আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন ১৭ বছরের এক প্রবাসী কাশ্মীরী তরুণী। চিঠিতে সে বলেছে, সবাই এ ভূখণ্ডটির দখল নিতে চায়। কিন্তু এই ভূস্বর্গের জনগণের সুখ-দুঃখ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই কারো। ভারতীয় সেনাদের গুলিতে নিহত স্বাধীনতাকামী কমান্ডর বুরহান উয়ানিকে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ওই তরুণী।
ফাতেমা শাহীন নামের ওই তরুণী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে বসবাস করছে। সেখান থেকে পাঠানো চিঠিতে সে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছে, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা যদি কাশ্মীরের গনগণের ভালো চাই, তাদের নিয়ে চিন্তা করি, তাহলে আমাদের ওই উপত্যকায় সব যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দেয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কেবল তাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিলেই চলবে না। আমাদের এমন সব উপায় খুঁজে বের করতে হবে যাতে তাদের আওয়াজ দূর দেশে বসেও শোনা যায়।’
ওই পত্রলেখিকা জানান, স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য গত ১০ জুলাই তিনি কাশ্মীর উপত্যকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে সে যে পরিস্থিতি দেখে এসেছে তা কখনো ভুলবার নয়। ওই দিনের ঘটনা তার মনে দাগ কেটে রেখেছে। যার কারণে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে চিঠি লিখেছে সে।
চিঠিতে ফাতিমা আরো জানায়, ‘জনাব প্রধানমন্ত্রী, আমি এখানে বসেই ফ্রান্সের নিস হামলা, তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের খবর পাই। এমনকি জানতে পারি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের খবরও। কিন্তু আমার জন্মভুমি কাশ্মীরের সংবাদ কোথায়? জনাব, এই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে আমি আমার শহরে কি হচ্ছে তা কখনোই জানতে পারছি না।’
ফাতিমার দাবি, সবাই কাশ্মীরের দখল নিতে চাইলেও এর জনগণের ভালো মন্দ নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও ভারত এই দু দেশই কাশ্মীরের ওপর নিজেদের অধিকার দাবি করে থাকে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাতিমা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আরো লিখেছে, ‘সবাই কাশ্মীর চায়, কিন্তু সেখানকার লোকজনকে নিয়ে কারো কোনো চিন্তা নেই। কারণ, আমরা যদি কাশ্মীরের জনগণের যত্ন নিতাম, তাদের মতামতের দাম দিতাম, তাহলে জানতে চাইতাম, বুরহান কি আসলেই একজন জঙ্গি, না দেশপ্রেমিক। আমরা বুঝতে চেষ্টা করতাম একজন শিক্ষার্থী কেন তার লোখাপড়া ও কেরিয়ার বিসর্জন দেয়, কেন সে কলম ফেলে হাতে বন্দুক তুলে নেয়।’
প্রসঙ্গত, গত মাসে বুরহানের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছিল কাশ্মীর। জনতার ব্যাপক বিক্ষোভকে সামল দিতে না পেরে গোটা রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় জারি করা হয়েছিল কারফিউ। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল পত্র-পত্রিকা ও ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ। -বাংলামেইল
০২ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম