বৃহস্পতিবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০২:৪২:৪৫

‘সালমান শাহ আমাকে অসাধারণ একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন’

‘সালমান শাহ আমাকে অসাধারণ একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন’

রিয়াজ : তাঁকে ঠিক কবে প্রথম দেখেছি মনে পড়ছে না। তবে একটা ঘটনা মনে পড়ে। ১৯৯৬ সালের জুন মাস হবে। এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে একটা মাজারের সেট। ‘মন মানে না’র শুটিং চলছিল। জীবনের প্রতি হতাশ সালমান সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে কাঁদছেন আর গাইছেন। পরনে সবুজ পাঞ্জাবি। আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন প্রখ্যাত পরিচালক দিলীপ বিশ্বাস। ছবির পরিচালক মতিন রহমান সাহেবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এই কথাবার্তার মধ্যেই সালমানকে যা একটু দেখলাম। তারপর চলে এলাম। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! সেই ছবিতে আমি সালমানের স্থলাভিষিক্ত হলাম। অনেকে জানেন, ‘মন মানে না’ ছবির প্রায় ৫০ শতাংশ শুটিং করেছিলেন সালমান। তাঁর মৃত্যুর পর পরিচালক আমাকে নিয়ে ছবিটি শেষ করেন। ১৯৯৭ সালের ১১ নভেম্বর মুক্তি পায় আমার ও শাবনূর অভিনীত ছবিটি, সুপারহিট হয়। সেদিন আমি, মতিন সাহেব, সালমান বা দিলীপদা—কেউ কি ঘুণাক্ষরেও ভেবেছিলাম, একদিন সালমানের জায়গায় আমাকে কাজ করতে হবে!

তাঁর সঙ্গে একটিমাত্র ছবি ‘প্রিয়জন’-এ অভিনয়ের সুযোগ হয়েছে। পরিচালক রানা নাসের। সালমান সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে, তিনি ছিলেন প্রাণোচ্ছল, অস্থির একজন মানুষ। এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকতে কখনোই দেখিনি। স্পট মাতিয়ে রাখতেন। স্পটে খেলনা বন্দুক পেলে বাচ্চাদের মতো সবাইকে তাক করে গুলি করার ভান করতেন। আমাকে একটা পরামর্শ দিয়েছিলেন—‘শুটিং স্পটে সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। এরাই তোমাকে সুপারষ্টার বানিয়ে দেবে। কাজকে তখন আর কাজ মনে হবে না, মনে হবে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছ।’ একটা ঘটনার কথা মনে এলে এখনো বিষণ্ন হয়ে পড়ি। একদিন দেখি তাঁর বুকে কাটা দাগ।

জিজ্ঞেস করলাম, কী করে হলো? বললেন, ‘কোনো কারণে বুকে ব্যথা পেয়েছি, সেটা বাড়ানোর জন্য নিজেও একটু কাটলাম!’

এভাবেই হয়তো অনেক কষ্ট নিয়ে আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন। তিনি থাকলে হয়তো বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আজ এ অবস্থা হতো না। অনুলিখন : মীর রাকিব হাসান -কালের কণ্ঠ
০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে