বিনোদন : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ। তিনি ধুমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন, তেমনি করেই হারিয়ে গেছেন কোটি দর্শকের মনে দাগ কেটে।
অমর এই নায়কের ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর। এ দিনটি উপলক্ষ্যে সালমান শাহ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আগামীকাল মঙ্গলবার, এফডিসি মসজিদে বাদ আছর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিচালক সোহনুর রহমান সোহান। সালমান শাহ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি কন্ঠশিল্পী এসএম শফিসহ চলচ্চিত্রাঙ্গনের শিল্পী, কলাকুশলী এবং অন্যান্যরা উপস্থিত থাকবেন। এই দোয়া এবং মিলাদ মাহফিলে সালমান শাহ ভক্তদের উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ রইলো।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মৃত্যুর এখনো কোনো কুলকিনারা হয়নি। প্রতিপক্ষ ও নিন্দুকেরা তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও তার পরিবার ও ভক্তদের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সালমান শাহের জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নানার বাড়ি দাড়িয়া পাড়া, সিলেট। তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশু শিল্পী হিসেবে। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন কন্ঠশিল্পী। তবে চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার ক্ষেত্রে বলা যায় ‘এলেন, অভিনয় করলেন, জয় করলেন লাখো দর্শকের হৃদয়’।
সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্রে আগমন। প্রথম ছবিতেই সারা দেশের মানুষের মন জয় করে নিলেন তার অভিনয়, ব্যক্তিত্ব আর সুদর্শন চেহারা দিয়ে।
স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন। তার প্রায় প্রতিটি সিনেমা ব্যবসা সফল ছিল। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্নেহ’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘কন্যা দান’, ‘দেন মোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘মহা মিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’, ‘বিচার হবে’, ‘এইঘর এই সংসার’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেম পিয়সী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু‘’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
এসব সিনেমায় তার নায়িকা ছিলেন মৌসুমী, শাবনুর, লিমা. শাবনাজ, বৃষ্টি, শাহনাজ,শ্যামা প্রমুখ। কিয়মত থেকে কিয়ামতে সালমানের সঙ্গে মৌসুমীর অভিনয় এবং এই জুটি পরিচিত হলেও শাবনুরের সঙ্গে তার জুটিবদ্ধ সিনেমার সংখ্যা বেশি। এবং এই জুটিই বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বলা যায় সালমান শাহ শাবনুরকে লাইম লাইটে নিয়ে আসেন।
এছাড়াও প্রয়াত এই নায়ক আটটি টিভি নাটকে অভিনয় করেন। এগুলো হলো- আকাশ ছোঁয়া, দেয়াল, সব পাখি ঘরে ফিরে, সৈকতে সারস, পাথর সময়, ইতিকথা, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী (টেলিফিল্ম)।
জনপ্রিয় এই নায়কের জন্ম ও মৃত্যু দিনে বিভিন্ন সংগঠন এবং সংবাদপত্র ও টেলিভিশন বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সালমান শাহ স্মৃতি পরিষদ। এই সংগঠনটি সালমান শাহ’র জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী ২০০৩ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে পালন করে আসছে।
সালমান শাহ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি এস এম শফি বলেন, ‘আমরা সবসময় কালজয়ী এই নায়ককে নিয়ে নানা রকম আয়োজন করে থাকি। ধারাবাহিকতায় সালমান শাহ’র ৪৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এফডিসি চত্বর ও জসিম ফ্লোরে দেশের সকল তারকা, পরিচালক, প্রযোজক, সাংবাদিক এবং বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে দিনব্যাপী ‘সালমান শাহ উৎসব ২০১৬’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আর আগামীকালও সবাই উপস্থিত থেকে সালমান শাহ’র বিদেহি আত্মার শান্তি কামনায় শরীক হবেন।’ -জাগো নিউজ
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম