বিনোদন ডেস্ক : 'আমার সব কিছুই এখন অন্ধকার। চোখে অসহ্য যন্ত্রণা। মনে হয়, চোখ দুটো নষ্ট হয়ে গেছে। আবার সবকিছু দেখতে চাই। আমি কি চোখের আলো ফিরে পাবো?' অনেকটা অশ্রুভেজা কণ্ঠে নিজের শংকার কথা মুঠোফোনে এমনটাই জানালেন অভিনেত্রী প্রিয়া আমান।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রিয়ার দুটি চোখের কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে তিনি চোখে কিছু দেখতে পারছেন না। বর্তমানে তার চোখ দুটি ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় রয়েছে।
মুঠোফোনে কল দিতেই ওপার থেকে ভেসে উঠলো প্রিয়ার দুলাভাইয়ের কণ্ঠস্বর। তিনি জানালেন, প্রিয়ার অবস্থা এখন খুব একটা ভালো নয়। এরপর নিজের পরিচয় বলার পর প্রিয়াকে ফোনটি দিলে নিজেই জানান তার এ দুরবস্থার কথা।
প্রিয়া বলেন, 'গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি শ্যুটিং হাউজে একটি ধারাবাহিক নাটকের শ্যুটিংয়ে অংশ নেই। কাহিনীর চরিত্রের প্রয়োজনে একটি লেন্স ব্যবহার করি। কিন্তু লেন্স খোলার পরপরই চোখে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভূত হয়। শ্যুটিং হাউজ থেকে বের হওয়ার পর ব্যাথার তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। একটা পর্যায়ে রাস্তায় পড়ে যাই। ব্যথার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
পরে সেখানে উপস্থিত কিছু পুলিশ সদস্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে নেয়া হয় চক্ষু হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, আমার দুটি চোখের কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসকদের ধারণা, যে লেন্সটি চোখে পড়েছিলাম সেটি হয়তো মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। এ কারণে লেন্সের রঙ চোখের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লেন্স প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রিয়া বলেন, 'শ্যুটিংয়ের দিনই ফার্মগেইটের একটি দোকান থেকে কিনেছিলাম। হয়তো সেটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। '
এসব বলতে বলতেই এক পর্যায়ে মুঠোফোনের ওপার থেকে কান্নার শব্দ শোনা যায়। অশ্রুভেজা কণ্ঠে প্রিয়া বলেন, 'অনেকে মনে করছে আমি হয়তো শ্যুটিংয়ে ফাকি দেয়ার জন্য চোখের সমস্যার কথা বলছি। তারা আমাকে ভুল বুঝছেন। কেউ কেউ বলছেন, আমার নাকি কিছুই হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, আমার অবস্থা খুবই খারাপ। এই চোখ দুটো আগের অবস্থায় ফিরে পাব কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত। '
বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রিয়া বলেন, 'তিনদিন ধরে চোখে ব্যান্ডেজ করা আছে। চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেছিলেন কিন্তু তা করিনি। এখন আমি সাভারের বাসায় আছি। চিকিৎসকরা এসে চোখের ব্যান্ডেজ খুলে ড্রেসিং করে দিয়ে যাচ্ছেন। এরপরই আবার ব্যান্ডেজে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। সবার কাছে একটাই প্রত্যাশা তারা যেন দোয়া করেন। আমি আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চাই। '
এবারের ঈদে প্রিয়া আমান অভিনীত ছয়টি নাটক বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হয়েছে। এগুলো হলো পৃথুরাজ পরিচালিত অনুরণন, শাহীন সরকার পরিচালিত ভালোবেসে যদি সুখ নাহি, মোহন খানের মেঘ পাখি একা, অঞ্জন আইচ পরিচালিত সাধারণের দুঃস্বপ্ন, মিনহাজ অভি পরিচালিত চন্দ্রমল্লিকার বনে, অন্তু আজাদের আহ্বান।
অভিনেতা সোহেল রানার হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে প্রিয়া আমানের। অদৃশ্য শত্রু সিনেমায় জায়েদ খান ও নবাগত মাশরুর পারভেজের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি।
৩ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি