বিনোদন ডেস্ক: এ মুহূর্তে চুটিয়ে ঈদের নাটকে অভিনয় করছেন ডা. এজাজ। গত এক মাস ধরে আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নির্মাণ হওয়া নাটকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন তিনি।
সে সঙ্গে প্রচার চলতি ও নতুন কয়েকটি ধারাবাহিকের শুটিং তো চলছেই। এ মুহূর্তে তার অভিনীত ‘লড়াই’, ‘শান্তি অধিদপ্তর’, ‘নগর জোনাকি’, ‘জীবনের অলিগলি’ সহ বেশ কিছু ধারাবাহিক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার চলছে।
ব্যস্ততা প্রসঙ্গে ডা. এজাজ বলেন, গত এক মাস ধরে ঈদের জন্য নির্মিত নাটকগুলোর কাজ করে আসছি। এর মধ্যে মাসুদ সেজানের পরিচালনায় ২টি সিরিয়াল আছে। পাশাপাশি তারই একটি খন্ড নাটকে অভিনয় করেছি। তাছাড়া আরও কয়েকজন নির্মাতার নাটকে কাজ করেছি। শেষ সময়ে এসেও কিছু কাজ হাতে আছে।
ঈদের জন্য এবার বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ কাজ থাকছে। দর্শক দেখে উপভোগ করবেন এমনটাই বিশ্বাস করি। অভিনয় ও ডাক্তারি পেশা দুটোকেই সমানভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন ডা. এজাজ। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কিছুটা ঝামেলা হলেও এখন ঠিকই মানিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা আসলে অভ্যাসের বিষয়। প্রথম প্রথম বিড়ম্বনা হতো বৈকি। তবে আমি মানিয়ে নিয়েছি। আর আমি প্রচুর পরিশ্রম করতে পারি। সবাই ঘুমালেও কাজ করতে থাকি। কাজ করলে আমার মধ্যে ক্লান্তি আসে না। বরং কাজের মধ্যে না থাকলে নিজের মধ্যে অস্বস্তি কাজ করে। তাছাড়া আমি খুব রুটিন মাফিক কাজ করি।
সেজন্যই সবকিছু মেইনটেই করা কঠিন হয় না। তাছাড়া ব্যস্ত থাকাটা আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অভিনয় ও রোগিদের সেবা করা দুটোই আমি উপভোগ করি। আর উপভোগ করতে পারলে কোনোকিছুতেই দেখবেন ক্লান্তি বা সমস্যা থাকে না। ১৯৮৪ সালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন ডা. এজাজ।
পরবর্তী সময়ে পিজি হাসপাতাল (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে ডিপ্লোমা ইন নিউক্লিয়ার মেডিসিন-এ ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানেই প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে পরিচয়। এক পর্যায়ে তার নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে যান।
এ প্রসঙ্গে ডা. এজাজ বলেন, স্যারের হাত ধরেই আমি অভিনয়ে আসি। পরিচয়ের এক যুগের বেশি সময় স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি। এই দীর্ঘ সময়টুকুতে স্যার আমাকে অনেক ভালোবাসা, অনেক স্নেহ দিয়েছেন, তার প্রমাণ আমি প্রতি মুহূর্তেই পেয়েছি।
প্রত্যেকটি দায়িত্বপূর্ণ কাজে তিনি আমার ওপর ভরসা করতেন অনেক বেশি। এমনকি যে কাজে সমস্যা হতে পারে, ঝামেলা হতে পারে তেমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজটিও সবসময় স্যার আমাকে করতে দিতেন। স্যারের একেকটা নাটক, ছবি আমার কাছে একেকটা ঈদের মতো ছিল। একটা নাটক,ছবি শেষ করে এসে মনে হতো পৃথিবী জয় করে এলাম।
এখন তো প্রায়ই কোনো না কোনো নাটক, চলচ্চিত্রের শুটিং করছি। কিন্তু সে রকম কিছুই মনে হয় না। কাজের মধ্যে কোনো আনন্দ নেই। কোনো উচ্ছ্বাস নেই। সেনাপতি যখন উৎফুল্ল থাকে, কাজে মনোযোগী থাকে তখন সৈন্যরা তো মনোযোগী হতে বাধ্য। এখন সেনাপতিরা মরা, তাই আমরা সৈন্যরাও মরা।
বিটিভির সেই জনপ্রিয় ‘সবুজ সাথী’ নাটকে অভিনয় করা ডা. এজাজ এখন দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জনকারী একজন অভিনেতা। বর্তমান সময়ের একাধিক নাটকে অভিনয় করলেও নিছক নেশা থেকেই এ অঙ্গনটির সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছেন নিজেকে। নাটকের অবস্থা খারাপ হলেও আশাবাদি তিনি।
এ প্রসঙ্গে বলেন, অভিনয়টা নেশা হয়ে গেছে বলে করছি। কাজ না করলে ভালো লাগে না। আবার নাটকের অবস্থাটাও তেমন ভালো নয়। তবু আছি। দেখি না কী হয়। কিছু দর্শক কলকাতার নাটক দেখেন। আসলে তাদের রুচি নিয়ে আমার মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে। এসব ফালতু নাটকের চেয়ে আমাদের নাটকের মান অনেক ভালো। তবে আমি এসব নিয়ে বিচলিত নই।
অভিনয়ের পাশাপাশি ডাক্তারি পেশায় নিয়জিত থাকলেও এখনকার অন্য দশজন ডাক্তার থেকে এজাজুল ইসলাম একটু আলাদা। রোগিদের কাছ থেকে চড়া ফি আদায় যেমন করেন না তেমনি অনেক সময় বিনামূল্যেও রোগি দেখেন তিনি। প্রতিদিন আধেক বেলা শুটিং শেষ করেই ঢাকার অদূরে গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি চেম্বারে বসে রোগি দেখেন ডা. এজাজ।
অন্য ডাক্তাররা ৬০০ টাকা করে ফি আদায় করলেও তিনি সেটার অর্ধেক মূল্যে রোগি দেখেন। তাছাড়া অনেকের কাছ থেকে ২০০ কিংবা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাকে অনেকে গরীবের ডাক্তার বলেও ডাকেন। কোনো রোগীকে বাধ্য করে ফি আদায় করি না। ৩০০ টাকা হারে ফি থাকলেও অনেককে ফ্রি চিকিৎসা দিই।-এমজমিন
৩ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/আ শি/এএস