রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬, ০৮:২৩:১৩

কাবুলে আত্মঘাতী হামলায় নিহতে সংখ্যা ৮০

কাবুলে আত্মঘাতী হামলায় নিহতে সংখ্যা ৮০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে হাজারা সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ মিছিলে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হামলা। প্রাণ হারালেন ৮০ জন, জখম অন্তত ২০৭। হামলার পর পরই আই এস জঙ্গিদের নিজস্ব সংবাদসংস্থা ‘‌আমাক’‌ জানিয়েছে, শিয়া হাজারাদের ওপর এই হামলা তাদেরই কাজ।

কাবুল প্রশাসন জানাচ্ছে, সুন্নিপ্রধান আফগানিস্তানে সাম্প্রদায়িক বিরোধ ছড়াতে এমন হামলা যে হতে পারে, এ খবর পুলিশের কাছে আগেই ছিল। পরিকল্পিত একটি বিদ্যুতের লাইন হাজারা অঞ্চল থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ওই বিক্ষোভ মিছিলের উদ্যোগ নিয়েছিলেন যে হাজারা নেতারা, তাদের সে খবর দেওয়াও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও হামলা ঠেকানো গেল না। যদিও দুই আত্মঘাতী জঙ্গির একজনকে পুলিশ গুলি করে মারে। কিন্তু দ্বিতীয়জন ভিড়ের মধ্যে ঢুকে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।

চার ঘণ্টার মিছিলের শেষে সবাই তখন ডেমাজাং চত্বরে গিয়ে জড়ো হয়েছেন। ওখানে অবস্থান–সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। আফগান প্রেসিডেন্ট আফগান গনির মুখপাত্র হারুন চাখানসুরি জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের নেতাদের একজনের সঙ্গে এদিন দেখা করার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট গনির। তার পর একটি লাইভ টিভি অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন তিনি।

তার দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে এই বিস্ফোরণের নিন্দা করে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ জানানোর অধিকার আফগানিস্তানে সবার আছে। সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে সুরক্ষিত রাখতে যা করার, সরকার করবে। যদিও হাজারাদের বিক্ষোভ মিছিল যাতে শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায়, বা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে, সেজন্য রাজপথে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড গড়ে তোলা হয়েছিল। বিস্ফোরণের পর সেই পথ–অবরোধের কারণেই আহতদের হাসপাতাল নিয়ে যেতে ভীষণ অসুবিধা হয়।

এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে গেলে ডেমাজাং চত্বর এলাকা ঘিরে রাখেন বিক্ষোভকারীরা এবং পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেন। পুলিশের ওপর ইট–পাটকেলও ছোঁড়া হয়। হাজারাদের এদিনের বিক্ষোভের মূল ইস্যু ছিল তথাকথিত ‘‌টুটাপ’‌ বিদ্যুতের লাইনটি তাদের বসবাসের এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে।

এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের আর্থিক সহযোগিতায় পরিকল্পিত এই বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থার শরিক তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, আফদানিস্তান এবং পাকিস্তান। মূল পরিকল্পনায় প্রধান সরবরাহ লাইনটি হাজারা–প্রধান বামিয়ান প্রদেশ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পূর্বতন আফগান সরকারের আমলে সেটি বদলে দেওয়া হয়।

হাজরা সম্প্রদায়ের ধারণা, উন্নয়ন থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখতেই এই পথ বদল। এই নিয়ে মে মাসেও কাবুলে বিরাট এক বিক্ষোভ মিছিল করেন হাজারারা। তাদের সব বড় বড় নেতারা সেই মিছিলে হাজির ছিলেন। কিন্তু এদিন তারা প্রত্যেকেই ছিলেন রহস্যজনকভাবে অনুপস্থিত। আফগান সরকার যেখানে বলছে, নাশকতার খবর আগেই ছিল, হাজরা নেতাদের সেটা জানানো হয়েছিল, সেখানে নেতাদের এই অনুপস্থিতি সন্দেহ আরও বাড়াচ্ছে।

২৪ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে