সোমবার, ২৬ জুন, ২০১৭, ০৭:৩০:৫৪

কুকুর, বিড়াল আর কচ্ছপের সঙ্গে নওশাবার ঈদ!

কুকুর, বিড়াল আর কচ্ছপের সঙ্গে নওশাবার ঈদ!

বিনোদন ডেস্ক: সেই কবে থেকেই মিডিয়ায় আছেন তিনি। কিন্তু নিয়মিত দেখা যায় না। অবশ্য গত কয়েক বছরে নিয়মিত হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে বিরতির কারণটা হলো- এককথায় বিরক্তি। নিজেই খোলাসা করলেন, 'জানেন, একটা চরিত্রে অভিনয়ের পর আমার কাছে ওই একই ধাঁচের কাজের প্রস্তাব আসতে থাকে।

এটা আমার একদমই ভালো লাগে না। এখন একটা চরিত্রে অভিনয় করবো, তো পরেরবার ভিন্ন কিছু চাই। কিন্তু তা সহসা মেলে না। তাই অনেক প্রস্তাবই ফিরিয়ে দিতে হয়। ' তবে যেসব কাজ করেছেন, সবটাতেই ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন নওশাবা আহমেদ।  

এই যেমন তার সাম্প্রতিক মিউজিক ভিডিও'র কথাই বলা যাক। এর আগে অবশ্য আরেকটিতে কাজ করেছেন। নতুনটার কথা বলার আগে আগেরটার গল্প বলতে হবে। মিউজিক ভিডিও নিয়ে কখনো আগ্রহ পেতেন না নওশাবা। 'সব কেমন যেন, একই ধাঁচের গল্প বলে মনে হতো', কিছুটা আক্ষেপের সুরেই বললেন শিল্পী।

কিন্তু একটা ভিন্ন গল্পের স্বাদ পেলেন শাহরিয়ার পুলকের প্রস্তাব থেকে। বেলাল খান আর পূজার গাওয়া 'অবুঝ পাখি' সত্যিকার অর্থেই তার মন কেড়ে নিলো। বললেন, 'তখন সুন্দরবন নিয়ে দারুণ হইচই চলছে। সেখানেই গোটা গানের শুটিং। কাহিনীও অন্যরকম। তাই আগ্রহী হলাম।

বিশ্বাস করবেন না যে, পুরা গানের কাজ মাত্র একদিনের মধ্যে শেষ করে জাদু দেখালেন পুলক ভাই।' ওই মিউজিক  ভিডিও'তে ব্যাপক প্রশংসিত হলেন তিনি। 'অবুঝ পাখি'-তে পেশাদার সাংবাদিক হিসাবে দেখা যায় নওশাবাকে। যিনি সুন্দরবনের এক দুষ্টচক্র নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে ওই দলেরই একজনের প্রেমে পড়ে যান।  

ফোনটা কেটে গেলো তুমুল কথা মাঝেই। আবার ফোন দিয়ে বাকি কথার শুরু। বললেন নতুন মিউজিক ভিডিও'র কথা।

'ওই কাজটার পর থেকে একই ঘরানার চরিত্রের প্রস্তাব আসতে থাকলো'। তাই তার আগ্রহটা বিরক্তিতে রূপ নিলো। তবে একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠলেন এবারের ঈদের মিউজিক ভিডিও'তে। সৈকত রেজার পরিচালনায় জীবন্ত হলো এমন এক চরিত্র, যেটাকে 'অবুঝ পাখি'র ঠিক যেন বিপরীত চরিত্র বলা যায়।

সেই মারদাঙ্গা সাংবাদিক হয়ে উঠলেন এক নরম-কোমল স্বভাবের মেয়ে। এই মিউজিক ভিডিও'তে ভারতের আকাশ সেন গান গাইলেন। লিরিকস স্নেহাশিষ ঘোষের। এমন ভিন্ন আমেজ না থাকলে আর কাজ করতে মন চায় না তার।

চারুকলার পড়ার সুবাদে শিল্প বিষয়টাকে গভীরভাবে ধারণ করতে শিখেছেন নওশাবা। মাটির সঙ্গে মিশেছেন। অভিনয়কে কখনোই পুরোদমে পেশা হিসাবে নিতে পারেননি। তবে এটা যে নেশা, তা বেশ বুঝেছেন।  

সেই ২০০৩ সালে 'সিসিমপুর' দিয়ে শুরু। এ কাজটাকে একাবারে আত্মায় মিশিয়ে নেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ছেদ। আবারো শুরু। কিছু সময় বাদেই ২০০৯ সালের দিকে ঘটে গেলো দুর্ঘটনা। বাথরুমে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের ব্যাপক চোট পেলেন। ইন্ডিয়ায় চিকিৎসা নিতে চলে গেলেন। ক্যারিয়ারের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।

কিন্তু অপারেশনের পর তিন মাসের মাথায় সিনেমার প্রস্তাব আসলো। মাথাচাড়া দিলো সেই নেশা। অমিত আশরাফের 'উধাও' ছবির শুটিংয়ে ঠিকই নিজেকে গুছিয়ে হাজির করলেন নওশাবা। 'ওই ছবির বাজেট কম। পারিশ্রমীক বলতে কিছুই নেই। তবুও গল্পের জন্য আর অভিনয়ের সহজাত নেশার উসকানিতেই শুরু করলাম', সরল স্বীকারোক্তি তার।  

যাইহোক, অনেক কথা হলো। তো ঈদে কী করছেন? এবার তার হাসির পালা। ঈদ বলতে যে কর্মকাণ্ড চোখের সামসে ভাসে তার ধারকাছেই নেই তিনি। বাসায় কেউ নেই। বাবা-মা ইন্দোনেশিয়া বেড়াতে গেছেন।

পরিবারের অন্যরা বাইরে। 'ঘুরতেও যাই না, সাজিও না। ' তাই পুরনো পোশাকে একাই বাসায় তিনি। অবশ্য পুরোপুরি একা নন। 'কুকুর, বিড়াল আর কচ্ছপটাকে নিয়ে ঈদ কাটাচ্ছি'। এদের নিয়ে ঈদটা ভালোই কাটছে।  

ও, আর একটা কাজ করে মনটা ফুরফুরে রয়েছে তার। গ্রামের এমন অনেক শিশু আছে যারা কোনদিন ঢাকা নামের জায়গাকে চোখে দেখার স্বপ্নও দেখে না। এমন ৬টি শিশুকে নিজ খরচে ঢাকায় এনে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-বেড়িয়েছেন। মনটা তাই খুবই ভালো নওশাবার।  
২৬ জুন ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে