মঙ্গলবার, ০১ আগস্ট, ২০১৭, ০৮:৫০:৩৪

বদলে যাওয়া চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের গল্প

বদলে যাওয়া চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের গল্প

রুদ্র হক : বদলে গেছেন অনন্ত জলিল। নিজেকে টম ক্রুজের সঙ্গে তুলনা করা এ নায়ক বেশ-ভূষায় আচরণে আর আগের মতো নেই। কিন্তু কি করে নিজেকে এমন আমূল বদলালেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ আলোচিত নায়ক? জানালেন তার ব্যক্তিগত সহকারি কায়সার আহমেদ বাবু।

প্রতিদিন ভোরে ঘুম ভেঙেই নামাজ পড়ছেন অনন্ত জলিল। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, আর সময় পেলেই হাদিসের বই অনন্তর হাতে, গাড়িতেও যাত্রাপথে পড়ছেন ইসলামী বই। অফিসের কাজের বিরতিতে কুরআনও পড়ছেন। আর সুযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন ধানমন্ডি ৩২ এর তাকওয়া মসজিদে। এ মসজিদের খতিব মাওলানা উসামার সঙ্গে গত একবছর ধরেই সময় দিচ্ছেন অনন্ত জলিল।

গত ২৯ জুলাই থেকে টানা তিনদিনের জন্য এ মসজিদে তাবলীগে জামাতে অংশ নিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও ইসলামি পোশাকে প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করেছেন তিনি। প্রকাশ করেছেন মসজিদের ভেতর তারা নানা কর্মকাণ্ড। গত ২৯ জুলাই তিনি তাকওয়া মসজিদে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান। দুপুরের খাবার থেকে শুরু করে রাতের আহারও সারেন শিশুদের সঙ্গেই। এমন একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।

কিন্তু কেন এই পরিবর্তন?

অনন্ত জলিলের ব্যক্তিগত সহকারি কায়সার আহমেদ বাবু বললেন, “বিগত দেড় বছর ধরেই ওনার মধ্যে এ ধরণের চেষ্টা দেখেছি আমরা। মূলত, গত ছয়মাস ধরেই তার মধ্যে আমরা ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। মূলত হজ্ব থেকে ফেরার পরই। তিনি এখন যেটা করছেন তা হলো, ব্যবসার পাশাপাশি মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেয়া, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এখন তিনি ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের ইমামের তত্বাবধানে আছেন। সর্বশেষ গত তিনদিনও তিনি তাবলীগে ছিলেন।”

ঢাকাই চলচ্চিত্র যখন দর্শক খরায় ভুগছিলো তখন অনন্ত জলিল নতুনত্বের চমক আর ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে হলমুখী করেছিলেন দর্শকদের। শাকিব খান ছাড়া যখন ঢালিউড অচল তখন হঠাৎ আবির্ভাব ঘটে অনন্তর। একের পর এক আলোচিত ও সমালোচিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও নির্মাণ করে তিনি দর্শকের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছান।

২০১০ থেকে এ পর্যন্ত চারটি চলচ্চিত্রের প্রযোজনা ও দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন অনন্ত। সবকটিতেই নায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। নিজেকে টমক্রুজের প্রতিদ্বন্দ্বীও ঘোষণা করেন এ নায়ক। তবে কি সাধের চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নেবেন অনন্ত? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ভক্তদের মনে।

অনন্তর মুখপাত্র বাবু বললেন, “তার মানে এই নয়, তিনি চলচ্চিত্র ছেড়ে দেবেন। উনি আসলে যে ধরণের মুভিগুলো করেন তার মধ্যে কোনো না কোনো মেসেজ থাকে, পরের ছবিতেও তাই থাকছে। আগামী বছর আমরা আমাদের পরের ছবিটা শুরু করবো, এটাই এখন ওনার প্ল্যান।”

“তার প্রতিজ্ঞা ব্যবসায়ী হিসেবে চিত্রনায়ক হিসেবে তার যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি তা দিয়েই তিনি ইসলাম প্রচারে ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে মানুষের জন্য ভূমিকা রাখবেন।” যোগ করেন বাবু।

তিনি জানান, কিছুদিনের মধ্যেই সাতদিনের জন্য ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দেশ ঘুরবেন অনন্ত জলিল। তবে, দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। পেশাগত জীবনে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত ৩টি এতিমখানা নির্মাণ করেছেন।

মিরপুর ১০ এ বাইতুল আমান হাউজিং ও সাভার মধুমতি মডেল টাউনে আছে এতিমখানাগুলো। এ ছাড়াও সাভারের হেমায়েতপুরের ধল্লা গ্রামে সাড়ে ২৮ বিঘার উপর একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন অনন্ত জলিল। তিনি ঢাকার হেমায়েতপুরে অবস্থিত বায়তুস শাহ জামে মসজিদের নির্মাণকাজেও অবদান রাখেন। সূত্র : গ্লিটজ
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে