রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭, ০১:৩৯:০৬

স্টার জলসা থেকে পরিবারকে বাঁচানোর উপায় এটাই

স্টার জলসা থেকে পরিবারকে বাঁচানোর উপায় এটাই

বিনোদন ডেস্ক: ভারতীয় সিরিয়ালের আগ্রাসনে দেশের মানুষ কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠছে তার প্রামণ কিছুদিন আগে হবিগঞ্জের বাসিন্দারা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে।

গত বুধবার সেখানকার ধল গ্রামে ‘কিরণমালা’ সিরিয়াল দেখা নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি, পরে তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। দু’পক্ষের এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়। সিরিয়াল নিয়ে বাংলাদেশির এমন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার খবর ফলাও করে প্রকাশ করে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমও।

স্টার জলসা, জি বাংলাসহ কলকাতার বেশির টিভি চ্যানেলগুলোতে সংসারের ঝগড়াঝাঁটি, পরকীয়া, পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক সিরিয়াল প্রতিদিন প্রচার করা হয়। পারিবারিক কাজকর্ম ফেলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসব সিরিয়াল প্রতিনিয়ত হজম করছে বাংলাদেশি দর্শক।

কেন এই সিরিয়ালগুলো হজম করছে দর্শকরা, কেনই বা সিরিয়াল দেখে সংঘাতের মত খারাপ কাজে লিপ্ত হচ্ছেন তারা এমন মহামারী সর্ম্পকে জানালেন মনোচিকিৎসক মনতাসির মারুফ।

তিনি বলেন, টেলিভিশন মিডিয়া সমাজে বিরাট ভূমিকা পালন করে। টেলিভিশনের নাটকগুলোকে সাধারণত দর্শকরা মডেলিং হিসেবে নেয়। সেখানে যা ঘটে বাস্তবজীবনে সেগুলো প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন।

আর সেজন্য সিরিয়ালে যখন প্রতিনিয়ত খুন, হত্যা, পারিবারিক সংঘাত দেখবে তখন মননে সেগুলোই কাজ করবে। বড়দের পাশাপাশি সিরিয়ালগুলো সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে বাচ্চাদের। কারণ একটি বাচ্চা যখন ছোটবেলা থেকে বন্ধুক ধরা শিখবে বড় হয়েই কিন্তু সে বন্ধুক চালানো পছন্দ করবে।

এমন মহামারী সিরিয়াল থেকে বের হয়ে আসার জন্য অবশ্য এ চিকিৎসক জানালেন পরিবারের ভূমিকার কথা।

তিনি বলেন, এই সংঘাতপূর্ণ সিরিয়াল দেখা বন্ধ করা একমাত্র উপায় পরিবার। পরিবারের যিনি প্রধান তিনি যদি পরিবারের জন্য কিছু অনুষ্ঠান নির্ধারণ করে দেন তাহলে কিছু হলেও কমবে। তাছাড়া মা-বাবাকে লক্ষ্য রাখতে হবে তাদের সন্তানরা ইন্টারনেট বা টেলিভিশনে ঠিক কি ধরনের অনুষ্ঠান দেখছে। পাশপাশি মা-বাবাকেও হুঁশিয়ার থাকা উচিত সন্তান বা পরিবারের সামনে তিনি ঠিক কি ধরনের অনুষ্ঠান দেখছেন বা কি দেখা উচিত।

দিন দিন শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে কিরণমালা, পটল কুমার গানওয়ালা’র মতো সংঘাতপূর্ণ এ সিরিয়াল। ভ্রাতৃত্ব ভুলে এসব সিরিয়ালের জন্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।

আর এসব ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে নড়েচড়ে বসেছেন দেশের সাংস্কৃতিক বোদ্ধারা। তারা মনে করছেন, এটা দেশের সংস্কৃতির ওপর বড় আঘাত। অচিরেই যদি এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে দেশিয় সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়বে। সাংসারিক সংঘাত বাড়বে, আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়বে, পরকীয়ার প্রকোপও বাড়বে।
২৯ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে