বিনোদন ডেস্ক: চিত্রপরিচালক মৃণাল সেনের স্ত্রী অভিনেত্রী গীতা সেন আর নেই। মাসখানেক আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় তাঁর। এরপর ছিলেন হাসপাতালে। বাড়িতে আসার পরও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। ছিলেন কোমাতেই। সোমবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ এই অভিনেত্রী। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
একদিন আগে ছেলে কুণাল মার্কিন মুলুক থেকে ফিরে আসেন। শেষ মুহূর্তে ছেলে ছিলেন মায়ের পাশেই। প্রবীণ মৃণাল সেন বয়সজনিত কারণে কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। এদিন প্রয়াত গীতা সেনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন মাধবী মুখোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ, মমতাশঙ্কর, অঞ্জন দত্ত প্রমুখ। কেওড়াতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ছোটবেলা থেকেই নাচে-গানে পারদর্শী ছিলেন গীতা সেন। তখন অবশ্য তিনি ছিলেন ‘সোম’। থাকতেন উত্তরপাড়া ভদ্রকালীতে। বাবা দ্বিজেন্দ্রনাথ সোম ছিলেন স্বাধীনতা-সংগ্রামী। মায়ের নাম হাসি সোম। পিসতুতো দাদা ছিলেন অনুপ কুমার। ১৯৩০-এর ৩০ অক্টোবর তাঁর জন্ম। স্কুলের উঁচু ক্লাসের ছাত্রী যখন, তখনই অভিনয় করেন ‘দু ধারা’ ছবিতে। পারিবারিক সূত্রে যোগাযোগ হয়েছিল।
এই ছবির গল্পলেখকের নাম ছিল মৃণাল সেন। পরবর্তিকালে ১৯৫৩ সালে, যখন তাঁর বয়স ২৩, তখনই মৃণাল সেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর উৎসাহেই মৃণাল সেন চলচ্চিত্র পরিচালনায় আসেন ১৯৫৫ সালে। তৈরি করেন ‘রাতভোর’, যে–ছবিতে অভিনয় করেন উত্তমকুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। তখন অবশ্য উৎপল দত্তের সঙ্গে মিনার্ভায় চুটিয়ে অভিনয় করতেন গীতা সেন। ‘মার্চেন্ট অফ ভেনিস’এ তিনি জেসিকার চরিত্রে অভিনয় করেন। উৎপল দত্ত ও ঋত্বিক ঘটকের যৌথ পরিচালনায় ‘বিসর্জন’ নাটকে অপর্ণার চরিত্রে তাঁর অভিনয় প্রচুর প্রশংসা পায়।
মৃণাল সেনের ছবিতে তাঁর প্রথম অভিনয় ১৯৭২ সালে ‘কলকাতা ৭১’–এ। তার পর ‘একদিন প্রতিদিন’, ‘কোরাস’, ‘খারিজ’, ‘খণ্ডহর’, ‘মহাপৃথিবী’ ছবিতে গীতা সেনের অসামান্য অভিনয় মুগ্ধ করে দর্শকদের। তাঁর অভিনয়ের গভীরতার ছাপ আছে প্রতিটি ছবিতেই। বেছে ছবি করেছেন। নাটক থেকে সিনেমা, সব ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দিয়েছেন নিজস্বতাকেই। পাশে থেকেছেন মৃণাল সেনের। দাম্পত্যের ৬৪তম বছরে চলে গেলেন গীতা সেন। -আজকাল
১৭ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ