এবার পাকিস্তানি শিল্পীদের পাশে বলিউড
বিনোদন ডেস্ক : ভারতের মিবসেনারা সম্প্রতি কঠোর মেনাভাব প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানি শিল্পীদের প্রতি। তারাও পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে আসতে দিবে না। এর ধারাবাহিকতায় মুম্বাইয়ে পাকিস্তানি গজল শিল্পী গুলাম আলীর অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছিল এ সংগঠনটি।
এ ছাড়া কয়েকদিন আগেই মুম্বইয়ে বিসিসিআইয়ের দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। তাদের বিক্ষোভের কারণে পিসিবি-র প্রধানের সঙ্গে বিসিসিআই সভাপতির বৈঠকটিও ভেস্তে যায়। বিক্ষোভের জেরে পাক আম্পায়ার আলিম দারকে মুম্বাইয়ে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ থেকে সরিয়েও নেওয়া হয়।
বলিউডে কাজ করছেন এমন পাকিস্তানি অভিনেতা বা সঙ্গীত শিল্পীদের কাজ দেয়া চলবে না- এমনই ঘোষণা দিয়েছে শিবসেনার চলচ্চিত্র শাখা চিত্রপট সেনা। বিশেষ করে তাদের আক্রমণের লক্ষ্য পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খান ও অভিনেত্রী মাহিরা খান।
চিত্রপট সেনার মহাসচিব অক্ষয় বরদাপুরকর বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মহারাষ্ট্রর মাটিতে পাক অভিনেতা, ক্রিকেটার বা শিল্পীদের পা রাখতে দেয়া হবে না। পাকিস্তানি অভিনেত্রীদের কারা চুক্তিবদ্ধ করছেন তা নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। করণ জোহর, ফারহান আখতার, শাহরুখ খানের মতো নাগরিকরা এজন্য দায়ি তাদের উচিৎ পাকিস্তানি অভিনয় শিল্পীদের চুক্তিবদ্ধ না করা।’
এ ছাড়া তিনি আরো জানান, রাইস সিনেমার নায়িকা মাহিরা ও ইয়ে দিল হ্যায় মুশকিল সিনেমার ফাওয়াদ খানকে মহারাষ্ট্রে সিনেমার প্রচার করতে দেয়া হবে না।
এ দিকে রাইস সিনেমার মধ্য দিয়ে বলিউডে অভিষেক হচ্ছে মাহিরা খানের। সিনেমাটিতে শাহরুখের বিপরীতে দেখা যাবে তাকে।
অন্যদিকে করণ জোহর পরিচালিত ইয়ে দিল হ্যায় মুশকিল সিনেমায় দেখা যাবে ফাওয়াদ খানকে।
কিন্তু শিবসেনারা যেভাবে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে তাতে করে মহারাষ্ট্রে সিনেমাটি মুক্তির সম্ভাবনা কতটুকু এটাই এখন আলোচ্য বিষয়। এমতাবস্থায় পাকিস্তানি শিল্পীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বলিউডের পরিচালক থেকে শুরু করে অভিনয় শিল্পীরাও।
বলিউডের খ্যাতিমান এ পরিচালক অনুরাগ বসু বলেছেন, ‘আমরা এ ঘটনার পেছনের কারণ বা এজেন্ডা কিছুই জানি না। এর আগেও বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তারা সে সময় কোথায় ছিল?’
তিনি আরো জানান, ‘ইন্ডিয়া এবং বলিউডের ভীত খুবই মজবুত, কেউ সেটিকে ভাঙতে পারবে না। যখন আমরা থিয়েটারে সিনেমা দেখতে যায় তখন চিন্তা করি না, আমাদের পাশে বসা ব্যক্তিটি হিন্দু না একজন পাকিস্তানি।’
বাজরাঙ্গি ভাইজান সিনেমার এ পরিচালক কবির খান বলেন, ‘আমি মনে করি শিল্পী এবং শিল্পকে রাজনীতির বাইরে রাখা দরকার। রাজনীতি যে জায়গায় আছে শিল্প তার চেয়ে অনেক উপরে অবস্থান করে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক অভিনয় শিল্পী এবং গায়ক রয়েছেন যারা পাকিস্তানি। তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের এ দেশে কাজ করতে দেওয়া উচিৎ।’
অভিনেতা ইমরান হাশমি বলেন, ‘সৃষ্টিশীল বিষয়গুলোতে কোনো বাধা থাকা ঠিক না। আমরা দেখছি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক তারকা কাজ করছেন এবং সেখানেও বাধা দেওয়া ঠিক নয়। সুষ্টিশীলতাকে রোধ করা উচিৎ নয়, সবাইকে বিকশিত হতে দেওয়া প্রয়োজন’।
অভিনেত্রী সোহা আলী খান বলেছেন, ‘একজন শিল্পী এবং এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমি এই সিদ্ধান্তকে ভুল মনে করছি। ইন্ডিয়া এমনবি বলিউড এজন্য নয়। সুতরাং, কিছু লেখক যেমন তাদের পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন, আমাদেরও তাই করা প্রয়োজন।’
২৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন
�