মুজাহিদ সামিউল্লাহ : এক সময়ের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষ দীর্ঘদিন কলকাতায় বসবাস করছেন। এই লম্বা সময়ে তিনি বাংলাদেশের কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেননি। এক্ষেত্রে নিজেকে আড়ালেই রেখেছেন। কিন্তু চলতি বছর মার্চ মাসে সে আড়াল ভেঙে তিনি কলকাতায় সল্ট লেকের বাসায় দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।
গতকাল অঞ্জু টেলিফোনে কলকাতা থেকে আলাপ করেন এবং বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমি আপনাদের কাছে এমন কি অপরাধ করেছি যে কারণে আমাকে নিয়ে দেশের কিছু মিডিয়ায় মিথ্যা-বানোয়াট খবর প্রকাশ হয়েছে। আমি তো এখন আর রূপালী জগতে নেই। আর আমার ইচ্ছেও নেই এর সঙ্গে আবার সম্পৃক্ত হওয়ার। বেলায় বেলায় বয়স তো আর কম হলো না। একজন অভিনেত্রীর জীবনে সুখ-দুঃখ থাকতেই পারে। আমরা তো দেবতা নই। দেশের কিছু মিডিয়া যাচ্ছে তাই ভাবে মনগড়া কল্পকাহিনী আমাকে নিয়ে ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, যা সত্যি নিন্দনীয়। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের একটি আঞ্চলিক পত্রিকার প্রতিবেদনে আমাকে ১৪টি বিয়ে দেয়া হয়েছে। যা সত্যি লজ্জাকর। কিছুদিন আগে আমার ছোট বোনের বর বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন। উনি আমাকে ওই কাগজটা এনে দিয়ে বলেছেন, দিদি দেখেন আপনাকে নিয়ে এরা কি প্রতিবেদন ছেপেছে। আমি প্রতিবেদনটা পড়ে সত্যিই ভাবনায় পড়ে গেলাম। এতদিন যে অভিনয় করলাম একি তার প্রতিদান? আমি তো এই সময় আড়াল থেকে কাউকে অনুরোধ করিনি অঞ্জুকে নিয়ে আপনারা কিছু প্রচার করুন।
তিনি বলতে থাকেন, বাংলাদেশের একটি মেয়ে তখনকার সময় কলকাতার সিনেমা ভুবনে জাঁদরেল অভিনেতা-অভিনেত্রীর মাঝে জায়গা তৈরি করা চাট্টিখানি কথা নয়। যা আপনাদের মেয়ে এই সামান্য অঞ্জু করে দেখিয়েছে। এবং সেটা সম্মানের সঙ্গে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য। আমার সাফল্যে তো বাংলাদেশি ভাইবোনদের আনন্দিত হওয়ার কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয় চিত্র ঠিক তার উল্টো। মনে হচ্ছে আজ এই সময়ে এসে আমার সাফল্য ম্লান হয়ে গেছে। ভারতে অসংখ্য সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছি আমি। এ সম্মান কি আপনাদের নয়?
অঞ্জু ঘোষ বলেন, আমিও তো পরিবারের সদস্যদের মাঝেই বসবাস করি। যেখানে বড় ছোট সদস্য আছে। এই সময়ে এসে এসব বিষয় নিয়ে বিড়ম্বনা সত্যিই লজ্জাকর। আমি শুনলাম কিছুদিন আগে বাংলাদেশে চাউর হয় আমি নাকি ঢাকায়। এমনকি শ্যামলীতে অবস্থান করছি সেটাও বলা হয়! বাংলাদেশে এসে লুকোচুরি করবো কেন আমি? আমার জন্মস্থান বাংলাদেশ। আমার গর্ব আমি বাংলাদেশের মেয়ে। হয়তো কর্মের খাতিরে সময়ের চাহিদায় আজ আমার অবস্থান কলকাতায়।
তিনি শেষ করে এই বলে, নাড়ির টানকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। তাহলে তার অস্তিত্বই থাকে না। আমি আমার মিডিয়ার ভাইবোনদের প্রতি হাত জোড় অনুরোধ করবো আমাকে নিয়ে কিছুই প্রচার করার দরকার নেই। আমার দর্শকবৃন্দের দোয়ায় আমি অনেক ভালো রয়েছি। আপনাদের ঋণ কোনোদিন শোধ হওয়ার নয়। আপনাদের সবার ভালোবাসায় আজীবন সিক্ত থাকতে চাই। এমজমিন
২৮ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি