বিনোদন ডেস্ক: ছোটবেলায় সানি লিওনের স্বপ্ন ছিল নার্স হবেন। কিন্তু তা না হয়ে হয়েছেন অন্ধকার জগতের নায়িকা। তবে আর যাই হোক এপার বাংলা বলেন আর ওপার বাংলা বলেন সব জায়গাতেই পরিচিত মুখ সানি। সানি এককালে আর পাঁচটা মেয়ের মতো সাধারণ একটা জীবন চেয়েছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল নার্স হয়ে অসুস্থ মানুষের, বিশেষত শিশুদের সেবায় নিয়োজিত করবেন নিজেকে।
১৯৮১ সালে আমেরিকার ওন্টারিওতে জন্ম সানির। সানির পিতৃদত্ত নাম অবশ্য সানি লিওন নয়। তার প্রকৃত নাম করণজিৎ কৌর বোহরা। ছোটবেলায় বেশ দুরন্ত ছিলেন সানি। ভালবাসতেন পাড়ার রাস্তায় বন্ধুদের সঙ্গে হকি খেলতে। তার বাবা-মা তাকে ভর্তি করান একটি ক্যাথোলিক স্কুলে। ধর্মীয় ঘেরাটোপে থাকলে মেয়ে সুরক্ষিত থাকবে, এমনটাই ভেবেছিলেন সানির বাবা-মা। কিন্তু কোনো অনুশাসনে বাঁধা পড়ার মেয়ে ছিলেন না সানি। কিশোরী বয়সেই পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলের এক বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
তখনো অন্ধকার জগতে পা দেয়ার পরিকল্পনাই ছিল না সানির। পড়াশোনা শেষ করার পরে কিছুদিন সানি একটি জার্মান বেকারিতে কাজ করেন, তারপর কাজ করেন জিফি লিউব নামের নামজাদা অটোমোটিভ কোম্পানিতে। কিছুদিন ছিলেন একটি ট্যাক্স এবং রিটায়ারমেন্ট ফার্মেও। সানির চোখে তখন নার্স হওয়ার স্বপ্ন। সেই মতো অরে়ঞ্জ কাউন্টির একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পে়ডিয়াট্রিক নার্স হওয়ার ট্রেনিং নিতে শুরু করেন সানি। কিন্তু বিধাতা বোধ হয় অন্যভাবে লিখে রেখেছিলেন সানির ভাগ্য। যখন নার্স জন্য পড়াশোনা করছেন সানি, তখনই তার এক বান্ধবী, যিনি ছিলেন এগ্জোটিক ডান্সার, সানির আলাপ করিয়ে দেন বিখ্যাত প্রাপ্তবয়স্ক ম্যাগাজিন পেন্টহাউজ-এর এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে। কিছুদিনের মধ্যেই পেন্টহাউজ-এর পক্ষ থেকে সানির কাছে প্রস্তাব আসে পেন্টহাউজের প্রচ্ছদের জন্য ফটো শুটের। যা ছিল একেবারেই বিতর্কিত ফটো শুট। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ ছিল না সানির পক্ষে। তার পরিবার ছিল অত্যন্ত রক্ষণশীল। সানির মনে দ্বিধা ছিল। কিন্তু দ্বিধাকে জয় করতে সাহায্য করে প্রস্তাবিত টাকার অঙ্ক়টা। এমন বিতর্কিত ছবি তোলানোর বিনিময়ে বিপুল অঙ্কের টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে। পরবর্তীকালে সানি নিজেই জানান, অত মোটা টাকার লোভ সামলাতে পারেননি তিনি।
এই সময়েই নিজের পোশাকি নাম পরিবর্তন করেন করণজিৎ। তিনি নিজের নাম নির্বাচন করেন সানি। আর পদবী ‘লিওন’ স্থির করে দেন পেন্টহাউজ ম্যাগাজিনের তৎকালীন মালিক বব গুচিওনি।
এরপর আর অন্য দিকে তাকাতে হয়নি সানিকে। অন্ধ জগতেই তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। ২০০৩ সালে তিনি ‘পেন্টহাউজ পেট অফ দি ইয়ার’ নির্বাচিত হন। তার বছর দু’য়েক আগেই ‘বিগ বস’-এ আসার সুবাদে বলিউডের সঙ্গে তার যোগসূত্র স্থাপিত হয়ে গিয়েছিল। ২০১২ সালে ‘জিসম টু’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে অভিষেকও ঘটে যায় তার।
তবে এখন সানি বলিউডের মূলধারার নায়িকা। নার্স হওয়া হয়নি তার। কিন্তু তিনি অর্জন করেছেন খ্যাতি-প্রতিপত্তি। বহু মানুষের ভালবাসাও পেয়েছেন সানি। আশা করা যায়, ভালই রয়েছেন আজকের সানি লিওন।-এবেলা
১৭ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর