মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৯:৪০:৩১

যে সব ঘটনায় বছরজুড়ে বলিউডে তোলপাড়

যে সব ঘটনায় বছরজুড়ে বলিউডে তোলপাড়

বিনোদন ডেস্ক : নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে নরেন্দ্র মোদী শেষ মুহূর্তে বাজিটা মেরে গেলেন। না হলে গোটা বছর বলিউডই খবরের শিরোনামে ছিল। সেন্সর বোর্ড কর্তা পহলাজ নিহালনি আছেন। বেফাঁস মন্তব্য করার জন্য সলমন খান তো আছেনই। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা ভারতীয় সেনা পাকশিল্পীদের কাজ করা নিয়ে আপত্তি জানাল না, কয়েকটি রাজনৈতিক দলই শুধু নিজেদের মতো হুক্কাহুয়া করে গেল! সুতরাং খোরাক কম নেই...

সেন্সরের সেন্স কই?
স্রেফ নামের জন্য একটা ছবির মুক্তি বাতিল করে দিতে বসেছিল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন। ‘উড়তা পঞ্জাব’ থেকে পঞ্জাব বাদ দিতে হবে। গোটা পঞ্জাব ড্রাগের শিকার তো কী? ছবিতে ও সব দেখানো চলবে না। ছবির অন্যতম প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ সেন্সরের ‘ভণ্ডামি’ নিয়ে তুমুল লড়াই করেছিলেন। শেষমেশ বম্বে হাইকোর্ট সেন্সরকে দাবড়ানি দিলে, পহলাজ নিহালনি ক্ষান্ত দেন! তবে সুযোগ পেলে ক্ষমতাও জারি করেন বইকী! ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’এ রণবীর কপূর আর ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কাঁচি করে দিলেন। ভারতীয় জনতার সংস্কারের দায় নিহালনির একার কাঁধেই কিনা!  

প্রেম কী বুঝিনি
কঙ্গনা রানাউত আর হৃতিক রোশনের মধ্যে কি আদৌ প্রেম ছিল? দু’জনেই বোধহয় জবাবটা দিতে গিয়ে ঘেঁটে যাবেন। তা বলে প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা করতে পিছু হটেননি তাঁরা। ব্যক্তিগত সম্পর্ককে এভাবে খোলা বাজারে আগে অন্তত কোনও সেলিব্রিটি নিয়ে আসেননি!

ভাই-জান
দুই খান নাকি এখন জিগরি দোস্ত! একে অপরের ছবির প্রচার করেন। শাহরুখের ছবি কবে মুক্তি পাবে, সেই দিনটা সলমনই ঠিক করে দেন। সেটা একদিক থেকে ভালই। নইলে শাহরুখকে তো ভাইজানের চাপে ‘রইস’এর মুক্তিও পিছিয়ে দিতে হয়েছিল। নিন্দকেরা বলে, শাহরুখ জানতেন ‘সুলতান’এর সামনে টিকতে পারবেন না। সে যাই হোক দু’জনের বন্ধুত্বটা যে জমে উঠেছে, সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে।

পাক অভিযান
উরি হামলার পর দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল পাকশিল্পীদের নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে। এর মধ্যে অন্যতম মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা এবং বজরঙ্গ দল। ইম্পা (ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন) থেকেও পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে কাজ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই গেরোয় ফেঁসে যায় কর্ণ জোহরের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’। যেখানে ফওয়াদ খান অভিনয় করেছিলেন। এমএনএস ছবির মুক্তির শর্ত দেয়, ভারতীয় সেনার তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা দিলে ছবি মুক্তি পাবে। উল্টোদিকে সেনা কর্তৃপক্ষ কাউকে চাপ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিরোধী। সিরিয়াস বিষয়টা শেষ পর্যন্ত হাসির খোরাকে পরিণত হয়!

বিয়িং ইনহিউম্যান
সলমন খান যতই মুখে বিয়িং হিউম্যানের বুলি কপচান না কেন, ধর্ষণ বিতর্কের পর তাঁর হিউম্যানিটি নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ জাগবে! ‘সুলতান’এর শ্যুটিংয়ের সময় কুস্তি করতে গিয়ে তাঁকে এতটাই পরিশ্রম করতে হয়েছিল, যে দিনের শেষে নিজেকে তাঁর ধর্ষিতার মতো মনে হচ্ছিল! সলমনের এই মন্তব্যের পর সারা দেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। সেলিম খান ছেলের হয়ে ক্ষমা চান। সলমন যদিও সেসবের ধার ধারেননি। দরকারই বা কী? যতই লোকে নিন্দে করুক, ‘সুলতান’ দেখতে হল ভরে গিয়েছিল। সলমন ফের প্রমাণ করেছিলেন, তিনি যা-ই করুন, বক্স অফিস তাঁর দখলেই থাকবে।

বৈদেশিক যোগাযোগ
বলিউড ছেড়ে দুই নায়িকা গোটা বছরটা হলিউডেই কাটিয়ে দিলেন। প্রিয়ঙ্কা চোপড়া এবং দীপিকা পাড়ুকোন। প্রথমজন ‘কোয়ান্টিকো’র দ্বিতীয় সিজন করলেন এবং ‘বেওয়াচ’ ছবির শ্যুটিং করলেন। দীপিকাও কম যান না। তিনি ‘এক্স এক্স এক্স: দ্য রিটার্ন অফ জ্যান্ডার কেজ’এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হাঁকালেন! গোটা বছরই দুই নায়িকার বলিউডে কোনও ছবিই মুক্তি পায়নি। প্রিয়ঙ্কার ‘জয় গঙ্গাজল’ ছাড়া। তার উপর দীপিকা আবার ইরানিয়ান পরিচালক মাজিদ মাজিদির ছবিও করে ফেলেছেন।

কোল্ড প্লে (ফাউল প্লে)
ব্রিটিশ পপব্যান্ড ভারতে পারফর্ম করতে এসে যেন ঝড় বইয়ে দিল! তাদের সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করলেন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, আলিয়া ভট্ট, বিদ্যা বালনেরা। ক্রিস মার্টিন মঞ্চে এ আর রহমানের সুরে বন্দে মাতরম ধরলেন। ব্যস, শো হিট হতে আর কী চাই! তবে ক্ষীরের মধ্যে একটু হলেও চোনা রয়েছে। বছরের শুরুর দিকে ‘কোল্ড প্লে’র মিউজিক ভিডিও ‘হিম ফর দ্য উইকএন্ড’এ সোনম কপূর আছেন বলে বেজায় হইচই হয়েছিল। তারপর দেখা গেল সোনম কয়েক সেকেন্ডের জন্যই রয়েছেন। ব্যস, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল শুরু! এমনটা সোনম ভারতীয় বলেই কি?

কমেডি থেকে ট্র্যাজেডি
সেলেবদের কমেডি শো’য়ের মঞ্চে ডেকে এনে ‘রোস্ট’ করার প্রথাটা এমনিতে মজাদার হতে পারে, কিন্তু কখনও সখনও বিপত্তিও বাধে। যেমন ‘পার্চ়ড’ ছবির প্রচারের জন্য ‘কমেডি নাইট্‌স বাঁচাও’এ এসেছিলেন তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়। শো’য়ের সঞ্চালক কৃষ্ণ অভিষেক সমানে তন্নিষ্ঠাকে তাঁর গায়ের রং নিয়ে উল্টোপাল্টা বলতে থাকেন। তন্নিষ্ঠা শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে শো ছেড়ে চলে যান। একইভাবে ‘রোস্ট’এর শিকার হন জন আব্রাহাম। ‘পাপ’ ছবিতে কাজ করা নিয়ে ক্রমাগত মজা করতে থাকেন কৃষ্ণ। বিরক্ত জন শো থেকে বেরিয়ে যান। পরপর দু’টো ঘটনার কারণে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান থেকে রোস্টের পর্বটা বাদ দেন।

তৈমুর শর্ট
জন্মানোর আগেই সে সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছিল। আর জন্মানোর পর তো তাকে নিয়ে ট্রোলিংও শুরু হয়ে গেল। সেফ আলি খান আর করিনা কপূরের সন্তানের নাম কেন তৈমুর রাখা হল, তা নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে তোলপাড় চলল। সদ্যোজাতকে নিয়ে এভাবে ট্রোলিং বোধহয় এই প্রথম। কর্ণ জোহর আর ঋষি কপূর চরম প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। করিনার সঙ্গে ছোট্ট তৈমুরের জাল ছবিও বাজার সরগরম রেখেছিল! -এবেলা।
২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে