বিনোদন ডেস্ক : ৬৫ হাজার প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে ক্ষুদে গানরাজ পঞ্চম আসরের চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়ে নিলো গাইবান্ধার মেয়ে নুজহাত সাবিহা পুস্পিতা।
দীর্ঘ সাতমাস অক্লান্ত পরিশ্রমের পর চূড়ান্ত লড়াইয়ে সাত প্রতিযোগী থেকে বুষ্টার এনার্জী বিস্কুট-চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজ পঞ্চম আসরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন।
জমকালো আয়োজনের এক অন্যরকম সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে গতকাল টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে মন মাতানো পারফরম্যান্স, দর্শকদের এসএমএস ভোট আর বিচারকদের রায়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট জয় করে নেয় এই প্রতিযোগী।
পুরস্কার হিসেবে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ঝলমলে মুকুটের পাশাপাশি তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে পুরস্কারের অর্থমূল্য নগদ পাঁচ লাখ টাকার চেক। সেই সঙ্গে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ বছরের জন্য শিক্ষাবৃত্তি, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল-এর সৌজন্যে স্কুলজীবন পর্যন্ত ফ্রি চিকিৎসা সেবা সনদ।
চ্যাম্পিয়নের মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন রুনা লায়লা। চ্যাম্পিয়নের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লি. ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, গ্লোব বিস্কুট এন্ড ডেইরি মিল্ক লি. এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ।
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছে রায়া শারমিলা ইসলাম রাফতি (বগুড়া)। পুরস্কার হিসেবে তাকে দেয়া হয় তিন লাখ টাকা। দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে মাহফুজ আহমেদ মাহিন (ময়মনসিংহ)। তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নগদ ২ লাখ টাকা। তারাও পেয়েছে শিক্ষাবৃত্তি ও চিকিৎসা সেবার সুযোগ।
তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লি.ও চ্যানেল আইয়ের পরিচালক আবদুর রশীদ মজুমদার, জহিুর উদ্দিন মাহমুদ মামুন ও মুকিত মজুমদার বাবু এবং প্রতিযোগিতার প্রধান দুই বিচারক ফেরদৌস আরা ও এসআই টুটুল।
এ মহাউৎসবেই সংগীত জীবনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চ্যানেল আই সম্মাননা জানায় উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লাকে। তাকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, প্রধান দুই বিচারক ফেরদৌস আরা ও এসআই টুটুল। সেই সঙ্গে এবারই দেশে প্রথম চালু হলো কোনো রিয়েলিটি শোতে বিশিষ্টজনকে সম্মাননা জানানোর প্রথা।
সম্মাননা হাতে নিয়ে রুনা লায়লা বলেন, গানে বয়স ৫০ হয়েছে। কিন্তু আমার বয়স ৩০। সকলের দোয়া থাকলে ৩০-ই থাকতে চাই। আপনাদের আনন্দ দেবার জন্য আমরা গান, নাচ, অভিনয় করি।
দেশের বিশিষ্টজনদের উদ্দেশ্যে রুনা লায়লা বলেন, অসুস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ান, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন তাদের উন্নয়নের জন্য। রুনা লায়লার গাওয়া তিনটি গানের মিশ্রনে তার সম্মানে অনুষ্ঠানে বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করেন অপি করিম।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ঢোল, তবলা ও বেহালার কম্পোজিশনে সুরের মুর্ছনার মধ্য দিয়ে। এরপর সাধনা একাডেমীর অনবদ্য কোরিওগ্রাফিতে একটি দলগত নাচ মহাউৎসবে উপস্থিত অতিথি ও চ্যানেল আইর দর্শকরা উপভোগ করেন।
এরপর লালন, হাসন রাজা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান পরিবেশন করতে মঞ্চে আসে চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজের বিগত চার আসরের ঝুমা, প্রান্তি, মালিহা, পায়েল ও হৃদ্য।
মহাউৎসবে ছিলো এবারের সেরা সাত প্রতিযোগীর কন্ঠে কোরাস ও একক পরিবেশনা। ছিলো ওয়াসেকের কোরিওগ্রাফিতে সেরা নাচিয়ে ইভানা ও তার দলের জুলেখা বাদশার মেয়ে নিয়ে সাজানো নৃত্যনাট্য।
আরও ছিলো রয়-এর কোরিওগ্রাফিতে গত দুই আসরের সেরা নাচিয়েদের পারফরমেন্স, তানজিলের কোরিওগ্রাফিতে মেহজাবিন ও চিত্রনায়ক বাপ্পির সিনডেরেলা নাচ এবং বিশেষ আকর্ষণ ছিলো প্রতিযোগীদের একক গান পরিবেশনের আগে নকুল কুমার বিশ্বাসের ছন্দময়ী আগমনী গান।
সবশেষে পৃথিবীজুড়ে শিশু নির্যাতন বন্ধের আহবান জানাতে মহাউৎসবের ৭ প্রাতিযোগীকে নিয়ে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা পরিবেশন করেন সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলেই... গানটি।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সিজিল মির্জা ও জেবা আনিকা। পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন ইজাজ খান স্বপন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে চ্যানেল আই।
এবারের ক্ষুদে গানরাজের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলো বুস্টার এনার্জি বিস্কুট। প্রতিযোগিতার পার্টনার ছিলো- পারসোনা, ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল, রেডিও ভুমি এফ এম ৯২.৮, আনন্দ আলো ও সাপ্তাহিক।
১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন