সোমবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৭:২৪:০২

মৃত্যুর আগে সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী রিচার লিখে যাওয়া শেষ চিঠি

মৃত্যুর আগে সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী রিচার লিখে যাওয়া শেষ চিঠি

বিনোদন ডেস্ক: ‘‘আমরা প্রত্যেকেই নিজের নিজের পথে নিজের নিজের লক্ষ্যের দিকে এগোই। আমিও তেমনটাই এগোচ্ছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমার পথটি একটি কানাগলি মাত্র।’’

সঞ্জয় দত্ত শুধু একজন সফল অভিনেতাই নন, পাশাপাশি তিনি একজন স্নেহশীল পিতাও। কন্যা ত্রিশলাকে তিনি প্রাণাধিক ভালবাসেন। তার একটি কারণ হয়তো এই যে, ত্রিশলা মাতৃহীন কন্যা। ২১ বছর আগে ১৯৯৬ সালে সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে বুকে আগলে রেখে মেয়েকে বড় করেছেন সঞ্জয়।

সঞ্জয়ের সঙ্গে রিচার ভালবাসা ও মৃত্যুজনিত বিচ্ছেদের কাহিনি কোনও সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয়। ১৯৮০-র দশকের শুরুর দিকে সঞ্জয় ডুবে গিয়েছিলেন ড্রাগের নেশায়। নেশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাঁকে বেশ কিছুদিন একটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারেও কাটাতে হয়। সেই সময়েই রিচার সঙ্গে আলাপ হয় সঞ্জয়ের। বলিউডের হাতে গোণা কয়েকটি ফিল্মে অভিনয় করা অভিনেত্রী রিচার ভালবাসা সঞ্জয়কে নেশার আবর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে অনেকখানি সাহায্য করে। দু’জনে পরস্পরের মধ্যে শান্তি খুঁজে পান। ১৯৮৭ সালে দু’জনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এক বছর পরে জন্ম হয় তাঁদের কন্যা ত্রিশলার। কিন্তু তার পরের বছরই রিচার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। অনেক চেষ্টা করেও রিচাকে বেশিদিন বাঁচানো যায়নি। ১৯৯৬ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রিচা।

তারপরে কেটে গিয়েছে ২১ বছর। কিন্তু ত্রিশলার মন থেকে যে এতটুকু ফিকে হয়নি তাঁর মায়ের স্মৃতি, তার প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি। বর্তমানে ২৮ বছর বয়সি রিচা কিছুদিন আগে খুঁজে পেয়েছেন তাঁর মায়ের লিখে যাওয়া একটি নোট। মৃত্যুর আগে এটিই রিচার লেখা শেষতম চিঠি বলে জানিয়েছেন ত্রিশলা। সেই চিঠি কিছুদিন আগে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন ত্রিশলা।

নিজেদের পরিজনদের উদ্দেশেই চিঠিটি লিখেছিলেন রিচা। ইনস্টাগ্রামে ত্রিশলার শেয়ার করা সেই চিঠিতে ধরা পড়েছে এক মৃত্যুপথযাত্রীর বেদনা আবেগ ও পরিজনদের প্রতি তাঁর প্রাণভরা ভালবাসা। রিচা তাঁর চিঠিটিতে লিখেছেন— ‘‘আমরা প্রত্যেকেই নিজের নিজের পথে নিজের নিজের লক্ষ্যের দিকে এগোই। আমিও তেমনটাই এগোচ্ছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমার পথটি একটি কানাগলি মাত্র। কীভাবে আমি ফিরে যাব? আমি কি আর একটি সুযোগ পাব? তা সময়ই বলবে। আমি দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে প্রস্তুত রয়েছি। কারণ মনের গভীরে আমার এই বিশ্বাস রয়েছে যে, আমাকে কেউ একা ফেলে চলে যাবে না। এখনও আমি হতাশ নই। আমি জানি, আমার হিতকারী দেবদূত আমাকে আমার স্বপ্নের কাছে পৌঁছে দেবে। আমার স্বপ্নেরা স্নেহময় আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরবে আমাকে।’’

রিচার চিঠিটি পড়লে বোঝা যায়, নিশ্চিত মৃত্যুর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও আশা ছাড়তে রাজি ছিলেন না রিচা। তাঁর আশা ছিল, হয়তো কোনও মির‌্যাকল বাঁচিয়ে দেবে তাঁকে। পাশাপাশি এই চিঠিতে ব্যক্ত হয়েছে স্বজন ও পরিজনদের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসা, এবং তাঁদের সঙ্গে একসঙ্গে জীবনের পথ চলার গভীর আকুতি। ত্রিশলার শেয়ার করা এই চিঠি এই চোখে জল এনেছে অনেকেরই। আর ত্রিশলা এই চিঠি প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘‘এতদিনে বুঝতে পারলাম, ভাল লিখতে পারার যে সহজাত দক্ষতা আমার মধ্যে রয়েছে, তা আসলে আমার মায়ের সূত্রে পাওয়া।’’-এবেলা
৫ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে