শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৩৭:৩৩

তুরস্কে ১২০০ সেনাকে মুক্তি

তুরস্কে ১২০০ সেনাকে মুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর তুরস্কে আটক ১ হাজার ২০০ সেনাসদস্যকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।  অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম প্রধান সন্দেহভাজন আটকদের মুক্তি দেয়া হলো বলে শনিবার আঙ্কারার এক প্রসিকিউটর জানিয়েছেন।

আঙ্কারার প্রধান প্রসিকিউটর হারুন কোদালাক বলেন, গোপনীয়তার সঙ্গে আটক এসব সেনাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।  অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত নন এমন কর্মকর্তাদের দ্রুত চিহ্নিত করা হচ্ছে।

তুরস্ক সরকার গত শুক্রবারের সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টা সম্পর্কে বলছে, সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত দেশটির নির্বাসিত মুসলিম নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন দায়ী এবং সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিচার বিভাগ ব্যবহার করে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।  তবে সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন গুলেন।

দেশটির অন্তত ৬০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক অথবা বরখাস্ত করা হয়েছে।  এ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা হয়েছে।  

দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চাকরিচ্যুতদের মধ্যে বেসরকারি স্কুলশিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশ অনুষদ প্রধানরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।  

২৪টি রেডিও এবং টিভি চ্যানেলের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে।  অভ্যুত্থান চেষ্টায় অন্তত ৩০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এদের মধ্যে ১৬১ জন গণতন্ত্রপন্থী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক।  বাকি নিহতরা অভ্যুত্থানকারী।  আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৪৪০ জন।

দেশটির বিরোধী দলগুলো সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে।  তুরস্কে আইনের শাসন বজায় রাখতে তাদের সংকল্পের কথা জানিয়েছেন।

এদিকে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও তা ৪৫ দিনের বেশি স্থায়ী হবে না বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী নুমান কুরতুলমুস।

দেশটির বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি উপপ্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আমরা যতদ্রুত সম্ভব জরুরি অবস্থার অবসান ঘটাতে চাই।

নুমান কুরতুলমুস বলেন, অবস্থা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে বড়জোর এক কী দেড় মাস লাগবে।
এরপর এর মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।

এর আগে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

ভাষণে এরদোগান বলেন, তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মোকাবেলার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি এ সময় তিনি জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষণাও দেন।  

কিন্তু তিন মাসের জরুরি অবস্থা প্রেসিডেন্টকে সংসদকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এবং সাধারণ মানুষের অধিকার খর্ব করার ক্ষমতা দিচ্ছে।

টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট আবারো যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ধর্মীয় নেতা ফতুল্লা গুলেনকেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে দায়ী করেছেন।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গুলেনের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ থাকলে তা প্রকাশ বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন।
২৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে