শুক্রবার, ০২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৫:২১:৫৩

মিডিয়া-পাড়ায় শোকের মাতম

মিডিয়া-পাড়ায় শোকের মাতম

বিনোদন ডেস্ক : বিশিষ্ট বিনোদন সাংবাদিক মোহাম্মদ আওলাদ হোসেনের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শোক জানিয়েছেন তার জন্য।

অভিনেতা উজ্জ্বল লিখেছেন, আওলাদ ছিলো আমাদের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পের ভ্রাম্যমাণ এনসাইক্লোপেডিয়া। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্বশেষ সংবাদ, কারও টেলিফোন নম্বর কিংবা শলা-পরামর্শ দরকার? সবকিছুতে পাওয়া যেতে আওলাদকে। নিজের পেশাগত সমাজ-সমিতি তো আছেই।এর বাইরে প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, ফিল্ম ক্লাব কোথায় ছিলো না আওলাদ! আমার চলচ্চিত্রের বয়স চার যুগের অধিক। আমি বিশ্বাস করি, শোবিজে সফল যারা তাদের জীবনে সাংবাদিকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমাদের আওলাদ ছিলো এই কাজে একেবারে নিঃস্বার্থ দিল দরিয়া। চলচ্চিত্রের ভাষায়, আওলাদের জীবনের ছবিতে এত বড় জার্ক কাটিং থাকবে ভাবতেও পারিনি। আমাদের আলোচনা-সমালোচনার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের জন্য রইলো সমবেদনা। আর মহান আল্লাহ ওকে বেহেস্ত নসীব করুক।

আলাউদ্দিন আলী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক
ক’দিন আগে আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন থেকে আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে বলেছিলাম বাংলাদেশ খুব দ্রুত মেধাশূণ্য হয়ে যাচ্ছে। আওলাদ অনেক গুণী মেধাসম্পন্ন বিনোদন সাংবাদিক ছিলো। চোখের পলকে হারিয়ে গেলো? মানতেই পারছি না...

ওমর সানী, চিত্রনায়ক
আমার আর মৌসুমীর খুবই কাছের মানুষ ছিলেন। নানাভাবে আমাদের পরামর্শ দিতেন। আমাদের পরিবারের এই পরম বন্ধুকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে, তার জন্য দোয়া করবেন।

মিশা সওদাগর, অভিনেতা
এই ১৯ আগস্ট বন্ধু আওলাদ হোসেনকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছিলাম, ‘চলুক কলম, বাড়ুক আয়ু।’ বন্ধু আমার কিছুক্ষণ আগে না ফেরার দেশে চলে গেলো। এরকম সজ্জন আর অসম্ভব মেধাবী মানুষ চলচ্চিত্র শিল্প আর পাবে কি-না জানি না। বন্ধু আমি ছিলাম তোর পাশে ল্যাব এইড থেকে জিগাতলা পর্যন্ত, ওই ফুটবল খেলার দিনগুলোর মতোই, তুই ধর্মভীরু মানুষ ছিলি, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তোকে জান্নাতবাসী করবেন। ...তুই চিন্তা করিস না। আমার আশা বিনোদন জগতের সবাই তোর দুই সন্তান আর পরিবারের পাশে থাকবে। এটা আশা না, আমার আকুতি- আপনারা সবাই দোয়া করবেন আওলাদের জন্য।

পূর্ণিমা, অভিনেত্রী
আমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে আওলাদ ভাই... মাথার ওপর থেকে আর একজন ছায়া সরে গেলো। আল্লাহ আপনাকে বেহেস্তবাসী করুক।

মৌটুসী বিশ্বাস, অভিনেত্রী
আওলাদ হোসেন ভাইয়ের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। বাকরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতোই খারাপ খবর এটা। সৃষ্টিকর্তা তাকে শান্তিতে রাখুক। তার পরিবারও নিরাপদে থাকুক।

অনন্ত জলিল, অভিনেতা-নির্মাতা
আওলাদ ভাইয়ের প্রয়াণে আমি শোকাহত। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন, যার মৃত্যু নেই। আমাদের মন ও মননে তিনি বেঁচে থাকবেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতে নিক। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।

কাজী মারুফ, অভিনেতা
নির্বাক হয়ে গেলাম, খুব কষ্ট লাগছে। ফোনটা পাওয়ার পর থেকে। সত্যি এটা আসলেই খুব মন্দ সকাল। চলচ্চিত্রের অতি আপন মানুষটি আর থাকলোনা। তিনি আমার পরিবারের একজন আপন মানুষ ছিলেন। আওলাদ হোসেন একজন চলচ্চিত্রবান্ধব ভালো মানুষ ছিলেন...।

নিরব, অভিনেতা
অনেক বেশি চাপ হয়ে গেলো আমার জন্য, অনেক কষ্ট হচ্ছে।

সম্রাট, অভিনেতা
আমি মর্মাহত। আওলাদ ভাইয়ের চলে যাওয়ার খবর শুনে থমকে গেছি। তার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমব্যথী আমিও। আল্লাহ তাকে বেহেশতে নিক।

মৌসুমী হামিদ, অভিনেত্রী
খুব দুষ্টুমি করে বলেছিলে, নায়িকা, আমাদের সাথে তো ছবি তোলো না।  তুলেছিলাম তো! এইভাবে? কেনো গেলা? তোমার সঙ্গে এই ছবিগুলো যে শুধুই ছবি হবে তা যদি জানতাম... একদম উচিত হলো না। এএইচ মুরাদ ভাই বলেন এখন, আপনি না বলতেন উনি আমার মাথার ওপর ছায়া?

জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া, মডেল-অভিনেত্রী
ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম আওলাদ ভাই আর নেই। এই খবরটা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। শুধু এইটুকু বলবো তিনি অনেক ভালো মানুষ। তার মতো ভালো মানুষ মিডিয়ায় কমই দেখেছি। ভালো মানুষগুলো কেনো দুনিয়া থেকে এতো তাড়াতাড়ি চলে যান?

কেয়া, অভিনেত্রী
আমাদের প্রিয় আওলাদ ভাইয়া আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সবাই আওলাদ ভাইয়ার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন।

বাপ্পী, অভিনেতা
বিনোদন জগতের নিবেদিত প্রাণ আওলাদ ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। গতকাল রাতে পুরো চলচ্চিত্র শিল্পে শোকের ছায়া নামিয়ে আওলাদ ভাই পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। খবরটা শোনার পর নিজেই নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কখনও ভাবতেই পারিনি তিনি আমাদেরকে কাঁদিয়ে এভাবে চলে যাবেন না ফেরার দেশে। যিনি ছিলেন ঢাকাই সিনেমার শুভাকাঙ্ক্ষী, যার লেখা পড়ে সিনেমাপ্রেমী মানুষরা আশান্বিত হতেন, তিনি আর কখনও আমাদেরকে নিয়ে লিখবেন না। এ রকম গুণী আর মেধাবী মানুষ চলচ্চিত্র শিল্প আর পাবে কি-না জানি না। বিধাতা আওলাদ ভাইকে জান্নাতবাসী করুক এই কামনা করি।

অমৃতা খান, অভিনেত্রী
আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, আওলাদ আঙ্কেল আর নেই। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) চ্যানেল আইয়ের অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে কথা হলো। আর রাতেই শুনলাম তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমার বড় চাচ্চুর (খালেদ খান) বন্ধু ছিলেন। আমাকে সিনেমা নিয়ে ভালো উপদেশ দিতেন। তার চলে যাওয়া বিশ্বাস করতে পারছি না।

শওকত আলী ইমন, সুরকার ও সংগীত পরিচালক
আওলাদ হোসেনকে আমি মামা বলে সম্বোধন করতাম। তিনি ছিলেন আমার নিরব অভিভাবকের মতো। আমার ক্যারিয়ারের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি আমার ভালো-মন্দ এবং সুসময়-দুঃসময়ে পাশে ছিলেন। কোনোদিন উনার মুখে হাসি ছাড়া কিচ্ছু দেখিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য নিবেদিত প্রাণ একজন ব্যক্তিত্বকে হারালাম আমরা। কেনো এভাবে নিরবে প্রস্থান তার? এরকম মানুষগুলো চলে যেতে থাকলে আমাদের শিল্প একসময় এতিম হয়ে যাবে। গতকাল রাত দুটায় তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আল্লাহ অবশ্যই মামার জন্য বেহেশতের দরজা খোলা রাখবেন।

ইমন সাহা, সুরকার ও সংগীত পরিচালক
খুবই খারাপ খবর শুনে ঘুমটা ভাঙলো। আমাদের প্রিয় সাংবাদিক আওলাদ হোসেন আর নেই! মিডিয়ার মানুষদের প্রতি তিনি সবসময় খুব সহায়তাপ্রবণ ও ইতিবাচক ছিলেন।  যখনই তার কাছে কোনো পরামর্শ বা সহায়তা চেয়েছি, তিনি কখনও ফিরিয়ে দেননি। আমরা আপনাকে মিস করবো আওলাদ আঙ্কেল। সৃষ্টিকর্তা আপনার প্রতি সবসময় সদয় থাকবে, এই কামনা রইলো।

দিনাত জাহান মুন্নী, কণ্ঠশিল্পী
গতকাল (১ অক্টোবর) চ্যানেল আইয়ের জন্মদিন দুপুর ২টার কথা। আমাদের সবার আনন্দ আড্ডা আর ছবি তোলার হিড়িক। হঠাৎ অনেক রঙিন একটি টি-শার্ট গায়ে তিনি সামনে এসে দাঁড়ালেন। বললাম -শার্টটা এতো রঙিন কেনো ভাইজান? তার উত্তর- ভেতরে যতো দুঃখের রঙই থাকুক বাইরে রঙিন থাকাই ভালো। বলেই আমার পাশে দাঁড়িয়ে নিজ থেকেই আলোকচিত্রী শাহিনকে বললেন ছবি তুলে দিতে। এই মানুষটিই ১২ ঘণ্টা পর রাত ২টায় চলে গেলেন না ফেরার দেশ অচিনপুরে। চলচ্চিত্র সাংবাদিক প্রিয় আওলাদ হোসেন ভাই, আপনার সঙ্গে সবার স্মৃতিগুলো আপনার টিশার্টের মতোই রঙিন রয়ে যাবে আজীবন। শান্তিতে থাকুক আমাদের আওলাদ ভাই। এই ছবিটি তার সঙ্গে তোলা শেষ ছবি, তার মৃত্যুর ১২ ঘণ্টা আগে।
 
শফিক তুহিন, সংগীতশিল্পী
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার রাজা আর নেই। তার বিদেহী আত্মার জন্য সবাই প্রার্থনা করছে। শান্তিতে থাকুন আওলাদ হোসেন।

প্রীতম আহমেদ, সংগীতশিল্পী
আমার অন্যতম পছন্দের বড় ভাই ও মজার মানুষ সাংবাদিক আওলাদ হোসেন চলে গেছেন পৃথিবীর সব মায়া ছেড়ে। এই সংবাদ শুনে শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুনি আরেক পছন্দের ও ভালোবাসার ছোটভাই আরজে প্রত্যয় কবির শিমুল আর নেই। আওলাদ ভাই তার স্ত্রী সন্তান রেখে গেছেন আর প্রত্যয় তার প্রিয় গিটার, যেটা বাজিয়ে গান গাইবে না আর কেউ। খুব সকালেই জানান দিলো পৃথিবী, জীবন অনেক ছোট। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে সবার অন্তত একটা স্বপ্নপূরণ হোক।

শাহ আলম কিরণ, চলচ্চিত্র পরিচালক
আমার খুব কাছের বন্ধুপ্রতীম ছোটভাই সাংবাদিক আওলাদ হোসেন চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আসুন আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি।

সাফিউদ্দিন সাফি, চলচ্চিত্র পরিচালক
আওলাদ ভাই আমাদেরকে কাঁদিয়ে এভাবে চলে গেলেন কেনো?

দেবাশীষ বিশ্বাস, নির্মাতা ও উপস্থাপক
বাবার পর মিডিয়ায় আমার সবচেয়ে কাছের মানুষটিকে হারালাম। আজকের পর থেকে মিডিয়ায় আমার আর কোনো অভিভাবক রইলো না! আজকের পর থেকে আমাকে আর কেউ দেখা হলে জোরে ডাক দিয়ে বলবে না, ‘ও কাকু কেমন আছো?’

মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, চলচ্চিত্র পরিচালক
প্রিয় আওলাদ ভাই আপনি বলেছিলেন কিছুদিন পর আপনি আমার সঙ্গে বসবেন আমার আগামী ছবি ‘চুপি চুপি প্রেম’ নিয়ে। আমার প্রতিটি ছবি মুক্তির আগে আপনি এটা করতেন। এবার তো আপনি কথা রাখলেন না...! আমার সঙ্গে দেখা হলে শাবনূরকে নিয়ে আমাকে ক্ষেপিয়ে মজা পেতেন ‍আপনি। সেদিন মাথায় হাত রেখে বললেন, তোকে আমি অনেক ভালোবাসি, তাই খেপাই। আর আমাকে কে ক্ষেপাবে আওলাদ ভাই?

রেদওয়ান রনি, নির্মাতা
মাঝে মধ্যেই দেখা হয়ে যেত কোনো অনুষ্ঠানে, খুব আন্তরিকভাবে জানতে চাইতেন সিনেমার আপডেট। সিনেমার জন্য আন্তরিক মানুষগুলো এভাবে চলে যাচ্ছে কেনো? আওলাদ ভাই, যেখানেই থাকেন,ভালো থাকবেন। তার আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করবেন সবাই।

মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, নির্মাতা
কি শুনলাম আওলাদ ভাই নেই, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। মাত্র বিকেলে দেখা হলো...

আবদুল্লাহ জহির বাবু, চিত্রনাট্যকার
গতকাল দুপুর থেকে আমার মোবাইল ফোনের টাচস্ক্রিন কাজ করছিলো না। তাই কারও ফোন রিসিভ করতে পারিনি। কিন্তু সকালে ফেসবুক খুলে এটা আমি কী শুনলাম? কাকে কি বলবো? কাকে বোঝাবো আমার মনের কষ্ট? আমাদের প্রিয় আওলাদ ভাই যে আর নেই! আজকের পর আমি বিপদে পড়লে কার কাছে যাবো বুদ্ধি নিতে? কার কাছ থেকে উপদেশ নেবো? সাংবাদিক হলেও যিনি ছিলেন আমার বড় ভাই, আমার পরামর্শদাতা, যার সঙ্গে পরিচয় দিয়ে আমার ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু উনি আওলাদ ভাই। আমার দীক্ষাগুরু যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন যে, ক্যারিয়ার গড়তে হলে উনার আশীর্বাদ লাগবে, উনি আওলাদ ভাই। বিপদে আপদে, সময়-অসময়ে যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন উনি আওলাদ ভাই। এটা কী হলো? উনি এতো অল্প বয়সে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন? আমাদের এতো স্মৃতি, এতো কথা কাকে বলবো? কে আমাকে ভুল করলে সাবধান করে বলবে, ‘ওই মিয়া স্ট্যাটাস দিছো কেনো? ঝামেলায় পড়বা। স্ট্যাটাস ঠিক করো।...’
০২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে