বিনোদন ডেস্ক: রোমান্টিক জুটি কিংবা কাজের জায়গায় পার্টনার। ছবিতে তাঁদের একসঙ্গে দেখলে কে বলবে, বোঝাপড়ার এতটুকু অভাব রয়েছে! কিন্তু আদতে ব্যাপারটা তা নয় মোটেই। হলিউডে এমন অনেক তারকা রয়েছেন, যাঁরা একসঙ্গে অভিনয়টা তো করেছেন। কিন্তু কাজের সময় একে অপরকে পছন্দ করে উঠতে পারেননি।
হ্যারিসন ফোর্ড-জশ হার্টনেট: জশ জানিয়েছিলেন, ‘হলিউড হোমিসাইড’ ছবিতে হ্যারিসন ফোর্ডের সঙ্গে অভিনয় করাটা তাঁর কাছে খুবই দুঃসহ ছিল! ছবিতে দু’জনেই মুখ্য চরিত্রে। জশের বয়ান, ‘‘অনেক সময়ই এমন হতো, যে আমাদের হয়তো একসঙ্গে কোনও দৃশ্যের শ্যুটিং করার কথা। কিন্তু আমরা একঘণ্টা ধরে গাড়িতেই বসে রয়েছি। কেউ কারও সঙ্গে কথা না বলে!’’ শ্যুটিংয়ের সময় পারলে একে অপরের দিকে তাকাতেনও না তাঁরা। দু’জনেই একে অপরকে গালমন্দ করেছেন। কিন্তু এত কষ্ট করে বানানো ছবিটা শেষমেশ চলেইনি!
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও-ক্লেয়ার ডেন্স: ‘রোমিও প্লাস জুলিয়েট’ ছবির প্রেমিক-প্রেমিকা জুটির মধ্যে স্বাভাবিক বন্ধুত্বের সম্পর্কটুকুই তৈরি হয়নি। একে অপরের হাবভাব ঘোরতর অপছন্দ করতেন তাঁরা। লিও তখন ছিলেন হালকা মেজাজের মানুষের। সেট’এ সকলের পিছনে লাগতেন। ক্লেয়ারের সেটা মোটেই ভাল লাগত না। তাঁর মনে হতো, লিও’র বয়সই বেড়েছে শুধু। বুদ্ধি পাকেনি।
লিও আবার উল্টোটা ভাবতেন। ক্লেয়ারকে তাঁর বড্ড নাকউঁচু লাগত। ‘রোমিও প্লাস জুলিয়েট’এর ১৫ বছর পরে ‘জে এডগার’ ছবিতে আবার লিওনার্দো-ক্লেয়ার একসঙ্গে কাজের সুযোগ পান। লিওনার্দোর সেক্রেটারির ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য অডিশনও দিয়েছিলেন ক্লেয়ার। কিন্তু শেষমেশ কাজটা করেননি।
নিক নোলটি-জুলিয়া রবার্টস: ‘আই লাভ ট্রাব্ল’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন দু’জনে। কিন্তু পারস্পরিক অপছন্দ এতটাই ছিল, যে তাঁদের দৃশ্যগুলো আলাদা আলাদা শ্যুট করতে হতো! সেই অপছন্দের জের গড়িয়েছিল ছবির পরেও। এক সাক্ষাৎকারে জুলিয়া জানিয়েছিলেন, নিক ‘অসম্ভব বিরক্তিকর’। নিকও থেমে থাকেননি। বলেছিলেন, ‘‘কাউকে বিরক্তিকর বলাটা খুব ভাল কাজ নয়। তবে উনিও যে খুব ভাল মানুষ নন, সে কথা তো সকলেই জানেন!’’ অনেক বছর পর এক শো’এ জুলিয়া এক প্রাক্তন সহ-অভিনেতার ‘টেম্পার ট্যানট্রাম’ নকল করে দেখিয়েছিলেন। পরে জানা গিয়েছিল, সেই অভিনেতা আসলে নিক!
রায়ান গসলিং-রেচেল ম্যাকঅ্যাডাম্স: ছবিতে তাঁরা প্রেম করেন। ঝগড়া করেন। প্রেম ভাঙেন, আবার জোড়েন। কিন্তু ‘দ্য নোটবুক’এর শ্যুটিংয়ের সময় রায়ান গসলিং আর রেচেল ম্যাকঅ্যাডাম্সের মধ্যে ঝগড়াটাই হতো কেবল! পরে যেটা ফাঁস করেছিলেন ছবির পরিচালক নিক ক্যাসাভিটিস। সেট’এ নাকি একটা দিনের জন্যও একে অপরকে সহ্য করে উঠতে পারেননি রায়ান-রেচেল। প্রায়ই ঝগড়া করতেন।
একদিন তো রায়ান পরিচালককে সরাসরি অনুরোধ করেছিলেন, রেচেলের বদলে অন্য কোনও অভিনেত্রীকে নিতে! বেচারা নিক নাকি থেরাপিরও বন্দোবস্ত করেছিলেন দু’জনের জন্য! ছবির পরে যদিও ঝগড়া ভুলে প্রেমটা করার চেষ্টায় ছিলেন রায়ান-রেচেল। মাঝে মাঝে একে অপরকে ডেট করেছেন। কিন্তু সে সম্পর্কও টেকেনি।
পিয়ার্স ব্রসনান-টেরি হ্যাচার: বন্ড-মুভি ‘টুমরো নেভার ডাইজ’এ টেরি হ্যাচারের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো বিরক্ত হতেন পিয়ার্স ব্রসনান। কারণ, টেরি নাকি তাঁকে সেট’এ বহুক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে রাখতেন। ‘‘সে সময় ওকে কিছু কথা বলে ফেলেছি, যেগুলো খুব শ্রুতিমধুর ছিল না,’’ পরে বলেছিলেন পিয়ার্স। টেরি যে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শ্যুটিং করেছেন, মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েন— সেসব কথা জানার পরেও পিয়ার্সের মন গলেনি। উল্টে পরে যখন তাঁর কাছে টেরির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়, বলেছিলেন, ‘‘আশা করি, মা হওয়ার পর অন্তত টেরি কিছুটা মনুষ্যত্ব শিখেছে!’’- এবেলা
১৫ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ