বিনোদন ডেস্ক : স্টারকাস্ট, বিশাল বাজেটের পরও এবছর তীরে এসেই তরী ডোবাল বছরের যে ছবিগুলো...
রক অন টু
প্রথম ছবি ছিল ‘পিওর ম্যাজিক’। চিত্রনাট্য, মিউজিক, অভিনয়, গল্প বলা— সবই মন ছুঁয়ে গিয়েছিল দর্শকের। সিক্যুয়েল নিয়ে প্রত্যাশা থাকাটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে পুরনো কাস্টের অনেকেই যখন ফিরছিলেন। ফারহান আখতারও এতদিনে নিজস্ব ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করে আশা দেখিয়েছিলেন মানুষকে। কিন্তু সিক্যুয়েলের ম্যাজিক চলল কই! চিত্রনাট্যে ফাঁক থেকে গেল বিস্তর। গল্পে লজিক খুঁজে পাওয়া গেল না! ব্যান্ড ভেঙে বড্ড ফারহান-নির্ভর হয়ে গেল ছবির প্রতিটা ফ্রেম। এমনকী, ছবির মেরুদণ্ড মিউজিকও ছাপ ফেলতে পারল না।
আজহার
স্পোর্টস বায়োপিক নিয়ে ইদানীং দারুণ উৎসাহ দর্শকের। আর যদি সেটা ভারতীয় ক্রিকেট টিমের কোনও ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্বের গল্প হয়, তাহলে তো কথাই নেই। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের গল্পে পাক্কা মসালা ফিল্মের উপাদান যে মজুত আছে, তা সকলেই জানতেন। ‘ডার্টি পিকচার’এর পর থেকে ইমরান হাশমির অভিনয় নিয়েও কারও সন্দেহ ছিল না। তাই ছবি নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা ছিলই। কিন্তু ছবিটা হতাশ করল। ছবিটা অনেকটা আজহারের ফ্যান বয়ের ট্রিবিউট বলেই মনে হয়। তাই তাঁর জীবনের বেশ কিছু অধ্যায় ধরা পড়ে না চিত্রনাট্যে। একই জিনিস ‘এম এস ধোনি: দি আনটোল্ড স্টোরি’র ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও সেটা ক্লিক করে যায়। ‘আজহার’এর ভাগ্যে হয়তো সেটা ছিল না।
মহেঞ্জো দরো
আশুতোষ গোয়ারিকর আর হৃতিক রোশনের হিট জুটি। তার উপর ঐতিহাসিক ছবি। ‘জোধা আকবর’এর মতোই একটা গ্র্যান্ড ছবি আশা করেছিলেন দর্শক। কিন্তু ট্রেলার বেরনোর পর থেকেই ভুল ভ্রান্তি নিয়ে ইন্টারনেটে যা ট্রোলিং শুরু হল, তাতেই ছবির অর্ধেক বাজার খেয়ে নিল। ছবি মুক্তি পেতেই ইতিহাসবিদরা তথ্যগত ঠিক-ভুল নিয়ে বিচার করতে বসলেন। নিন্দকেরা পূজা হেগড়ে আর হৃতিকের জোলো রসায়নের কথা বললেন। এমনকী, রহমানের মিউজিকও যেন কানে বাজল না। যাঁরা ছবিটা দেখলেন, তাঁরাও হিরোকে বাদ দিয়ে উড়ন্ত কুমিরেরই বেশি তারিফ করলেন! তাই কিছুদিনের মধ্যেই হল থেকে বিদায় নিতে হল আশুতোষ গোয়ারিকরের ম্যাগনাম ওপাসকে।
জয় গঙ্গাজল
প্রকাশ ঝা’র আসল ঝাঁঝ টের পাওয়া গিয়েছিল ‘গঙ্গাজল’ দিয়েই। সেই সময় অতটা ‘হার্ড হিটিং’ ছবি দেখে নড়ে বসেছিলেন দর্শক। তাই সিক্যুয়েল নিয়ে কৌতূহল ভালই ছিল। যদিও পরিচালকের শেষ কিছু ছবি তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে অনেকেই আঁচ করেছিলেন, ‘জয় গঙ্গাজল’ তেমন জোরালো হবে না। মুক্তি পেতে সেটা আরও পরিষ্কার হয়ে গেল। ‘কোয়ান্টিকো’র সাফল্যের পর প্রিয়ঙ্কা চোপড়া যে পুলিশের চরিত্রে ফাটিয়ে দেবেন, তা আশা করেছিলেন ভক্তেরা। কিন্তু আলগা চিত্রনাট্যের কারণে সেই দিকটাও তেমন জুতের হল না।
মিরজিয়া
রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার নামের সঙ্গেই একটা হেভিওয়েট প্রত্যাশা জুড়ে গিয়েছে। ‘রং দে বসন্তী’ আর ‘ভাগ মিলখা ভাগ’এর পর দর্শক আরও একটা সিনেম্যাটিক ওয়ান্ডারের আশা করেছিলেন। তবে হল’এ গিয়ে দেখলেন, শুধু সেটুকুই রয়েছে ছবিতে। প্রতিটা ফ্রেম যেমন সুন্দর, ছবির গল্প ততটাই ঘাঁটা। অনেকগুলো সূত্র যেন মিলল না। মূল জুটি হর্ষবর্ধন কপূর আর সইয়ামি খেরের রসায়নও জমল না। হর্ষবর্ধন তা-ও আই ক্যান্ডি হিসেবে নাম করে গেলেন। সইয়ামির ব্যক্তিত্ব বা অভিনয় কোনওটাই দর্শকের মন দাগ কাটতে পারল না। হল থেকে খুব তাড়াতাড়ি হারিয়ে গেল ‘মিরজিয়া’।
ওয়াজির
অমিতাভ বচ্চন। ফারহান আখতার। বিজয় নাম্বিয়ার। কোনও ছবি নিয়ে কৌতূহল তৈরি করার জন্য এই তিনটে নামই যথেষ্ট। পাওয়ার প্যাক্ড কাস্ট। তার উপর থ্রিলারের উত্তেজনা। ছবির প্রচারও হয়েছিল বেশ অন্যভাবে। টিজার ট্রেলারগুলো বেশ উৎসুক করেছিল দর্শককে। কিন্তু থ্রিলার হিসেবে একেবারেই দাগ কাটতে পারেনি ‘ওয়াজির’। প্লট এতই প্রেডিক্টেব্ল হয়ে যায় যে ‘কী হয় কী হয়’ অনুভূতিটাই ছিল না। ছবিটা এমনিতে মন্দ নয়। কিন্তু যতটা প্রত্যাশা ছিল, ততটা মিটল না হলফেরত দর্শকের। ফলে ছবিও ফ্লপ। -এবেলা।
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম