বিনোদন ডেস্ক : এককালে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন দেদার। এখন আর সেভাবে পরদায় দেখাই যায় না। ইন্ডাস্ট্রিতে পুরনো হওয়ার আগেই হারিয়ে যেতে বসেছেন, বলিউডে এমন মুখের অভাব নেই। ফিরে দেখা যাক এমনই কয়েকজনকে।
জেনেলিয়া ডি’সুজা
‘জানে তু ইয়া জানে না’র মিষ্টি অদিতি এখন দেশমুখ পরিবারের পাক্কা গৃহিণী। বিয়ের পর থেকে আর সেভাবে কাজ করতে দেখা যায়নি জেনেলিয়াকে। শুরুটা ভাল করলেও এখন যেন হারিয়েই গিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর সঙ্গে ডেবিউ করা ইমরান খানেরও একই দশা। জেনেলিয়ার শেষ ‘হিট’ বলতে রীতেশ দেশমুখের সঙ্গে ‘তেরে নাল লাভ হো গয়া’। ওই একই সময় বিয়ে হয় তাঁদের। সম্প্রতি ‘ফোর্স টু’তে একটা ছোট্ট ক্যামিও চরিত্রে দেখা গিয়েছে জেনেলিয়াকে। তার মাঝে অবশ্য আঞ্চলিক ভাষার ছবিতে মুখ দেখিয়েছিলেন অল্পবিস্তর। দুই সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর একবার বলেছিলেন, কাজে ফিরতে চান। রীতেশও স্ত্রীকে সমর্থন করেন যথাসম্ভব। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কামব্যাক আর হচ্ছে কই?
মাহি গিল
শক্তিশালী অভিনেত্রী। অনুরাগ কাশ্যপের ‘দেব ডি’তে পারোর চরিত্রে তাঁর অভিনয় দেখলে নিঃসংশয় হওয়া যায়, অভিনয়টা সত্যিই পারেন মাহি। তবে কেরিয়ারের পরের দিকে যেন ‘আইটেম গার্ল’ হিসেবেই বেশি পরিচিতি পেয়েছেন নায়িকা। তিগমাংশু ধুলিয়ার ‘সাহেব, বিবি অউর গ্যাংস্টার’এও ফাটিয়ে কাজ করেছিলেন মাহি। তবুও যেন ঠিক ‘ক্লিক’ করলেন না। ‘বুদ্ধ ইন আ ট্রাফিক জ্যাম’এর মতো বিতর্কিত ছবিতে কাজ করেছেন। পাশাপাশি ‘বুলেট রাজা’ বা ‘গ্যাং অফ ঘোস্টস’এর মতো ছবিও করতে হয়েছে মাহিকে। অভিনয়ের পরিসর পেলে চালিয়ে খেলার পক্ষপাতী তিনি। কিন্তু যথাযথ সুযোগ না পেয়েই হয়তো বলিউডের ম্যাপে আর দর্শকের স্মৃতিতে খানিক ফিকে হয়ে গিয়েছেন মাহি গিল।
প্রাচী দেশাই
টেলিভিশন ছেড়ে বড় পরদায় এসেছিলেন প্রাচী। প্রথম ব্রেকেই ফারহান আখতারের বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ! ‘রক অন’এর পর সদ্য কাজ করেছেন ‘রক অন টু’তেও। মাঝে উল্লেখযোগ্য কাজ বলতে ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বই’, ‘আজহার’ ইত্যাদি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতে পার্শ্বচরিত্র আর অপ্রধান চরিত্রের প্রস্তাবই যেন বেশি পেয়েছেন প্রাচী। একবার বলেছিলেন, নিজের ‘মিষ্টি মেয়ে’র ইমেজটা ভাঙতে চান। তাঁর অভিযোগ, বয়সের তুলনায় বেশ পরিণত চরিত্রেই অভিনয় করতে হয়েছে তাঁকে বারবার।
প্রাচীর পছন্দের জঁর রম-কম কিংবা মিউজিক্যাল। ‘‘আমার আসল বয়সটা জেনে অনেকেই অবাক হন। ফিল্মি পরিবার থেকে আসিনি। আমার ছবির পিছনে টাকা বা প্রভাব খাটানোর মতোও কেউ নেই। তাই প্রত্যেক দিনই লড়াই করতে হয়,’’ ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে মত প্রাচীর।
অভয় দেওল
ইমতিয়াজ আলি আর অভয় দেওল দু’জনেই শুরু করেছিলেন ‘সোচা না থা’ দিয়ে। ইমতিয়াজ এগিয়ে গেলেও অভয় দেওল খান-কুমারদের সঙ্গে বিশেষ যুঝে উঠতে পারেননি কোনওদিনই। অভয়ের অভিনয় প্রশ্নাতীত। কেরিয়ারে রয়েছে ‘দেব ডি’, ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’র মতো ছবিও। কিন্তু নামী ব্যানারের ‘আনুকূল্য’ জোটেনি তাঁর ভাগ্যে। তাই ঠিক ‘হিরো’ হওয়া হয়নি অভয়ের। বরং পার্শ্বচরিত্রেই নজর কেড়েছেন বেশি। ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অভয় ‘সিনিয়র’দের গোত্রেই পড়েন। গত বছর মুক্তি পেয়েছিল তাঁর ‘হ্যাপি ভাগ যায়েগি’। বক্স অফিস ফল মোটামুটি মন্দ নয়। এখন দু’-তিনটে ছবি হাতে রয়েছে অভয়ের। কিন্তু ‘হিট’ নায়ক হওয়ার দৌড় থেকে কবেই ছিটকে গিয়েছেন!
ইমরান খান
আমির মামুর ভাগ্নের কেরিয়ারে ব্যাকিংয়ের অভাব ছিল না। কিন্তু লঞ্চ করা ছাড়া ‘গডফাদার’ আমির খানও তেমন কিছু করে উঠতে পারেননি ইমরান খানের জন্য। ‘জানে তু ইয়া জানে না’ দিয়ে শুরু করে ‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’, ‘ব্রেক কে বাদ’, ‘মেরে ব্রাদার কি দুলহন’এর মতো হালকা চালের ছবিই বেশি করেছেন ইমরান। তবে ‘দিল্লি বেলি’ বা ‘মটরু কি বিজলি কা মন্ডোলা’র মতো ব্ল্যাক কমেডিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে অভিনীত তাঁর শেষ ছবি ‘কাট্টি বাট্টি’ বিশেষ চলেনি। তারপর থেকেই আর খবরে নেই ইমরান।
গ্রেসি সিংহ
টেলিভিশন দিয়ে শুরু। বলিউড ঘুরে সেই টেলিভিশনেই ফিরে এসেছেন গ্রেসি সিংহ। মাঝখানে মনে রাখার মতো হাতেগোনা দু’-তিনটে চরিত্র দিয়ে গিয়েছেন দর্শককে। যেগুলো তাঁকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছিলেন আশুতোষ গোয়ারিকর আর রাজকুমার হিরানির মতো পরিচালকেরা। বেশিরভাগ দর্শকেরই গ্রেসিকে মনে আছে ‘লগান’এর গৌরী আর ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’এ ডক্টর সুমন আস্থানা হিসেবে। ‘গঙ্গাজল’এও অজয় দেবগণের পাশে মনে রাখার মতো অভিনয় করেছিলেন। কেরিয়ারে ‘সুপারহিট’ থাকলেও বলিউডে বিশেষ সুবিধে করে উঠতে পারেননি গ্রেসি। পরের দিকে আঞ্চলিক ছবি করতেন। এখন হিন্দি ধারাবাহিকে সন্তোষী মায়ের ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। আর হিন্দি ফিল্মের কেরিয়ার প্রায় শেষ বললেই চলে। -এবেলা।
২৭ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম