মারুফ কিবরিয়া: আমার স্বপ্ন আকাশছোঁয়ার। নিজেকে ভালো একটি অবস্থানে দেখতে চাই। এমন কিছু করতে চাই যা শুধু আমার জন্য নয়। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণ হয়। এমনটাই বলছিলেন প্রজন্মের জনপ্রিয় উপস্থাপক আফরিন অথৈ। টিভি সেটের সামনে বসলে যাকে প্রায়ই দেখা যায় একজন উপস্থাপক হিসাবে। মিডিয়ায় কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন আফরিন।
শৈশবেই বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। তখন নতুন কুঁড়ির শিল্পী ছিলেন। শুধু তাই নয়, পুরস্কারও অর্জন করেছেন বেশকিছু। সেসময় লোকসংগীত, দেশের গান, ছড়া গান ও একক নাটকÑএই চার বিভাগের জন্য নতুন কুঁড়ি থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন আফরিন। ছোটবেলা থেকে মিডিয়ায় কাজ করলেও মাঝে পড়াশোনার জন্য বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। এরপর শিক্ষাজীবনে অনার্স লেভেলে প্রবেশের পর রেডিও সার্কেল নামের একটি অনলাইন রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে আবারও সরব হন আফরিন। সেখানে বেশিদিন কাজ না করলেও পরে চ্যানেল আইয়ে যোগ দিয়ে টিভি মাধ্যমে নিয়মিত হন। তবে সেখানে মার্কেটিং বিভাগে কাজ করেন প্রথম প্রথম। বেশ কিছুদিন ওই বিভাগে কাজের পর চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর উপস্থাপনায় সুযোগ করে দেন আফরিনকে। মূলত এখানেই তার ক্যারিয়ারের বড় পরিবর্তন আসে। নান্দনিক উপস্থাপনাশৈলী দিয়ে এরইমধ্যে দর্শক নজর কেড়েছেন আফরিন। চ্যানেল আইয়ের ‘তারকা কথন’ ও ‘গানে গানে সকাল শুরু’ এই দুই অনুষ্ঠানে প্রায়ই তাকে উপস্থাপক হিসেবে দেখা যায়। নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে আফরিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছা ছিল। সে ইচ্ছার পথ ধরে গান, অভিনয়ের সঙ্গে তখনই সম্পৃক্ত হয়ে যাই। নতুন কুঁড়ি থেকে পুরস্কার পেয়েছিলাম তখন। আমার এখনো মনে পড়ে, সেই পুরস্কার নিতে আমার সঙ্গে পরিবারের ২৫ জন সদস্য গিয়েছিলেন। পড়াশোনার জন্য মাঝে লম্বা বিরতি দিয়েছিলাম। এরপর আবারো মিডিয়ায় যোগ দিয়েছি। চ্যানেল আই আমাকে সেই প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছে। বিশেষ করে ফরিদুর রেজা সাগর স্যারের কথাই বলছি। আমার ক্যারিয়ারের নতুন এ মাত্রা যোগ হওয়াটা তারই অবদান। চ্যানেল আইয়ের এই দুই অনুষ্ঠান ছাড়া বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে উপস্থাপনার কাজ করেন আফরিন। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হই হুল্লোড়’ এবং ‘গান চিরদিন’ অনুষ্ঠান দুটির কাজও করছেন তিনি। উপস্থাপনার পাশাপাশি প্রযোজনায়ও আছেন এ পর্দাকন্যা। চ্যানেল আইয়ের নতুন অনুষ্ঠান ‘কথপোকথন’-এর প্রযোজনার কাজ করছেন তিনি। এই অনুষ্ঠানটি নিয়ে বেশ আশাবাদী আফরিন। তিনি বলেন, প্রোডাকশনের কাজ করার ইচ্ছা আমার আগেই ছিল। তবে এটা একটু কঠিনই বলা চলে। ‘কথপোকথন’-এর কাজটি করতে গিয়ে তেমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। অবশ্য আমি বেশ আশাবাদী। রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় শৈশব থেকে বেড়ে উঠেছেন আফরিন। বাড্ডা আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে মাধ্যমিক ও রামপুরা একরামুন্নেসা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। এরপর ঢাকা সিটি কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স শেষ করেন। পরিবারে দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। মূলত বাবা-মা দুজনের অনুপ্রেরণায় মিডিয়ায় কাজ করছেন আফরিন। তার আজকের অবস্থানে আসার পেছনে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আফরিন বলেন, আমার নিজের ইচ্ছা আর বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণাতেই আমি আজকের আফরিন হতে পেরেছি। কাজের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এসেছি। উপস্থাপনার কল্যাণে কর্মস্থলের বাইরে গেলে অনেক প্রশংসা পান আফরিন। বিশেষ করে বাড্ডায় যখন বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তিনিই থাকেন। আফরিন বলেন, বাড্ডায় বাবার বাড়িতে গেলে সবাই বলেন, ও তো আমাদেরই মেয়ে। উপস্থাপনা করে। খুবই ভালো। অনেক দোয়া পাই সবার কাছ থেকে। এমন অবস্থায় নিজের কাছেই খুব ভালো লাগে। বছর দেড়েক আগেই বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন আফরিন। তার স্বামী রাসেল শিকদার একজন বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাতা। উপস্থাপনায় কাজ করলেও মার্কেটিং নিয়ে বেশ আগ্রহ আফরিনের। এই জায়গাটিতে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চান তিনি। শুধু তাই নয়, দেশের কল্যাণেও কাজ করার ইচ্ছা আফরিনের। এমন প্রত্যাশার কথাই ব্যক্ত করেছেন তিনি। আফরিন বলেন, আমি মিডিয়ায় কাজের পাশাপাশি মার্কেটিংয়ে কাজ করতে চাই। কারণ ওটা আমার আরেকটি বিশেষ দুর্বলতা। কাজটির মাধ্যমে ব্যক্তিগত কিছু করার পাশাপাশি দেশের কল্যাণেও অবদান রাখতে চাই। সেজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।-এমজমিন
০৭ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এইচএস/কেএস