মিঠু হালদার: অভিনয়শিল্পী সিমলা, এক সময় তুমুল ব্যস্ত সময় কাটাতেন চলচ্চিত্র জগতে। কিন্তু সময় বদলে গিয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্টে গিয়েছে সিমলার ক্যারিয়ারের চিত্রপটও। ক্যারিয়ারের জৌলুশ সময় আগের মতো আর নেই। তারপরও আত্মপ্রত্যয়ী তিনি। ভালো কাজ দিয়ে দর্শকদের কাছে থাকতে চান। সে লক্ষ্যেই স্বপ্ন বুনে চলেছেন এখনও।
এক পর্যায়ে বিখ্যাত এই অভিনয়শিল্পী তো হারিয়েই গিয়েছিলেন ঢাকাই সিনেমার পর্দা থেকে। তবে ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ এবং ‘রূপগাওয়াল’ সিনেমা দুটির মাধ্যমে আবারও আলোচনায় এসেছিলেন।
প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এমন স্বল্প অভিনেত্রীর মধ্যে সিমলা অন্যতম। শহীদুল ইসলাম খোকনের পরিচালনায় ‘ম্যাডাম ফুলি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন ১৯৯৯ সালে। প্রথম ছবির এই সাফল্যে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি।
এর মধ্যে কেটে গেছে ঢের সময়। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল রুবেল আনুশ পরিচালিত ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ চলচ্চিত্রটির শুটিং। ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছবিটির শুটিং শেষের দিকে এসে নির্মাতার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সিমলা। সে নিয়ে তখন জল কম ঘোলা হয়নি!
ছবিটি নিয়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ছবিটির শুটিং শেষ করেছি। কিন্তু ডাবিং করিনি। ছবিটির নির্মাতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি বলেছি অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিং করিয়ে নিতে, এ নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। আর ছবিটিতে এমন কোনো দৃশ্যে অভিনয় করিনি যাতে সেন্সরবোর্ড ছবিটি আটকে দেয়। কিংবা আমার পরিবার বা দেশের সম্মানহানি ঘটে।’
অন্যদিকে সিমলা অভিনীত গত বছরে শুটিং শুরু করা ‘নাইওর’ নামে আরেকটি চলচ্চিত্রের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখানে সিমলার বিপরীতে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন। এ চলচ্চিত্রটির প্রযোজক একজন নারী। তিনি এ ছবিতে অভিনয়ও করছেন। প্রয়োজক বিবাহিত এবং সম্প্রতি তার একটি সন্তানও হয়েছে। তাই কাজটি শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এই চলচ্চিত্রটি নিয়েও বেশ আশাবাদী সিমলা।
‘ম্যাডাম ফুলি ২’ নামে আরেকটি ছবিতে অভিনয় করেত যাচ্ছেন এই অভিনয়শিল্পী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম ফুলি ২’ আসলে আমার ব্র্যান্ড নেম কিংবা ড্রিম প্রজেক্ট। এ কাজটি করতে সময় লাগবে। আমাদের চিত্রনাট্যের কাজ একটা সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে সেটি পুনরায় লেখা হচ্ছে।’
দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারে দর্শকদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাওয়ার কথা তা তিনি পেয়েছেন। ভবিষ্যতে কী ঘটবে, বিষয়টি তিনি সময়ের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে সিমলার ভাষায় বলতে গেলে, ‘ভবিষ্যতে যা হওয়ার হবে। অতীতে আমি যা করেছি তার কারণে আমার আফসোস হয় না। আমি ব্যক্তি সিমলাকে অনেক বেশি সম্মান করি। আমার বড় ড্রিম ছিল আমি ফিল্মের নায়িকা হবো এবং আমি তা হয়েছি। অনেক সম্মান পেয়েছি। এখনও দর্শকরা সিমলাকে নিয়ে যে কথা বলে, সেটাই আমার বড় পাওয়া। আমি যদি এই মুহুর্তে নি:শ্বাস ত্যাগ করি, তারপরও কোনো আফসোস থাকবে না।’
এদিকে সিমলাকে ঘিরে প্রেমের গুঞ্জন প্রায়শই ডালপালা মেলে ধরে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। কত মুখরোচক গল্পই না তিনি শোনেন তার কাছের মানুষদের থেকে। মাঝে মাঝে এক ধরনের বিব্রতও বোধ করেন।
কিন্তু সিমলা কী ভাবেন এ বিষয়ে? তিনি বলেন, ‘আমার কারও সাথে প্রেমের সম্পর্ক নেই। আমি এ ধরনের সম্পর্কে বিশ্বাসীও না। আমি যাকে ভালোবাসবো কিংবা আমার যাকে ভালোলাগবে সেটা আমার ভালোবাসার জায়গা। এটা তো একটা অনুভূতির জায়গা। সেটা আমার ভিতরে ছিল, থাকবে। দিনশেষে আমি তো মানুষ। আমার ভালোবাসাটা আমার মধ্যেই থাকুক, তা উন্মুক্ত করতে চাই না।’
জীবন ঘড়ির কাটায় সময় তো থেমে নেই, সে চলছে আপন গতিতে। দিনের একটা সময়ে গিয়ে সিমলাও তার বিয়ের বিষয়ে ভাবেন। কিন্তু কী? ‘মানুষ হিসেবে একটা বোধ আছে তো। বিয়ের বিষয়টা সম্পূর্ণ স্রষ্টার হাতে। আমি চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি চাইলেও করতে পারিনি। তার মানে আমার দ্বারা আপতত সম্ভব নয়। সৃষ্টিকর্তা যেদিন চাইবে সেদিন হবে। তবে ব্যাচেলর জীবনটাকে উপভোগ করছি। যে এই অনুভূতিটা উপভোগ করে সেই জানে। আর বিয়ের সময় তো এখনও ফুরিয়ে যায়নি। আমার চুলগুলো তো এখনও কালো। (হা হা হা)’ বললেন সিমলা।-প্রিয়.কম
সম্পাদনা: ফারজানা রিংকী/গোরা
২৬ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস