স্বীকার করেছেন।

তুরস্কের একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকানের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। তাতে তিনি বলেছেন, অভ্যুত্থান চেষ্টায় তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন, অভ্যুত্থান চেষ্টায় অংশ নেয়া মেজর জেনারেল মেহমেদ দিসলিও ফেতু’র একজন সদস্য।

জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, ১৫ই জুলাই আমি মেজর জেনারেল মেহমেদ দিসলির রুমে যাই। তিনিও গুলেনপন্থি। তিনি আমাদেরকে বলেন যে, চিফ অব জেনারেল স্টাফ আকারের কাছে তিনি জানতে চাইবেন যে, তিনি কি কেনান ইভরেন হতে চান কিনা।

উল্লেখ্য, কেনান ইভরেন তুরস্কের সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তা। তিনি ১৯৮০ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তারপর ১৯৮০ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দেশের সপ্তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকান জবানবন্দিতে বলেন, মেজর জেনারেল দিসলি আশা করেছিলেন জেনারেল আকার তার প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। কিন্তু জেনারেল আকার ও অন্য কমান্ডাররা সে প্রস্তাব গ্রহণ করেন নি। এ সময় তুরকান ও তার সঙ্গীদের হুলুসি আকার বলতে থাকেন যে, তারা একটি ভুল করছে। তারপরই তাকে নিয়ে যায় স্পেশাল ফোর্স।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকান বলেন, তখন সেখানে ছিলাম আমি। এ সময় জেনারেল দিসলি আমাকে বলেন আমি যেন জেনারেল আকারের স্ত্রীকে ফোন করি। তাকে (আকারের স্ত্রীকে) ফোন করার পরই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকান বলেন, তিনি যখন টেলিভিশনের খবরে জানতে পারেন তুরস্কের গ্রান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলিতে বোমা হামলা করা হয়েছে, সেনারা অনেক বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে তখন এ অভ্যুত্থানে অংশ নেয়ার জন্য তিনি অনুশোচনা বোধ করেন। তিনি বলেন, একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান তিনি। বয়ঃসন্ধিক্ষণে তিনি গুলেন মুভমেন্টের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল লেভেন্ট তুরকান আরও বলেছেন, ৫ বছর বয়স থেকেই আমার বড় স্বপ্ন ছিল সেনা কর্মকর্তা হওয়া। ১৮৮৯ সালে তাই আমি মিলিটারি স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিই। আমি নিশ্চিত ছিলাম এ পরীক্ষায় পাস করবো সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে। কিন্তু পরীক্ষার আগের রাতে বুরসা প্রদেশে একটি বাড়িতে নিয়ে তাকে এসব প্রশ্নের উত্তর বলে দেয় গুলেনপন্থিরা।
 
তিনি আরও বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান নেসদেট ওজেলের রুমে তিনি প্রতিদিনি একটি ওয়্যারটেপ রেখে আসতেন গুলেনপন্থিদের নির্দেশে। তুরস্কে টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষে গুলেনপন্থি যারা কাজ করেন তাদের কাছে সপ্তাহে একবার ওই ওয়্যারটেপ পৌঁছে দিতেন তিনি।
২১ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে