বিনোদন ডেস্ক: একদিকে যখন ডিজিটাল ভারত নিয়ে মাতামাতি তুঙ্গে, তখনই ৮০ বছরের এই বৃদ্ধা প্রতিদিন প্রাণপণ বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাবছেন এ 'পোড়া দেশে' এরকম কত রয়েছেন। কিন্তু এই বৃদ্ধার নামে যে একসময় ডাকটিকিট ছাপিয়েছে ডাকবিভাগ। দিল্লি ইউনিভার্সিটির রাজধানী কলেজে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপিকা ছিলেন। একইসঙ্গে কত্থক, ভারতনাট্যম ও কথকলি নৃত্যে একসময় ভারতের গর্ব। নাম তারা বালগোপাল।
এককালের ভারতসেরা নৃত্যশিল্পী তারা বালগোপাল বর্তমানে দিল্লির রাজৌরি গার্ডেনের বাসিন্দা। জন্মসূত্রে 'মাদ্রাজি'। নেহরু-গান্ধী পরিবারের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। একাধিক প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ১৯৬০ সালে বিশেষ অতিথি হিসেবে নৃত্য পরিবেশনা করেছিলেন সংসদে। '৬২ সালে তারা বালগোপালকে সম্মান জানাতে ভারত সরকার তার নামে ডাকটিকিট ইস্যু করে। কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থা দেখলে জীবনের উজ্জ্বল অতীতটা একলহমায় ফিকে হয়ে যায়। ভাবতেও অবাক লাগে, ইনিই প্রথম ভারতীয় শিক্ষক যার তত্ত্বাবধানে অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স চালু করে।
রাজৌরি গার্ডেনের একটি ছোট ঘরে কোনও রকমে দিন গুজরান। যাকে বলে চরম দারিদ্র। দিল্লি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিসেবে কাজ করলেও, অবসর গ্রহণের পর থেকে এখনও পর্যন্ত তারা বালগোপালকে অবসরকালীন ভাতা দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। তা নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। তারা বালগোপালের মতো 'রত্ন' সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য, তারা বালগোপালের যাবতীয় ফাইল নাকি তারা হারিয়ে ফেলেছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখার। ৮০ বছরের বৃদ্ধা সেই আশাতেই দিন গুনছেন।
ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থাগুলিরও পাত্তা দেয় না। এই প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে লড়তে লড়তে তিনি ক্লান্ত। তাই তারার কাতর আবেদন, দেশের নাম উজ্জ্বলে তার অবদানের জন্য অন্তত ভারত সরকার তাঁকে সাহায্যে করুক। যাতে শেষ ক'টা বছর দু'বেলা পেট ভরে খাওয়া যায়।-এই সময়
০৫ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/