বিনোদন ডেস্ক: লাক্স-চ্যানেল আই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বাঁধনঅনেক ‘প্রথম’ সঙ্গী করেই জীবন কাটাতে হয়। নিতে হয় অভিজ্ঞতা। তারকাদের জীবনেও এমন প্রথম অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁদের এমন প্রথম পাঁচটি অভিজ্ঞতা নিয়েই ‘প্রথম পাঁচ’।
প্রথম প্রেম
আমি কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মোটামুটি সুন্দরী ছিলাম। অনেক ছেলেই আমার প্রেমে পড়েছে। কিন্তু আমি একজনকেও পাত্তা দিইনি। ডেন্টাল কলেজে পড়ার সময়কার কথা। সবেমাত্র লাক্স সুপারস্টার প্রতিয়োগিতা থেকে বেরিয়েছি। ওই সময় আমি একজনের প্রেমে পড়ে গেলাম। আমার আবার একটু পড়ালেখা জানা, জ্ঞানী ধরনের মানুষ পছন্দ। তাঁর মধ্যে সব গুণই ছিল। তখন তিনি একটা চাকরি করতেন। কিন্তু পছন্দের কথা কীভাবে বলি, তা বুঝতে পারছিলাম না। একদিন মনের কথা বলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। ফোনে তাঁকে বললাম, আপনার সঙ্গে আমার জরুরি আলাপ আছে। উত্তরার কফি ওয়ার্ল্ডে চলে আসেন।’ তিনি আমাকে বললেন, ‘কেন, ফোনে বলা যাবে না?’ আমি বলি, ‘না। আসতে হবে।’
কফি ওয়ার্ল্ডে গিয়ে দেখি অনেক পরিচিত মানুষ। ওখানে না বসে বাইরে একটি নিরিবিলি জায়গায় বসলাম। তাঁকে বললাম, আপনাকে আমার খুব পছন্দ। এ কথা শুনেই তিনি আমাকে ধমক দিয়ে সোজা বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। বললেন, ‘যাও, বাসায় যাও, গিয়ে পড়ালেখা করো।’ আমি ধমক খেয়ে বাসায় ফিরে এলাম। ওই দিন থেকেই প্রেমে পড়ার ইচ্ছা ঘুচে গেল। তখন তাঁর বান্ধবী ছিল। কিছুদিন পর তাঁর বিয়ে হয়। এখন তাঁর দুইটা বাচ্চা। আমার একটা। এখনো মাঝেমধ্যে দুয়েকটি জায়গায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তাঁকে দেখলে আমার খুব লজ্জা লাগে। মনে মনে হাসি আর ভাবি, সেদিন কী বোকামিটাই না করেছিলাম।
প্রথম ক্যামেরার সামনে
আমার জীবনের অদ্ভুত ঘটনা এটি। ২০০৬ সালের কথা। লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রথম দিনই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল। প্রথম দিন গিয়ে দেখি, হাজার হাজার মেয়ে। সেখান থেকে অডিশন দিয়ে ইয়েসকার্ড পাই আমি। এরপর আমাকে পাশের একটি মঞ্চে যেতে বলা হয়। সেখানে গিয়ে ক্যামেরার সামনে আমার নিজের সম্পর্কে বলতে হবে। আমি তো তখন ক্যামেরা সম্পর্কে কিছুই বুঝি না। আমাকে মঞ্চে ডাকা হলো। যখন হেঁটে ক্যামেরার সামনে যাচ্ছিলাম, তখন মনে হলো আমার পায়ে কোনো সাড়া নেই। ক্যামেরার সামনে নিজের সম্পর্কে বললাম। আমি কীভাবে মঞ্চে গিয়েছি, কী বলেছি, নেমে আসার পর কিছুই মনে ছিল না।
প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার অভিজ্ঞতা
লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়েছি। একদিন আড়ং থেকে কিছু জিনিসপত্র কিনব, এ জন্য ঘুরে ঘুরে দেখছি। পাশে দুজন মেয়ে ফিসফিস করে বলছে, ওই যে দেখ, দেখ... লাক্সের বাঁধন। কথাগুলো আমার কানে আসার পর কিছুটা পুলকিত হলাম। কিছুক্ষণ পর ওরা কাছে এসে আমার অটোগ্রাফ চাইল। তার আগে কখনোই কাউকে অটোগ্রাফ দিইনি। একদিকে ভালোও লাগছিল আবার জড়তাও ছিল। লিখে দিলাম, ‘উইস ইউ এ ভেরি হ্যাপি লাইফ।’
প্রথম পারিশ্রমিক
লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছিলাম আমি। তিন লাখ টাকা পেয়েছিলাম। ওই সময়ে তিন লাখ টাকা আমার কাছে অনেক টাকা। ওই টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা জমা দিয়ে আমি আবার ডেন্টাল কলেজে নতুন করে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা শুরু করি।
লাক্স-চ্যানেল আই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার আগে বিশেষ কারণে আমি দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিইনি। পড়ালেখা সাময়িক বন্ধ ছিল। লাক্স থেকে বেরোনোর সময় আমার নিজের মধ্যে অনেক বিষয়েই ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। নিজেকে নতুন করে সাজানোর আগ্রহ বাড়ে। ওই প্রতিযোগিতা থেকেই নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ তৈরি হয়। পরবর্তীকালে ভালোভাবেই ডেন্টাল মেডিকেলের লেখাপড়া শেষ করতে পেরেছিলাম। বাকি টাকাটা আমার কাছেই ছিল। তবে জমাতে পারিনি। ইচ্ছামতো জামাকাপড় কিনেছি, বন্ধুদের নিয়ে খেয়েছি, ঘুরেছি।
প্রথম বইপড়ার অভিজ্ঞতা
বইপড়ার অভ্যেস ছোটবেলা থেকেই। আমি তখন চতুর্থ কিংবা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। সেই সময় প্রথম রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দা সিরিজের মুখোশ বইটি পড়ি। বইটি পড়ে ভালো লেগে যায়। পরে তিন গোয়েন্দা সিরিজের যত বই এসেছিল সব পড়েছি। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বইও প্রচুর পড়েছি। তাঁর বহুব্রীহি বইটি প্রথম পড়ি। আগে থেকেই আমার একটা অভ্যাস, আমি চেয়ে এনে বই পড়ি না। কিনে পড়ি। আমার মনে হয়, কিনে বই পড়লে পড়া শেষে বইটি আমার সংগ্রহে থেকে যাবে। সংগ্রহ করা বই থেকে যখন যে বইটি ভালো লাগবে, সেই বইটি আমি আবার পড়তে পারব।-প্রথম আলো
অনুলিখন: শফিক আল মামুন
২৫ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস