শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:২৪:৫১

ঘুমপ্রিয় ভাবনা না ভ্রমণপ্রিয় ভাবনা?

ঘুমপ্রিয় ভাবনা না ভ্রমণপ্রিয় ভাবনা?

বিনোদন ডেস্ক : ঘুমপ্রিয় ভাবনা না ভ্রমণ প্রিয় ভাবনা? প্রশ্নটা আসতেই পারে মডেল অভিনেত্রী ভাবনার ক্ষেত্রে। সম্প্রতি তিনি গিয়েছিলেন সিঙ্গপুরে। বেশ কয়েকদিন ঘুরে বেড়িয়েছেন।

ঢাকার পর যদি কোনো শহর বেছে নিতে হয় তবে আমি সিঙ্গাপুরকে বেছে নেব। কারণ সিঙ্গাপুর আমার প্রিয় শহর। ভালো লাগার অনেক কারণ আছে, অন্যতম কারণ হলো, দেশটা দেখতে পরিষ্কার। মানুষগুলোকে দেখলে মনে হয় প্রচুর পরিশ্রমী এবং পরোপকারী।

বলতে গেলে, বছরে দুবার যাওয়া পড়ে সেখানে। এবার গিয়েছিলাম ২৯ জুলাই বাংলাদেশ বিমানে। প্রতিবার ওখানকার প্যান প্যাসিফিক হোটেলে উঠলেও এবার উঠেছিলাম ফেয়ারমন্টে। হোটেলটি ১৯৮৬ সালে তৈরি হয়েছিল বলে বেশ পুরনো, কিন্তু এর ভেতরটা খুব সুন্দর। এ হোটেলের ভেতরে একটি আর্ট গ্যালারি রয়েছে।

এর আগে প্যান প্যাসিফিক হোটেলে আমি যে ঘরে থাকতাম, সেখান থেকে ক্রাঞ্জি ওয়ার মেমোরিয়াল নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ দেখা যায়। ওটা মূলত তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যারা শহীদ হয়েছিলেন, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। বেশ লম্বাটে সাদা স্তম্ভটি দেখে আমার ভীষণ ঈর্ষা হতো। কেননা এত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যে, তখন আমার দেশের শহীদ মিনারের কথাই মনে হতো। যা-ই হোক, এবার ফিরে আসি ফেয়ারমন্ট হোটেলে। সকালে হোটেলের ভেতরেই নাস্তা করি, এক কথায় দুর্দান্ত নাশতা।

তবে অধিকাংশ দিনই আমার নাশতা খেতে মিস হয়ে যায় ঘুমের জন্য। দেশের বাইরে কোথাও গেলে আমার ঘুমাতে খুব ভালো লাগে। অবশ্য ভালো লাগার পেছনে একটি কারণ আছে। সাদাশুভ্র বিছানায় ঘুমাতে আমার খুব ভালো লাগে।

সিঙ্গাপুরে আমার পরিচিত এক ড্রাইভার আছেন; নাম রজার। প্রতিবার গেলেই আমি তার গাড়িতে ঘুরে বেড়াই। সিঙ্গাপুরে যেখানে সেখানে ট্যাক্সি পাওয়া যায় না। হোটেল থেকে হেঁটে অনেক দূর যাওয়ার পর ট্যাক্সির দেখা মেলে। যেহেতু রজার আমার পরিচিত ট্যাক্সি ড্রাইভার, সেহেতু আমার সে ঝক্কি পোহাতে হয় না। সিঙ্গাপুরে পৌঁছে আমি প্রথমেই যেখানে ঘুরতে যাই, সেটা হলো মেরিনা বে রিভার সাইড।

জায়গাটি আমার ভীষণ প্রিয়। অনেক সময় নিয়ে সেখানে বসে থাকতে বেশ ভালো লাগে। আর খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গাটি হলো ইস্ট কোস্ট পার্কে অবস্থিত জাম্বো রেস্টুরেন্ট। সেখানে কত রকমের যে সি ফুড পাওয়া যায়, তার ইয়ত্তা নেই।

এছাড়া সেখানে এক ধরনের মজার নারকেলের জুসও পাওয়া যায়; অসাধারণ স্বাদ। সিঙ্গাপুরের একটা ব্যাপার আমার খুব ভালো লাগে। সেখানে কেউ যেখানে সেখানে ধূমপান করে না। এমনকি বেশির ভাগ হোটেলে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ। সিঙ্গাপুর ঝকঝকে পরিষ্কার শহর। সেখানে ঘুরতে ভালো লাগার এটিও একটি কারণ হতে পারে।

তবে আরেকটি ব্যাপার না বললেই নয়, সিঙ্গাপুর শপিংয়ের জন্য বেশ ভালো। আমার প্রিয় সব ব্র্যান্ডের দোকান আছে এখানে। তাই যে ক’দিনই থাকি না কেন প্রতিদিন শপিং করি। মেরিনা বে মল, প্যারাগন, তাকাসিমায়াসহ কত যে শপিং মল! মেরিনা বে শপিং মলের ভেতরে খালের মতো একটি জায়গা আছে, সেখানে কাঠের বোটে চড়ার সুবিধা আছে। সেখানে গেলেই প্রতিবার বোটে ঘুরে বেড়াই।

সিঙ্গাপুরে প্রায় ৫০ বছর বয়সের এক নারী গয়নার ডিজাইনারের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে, নাম এমি নেস। অবশ্য তাকে দেখলে ২০ বছরের তরুণীই মনে হয়। প্রতিবার সেখানে গেলে তার গয়নার দোকান থেকে কিছু না কিছু কিনিই।

এবারের ভ্রমণের একটি মজার ঘটনা বলে শেষ করছি। তা হলো, এবার আমার জন্মদিনের আগের দিন সকালে সেখানে পৌঁছি। কিছুটা মন খারাপ লাগছিল এটা ভেবে যে, কেউ এবার কেক কেটে আমাকে সারপ্রাইস দেবে না।

যা-ই হোক, ঠিক রাত ১২টা ১ মিনিটে হোটেলের পক্ষ থেকে কেক আর ফুল পাঠানো হলো। আমি সত্যিকার অর্থে প্রচণ্ড অবাক হয়েছিলাম সেদিন। তবে ভালো লেগেছে এটি ভেবে যে, আমার প্রিয় শহরে জন্মদিনের একটি স্মৃতি থাকল।
১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে