শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১০:৪৫:৩২

শ্রীদেবী আর রবিনার টক্কর, ‘মম’ এবং ‘মাতৃ’র রেসে কে এগিয়ে?

শ্রীদেবী আর রবিনার টক্কর, ‘মম’ এবং ‘মাতৃ’র রেসে কে এগিয়ে?

বিনোদন ডেস্ক: দুই ছবিরই কেন্দ্রে রয়েছে দুই মায়ের লড়াই। এবং একই সময়ে পরপর দু’টো ছবি কিছুটা কাছাকাছি থিমের উপর হওয়ার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন? এটা কি নিছক কাকতালীয়? নাকি সময়ের দাবি? নাকি বলিউডের চিরকালীন স্বভাব অনুযায়ী ট্রেন্ডে গা-ভাসানো? উত্তর সবক’টারই ইতিবাচক হতে পারে!

বলিউডে দু’টো ছবির ট্রেলার-টিজার মুক্তি পেল সম্প্রতি। শ্রীদেবীর ‘মম’ এবং রবিনা টন্ডনের ‘মাতৃ’ নিয়ে তারপর থেকে ক্রমাগত চলছে আলোচনা। শ্রীদেবী সেই ২০১২ সালের পর আবার পরদায় মুখ দেখাচ্ছেন। তা-ও এরকম একটা ডার্ক ছবিতে।

তাঁর আগের ছবি ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ অনেক লাইট-হার্টেড, ইমোশনাল। সেখান থেকে যে অভিনেত্রী ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, বোঝাই যাচ্ছে। নব্বইয়ের দশকের নায়িকা রবিনা টন্ডনও ‘কামব্যাক’টা জমিয়েই করছেন। একটা অপেক্ষাকৃত নতুন টিমের সঙ্গে এমন একটা বিষয় নিয়ে ছবি করছেন, যা নিয়ে সচেতনতা এই মুহূর্তে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।


দুই ছবিরই কেন্দ্রে রয়েছে দুই মায়ের লড়াই। এবং একই সময়ে পরপর দু’টো ছবি কিছুটা কাছাকাছি থিমের উপর হওয়ার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন? এটা কি নিছক কাকতালীয়? নাকি সময়ের দাবি? নাকি বলিউডের চিরকালীন স্বভাব অনুযায়ী ট্রেন্ডে গা-ভাসানো? উত্তর সবক’টারই ইতিবাচক হতে পারে! কারণ দুই ছবির নির্মাতাই দাবি করছেন, দু’টো ছবির প্লটলাইনে অন্তত কোনও মিল নেই।

‘মিল’এর প্রশ্ন আসছে, কারণ শ্রীদেবীর ‘মম’এর টিজার পোস্টার বেরনোর দিনকয়েক পরেই ‘মাতৃ’র ফার্স্ট লুক’এ দেখা যায়, ছবির ধাঁচ বেশ এক রকম! তুলনা চলেই আসে স্বাভাবিকভাবে। যদিও রবিনা বলেছেন, ‘‘মিলের কোনও ব্যাপারই নেই! শ্রীদেবী আমার সিনিয়র। ওঁর গ্রেটেস্ট ফ্যান আমি। ফলে আপনারা যে সাবোটাজের কথা ভাবছেন, তার কোনও ভিত্তি নেই। আমার তো রীতিমতো গর্ব হচ্ছে, যে সেই সময়টা এসে গিয়েছে যখন ইন্ডাস্ট্রিতে ‘পিঙ্ক’, ‘মাতৃ’ বা ‘মম’এর মতো ছবি পরপর হচ্ছে!’’

রবিনার কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সময়ের গুরুত্ব, ট্রেন্ড এবং কো-ইনসিডেন্স— সবক’টা কারণই রয়েছে এরকম দু’টো ছবি বানানোর পিছনে। ‘মাতৃ’র বিষয়টা এতদিনে সকলেই জানেন। মেয়ের ধর্ষণের বিরুদ্ধে মায়ের প্রতিবাদী লড়াই। পুলিশ-প্রশাসন সকলকে একা বুঝে নেওয়ার যুদ্ধ।

এবং সেটা যে নেহাত মসৃণ নয়, বরং বেশ ভায়োলেন্ট— ট্রেলারেই স্পষ্ট। অন্যদিকে ‘মম’এর প্লট যতদূর শোনা গিয়েছে, হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে খুঁজে পেতে এক মায়ের মরিয়া লড়াইয়ের গল্প দেখতে পাবেন দর্শক। ২০১৫ সালে কিছুটা এই ধরনেরই একটা ছবি মুক্তি পেয়েছিল— ‘জজ্‌বা’।

ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং ইরফান খান প্রধান দুই চরিত্রে। সেখানে ঐশ্বর্যা এক কিডন্যাপড মেয়ের মা। ছবি খুব একটা কামাল দেখাতে পারেনি যদিও। ঐশ্বর্যার আড়ষ্ট অভিনয়ই জল ঢেলে দিয়েছিল প্রজেক্টে। শ্রীদেবীর ইনস্টিংক্টিভ অভিনয় এই ছবিটাকে কতটা জীবন্ত করে তুলতে পারে, সেটাই দেখার! ‘ইংলিশ ভিংলিশ’কে ধরলে শ্রীদেবীর ট্র্যাক রেকর্ড জাদুময়! ‘মম’এ আবার নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির মতো অভিনেতা রয়েছেন, সম্পূর্ণ নতুন লুক’এ!

২০০৪ সালে ‘মাতৃ’র মতোই একটা ছবি করেছিলেন ‘রবিনা’। সেখানেও ১০ বছরের এক নাবালিকাকে চলন্ত ট্রেনে ধর্ষণ করে কিছু দুষ্কৃতী। অন্যায়ের বিচার চাওয়া নিয়ে বাকি গল্প। কেন এই বিষয়টা এত ভাবায় তাঁকে?

এই প্রসঙ্গে রবিনা বলছেন, ‘‘এখানেও কোনও তুলনার ব্যাপার নেই কিন্তু। আমার মনে হয়, ঠিক মেসেজটা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই ধরনের ছবি বছরে কম করে ছ’বার বানানো উচিত। যাতে লোকে সত্যিই জেগে ওঠে।’’

মিলের ব্যাপার না থাকলেও ‘স্পিরিট’এর দিক থেকে যে দু’টো ছবি এক— সেটা যে কেউ বুঝবেন। একটা প্রতিবাদী স্বরের সঙ্গে একজন এমন মানুষের মেলবন্ধন— যার কাছে সন্তান মানে সব বাধাকে তুচ্ছ করার হিম্মত! ২১ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে ‘মাতৃ’।

তার অবশ্য ঢের পরে মুক্তি পাবে ‘মম’। এবং প্রোডাকশনের দিক থেকে অন্তত এগিয়ে থাকবে ‘মম’ই। প্রযোজক বনি কপূর স্বয়ং। নওয়াজ ছাড়াও রয়েছেন অক্ষয় খন্না। ছবির সংগীত করেছেন এ আর রহমান। ফলে বাজেট এবং কাস্টের দিক থেকে দৌড়ে এগিয়ে ‘মম’ই।

কামব্যাক ফিল্মে রবিনা কিন্তু সেদিক থেকে ঝুঁকি নিয়ে ফেলেছেন একটা! ছবির পরিচালক তেমন পরিচিত কেউ নন, ব্যানারও নামগোত্রহীন। ছবিতে রবিনা ছাড়া আর যাঁরা আছেন— তাঁরাও তথাকথিত জনপ্রিয় কেউ নন। তা সত্ত্বেও ছবি নিয়ে সমান লড়াকু তিনি। হাজার হোক, ছবিকেও তো আর্টিস্টরা সন্তানই বলে থাকেন!-এবেলা
০৭ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে