বিনোদন ডেস্ক : সৌন্দর্যের যত্ন নেওয়া জরুরি। কিন্তু রাজনীতিতে অভিজ্ঞতাই গ্রুমিং। কেয়া শেঠের ব্যক্তিত্বচর্চা শুনলেন স্যমন্তক ঘোষ।
আপনি না কি বাঙালির জীবনে ফ্যাশন-বিপ্লব?
বিপ্লব কি না জানি না। তবে গত ২০ বছরে বাঙালি অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন হয়েছেন। মানতেই হবে। আগে অনেকগুলো পাড়ার মধ্যে একটা বিউটি পার্লার থাকত। এখন পাড়ায় পাড়ায় অসংখ্য পার্লার। সব জায়গায় ভিড় উপচে পড়ে।
আপনার কেরিয়ারের শুরুও তো পাড়ার ছোট্ট বিউটি পার্লার দিয়ে?
এখনও আছে সেই পার্লার। পাইকপাড়ায়। ওখান থেকেই শুরু করেছিলাম। শুধু মধ্যবিত্ত নয়, নিম্নবিত্ত মানুষেরাও আমার কাছে আসতেন ত্বকের যত্ন নিতে। চুলের যত্ন নিতে। সেই তখন থেকেই নানারকম হার্বাল প্রোডাক্ট বানাতে শুরু করেছিলাম। বাড়িতে ল্যাবরেটরি বানিয়েছিলাম। দেশ-বিদেশের বই আর ডকুমেন্টারির লাইব্রেরি বানিয়েছিলাম। পরে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন কোর্সও করেছি। সেখান থেকেই অ্যারোমা থেরাপির বিষয়ে জানতে পেরেছি। এখন তো আরও লোক আছেন আমার সঙ্গে। কেমিস্ট আছেন। নিজেকে আর হাতেকলমে প্রোডাক্ট বানাতে হয় না।
আপনার কাছে তো শহরের নামী-দামি লোকেরাও আসেন। আর সব ছেড়ে আপনার কাছেই কেন? কোনও বিশেষ সুযোগ?
আলাদা সুযোগের প্রশ্নই নেই। সব ক্লায়েন্টই আমার কাছে সমান। তবে কেউ গ্রুমিংয়ে জন্য অতিরিক্ত সময় চাইলে দেওয়া হয়। এক্সট্রা কেয়ার চাইলে তারও ব্যবস্থা আছে। সব রকম প্যাকেজই আমাদের আছে।
রাজনীতিবিদেরাও নিশ্চয়ই আপনার কাছে আসেন নিয়মিত?
(এক গাল হাসি। ওটাই উত্তর)
বাঙালি হঠাৎ গ্রুমিংয়ে এত মন দিল কেন?
আমার বিশ্বাস, প্রতিদিন একবার আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিত। নিজেকে চেনার জন্য। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করার জন্য। আয়নার উল্টোদিকের মানুষটাকে সুন্দর দেখতে লাগলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পরিপাটি চেহারা ও পোশাক পরিপাটি ভবিষ্যৎ তৈরি করে। সেই জন্যই গ্রুমিং জরুরি। খেয়াল করে দেখবেন, ২০ বছর আগেও বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলে মানুষ বুড়িয়ে যেতেন। কাজ করার ইচ্ছা হারাতেন। এখন ৫০ বছরের মানুষকে তরুণ মনে হয়। অনেকেই নতুন কাজ শুরু করেন ওই বয়সে পৌঁছে।
কুড়ি বছর আগের কলকাতাও তো অনেক বদলেছে। সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। মানেন?
অবশ্যই ! কলকাতার গ্রুমিং হয়েছে। রাস্তাঘাট কত সুন্দর হয়েছে বলুন তো ! আমার তো দারুণ লাগে এখনকার কলকাতা দেখতে।
যাঁরা সৌন্দর্যায়ন করছেন, সেই শাসকদলের অনেকেই শোনা যায় আপনার ঘনিষ্ঠ !
হতে পারে। আর কোনও কমেন্ট করব না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তো যোগাযোগ আছে। দিদির জন্য কোনও গ্রুমিং টিপস্?
রাজনীতিকদের গ্রুমিং হয় অভিজ্ঞতায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও হয়েছে। উনি অভিভাবকের মতো। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
দিদির জন্য বিশেষ কোনও প্রোডাক্টের কথা মনে হয়?
এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। বললাম তো, রাজনীতিকদের আসল গ্রুমিং তাঁদের অভিজ্ঞতা। মানুষের সঙ্গে সংযোগ।
কেন? রাজনীতিকদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য সোন্দর্যের গ্রুমিংয়ের প্রয়োজন নেই?
(আবার হাসি) বদল কিন্তু হচ্ছে। রাজনীতিকেরা কিন্তু আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাশন-কনশাস হয়েছেন। এখানেও। দিল্লিতেও। -এবেলা।
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএ