বিনোদন ডেস্ক: অনেক ‘প্রথম’কে সঙ্গী করে জীবন কাটাতে হয়। নিতে হয় অভিজ্ঞতা। তারকাদের জীবনেও এমন প্রথম অভিজ্ঞতা রয়েছে। নায়িকা নিপুণের এমন প্রথম পাঁচটি অভিজ্ঞতা এই আয়োজন
নিপুণ প্রথম ক্যামেরার সামনে
২০০৬ সালে জীবনে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা হয়। আমার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল আমার রত্ন গর্ভা মা। এম এ আওয়াল পরিচালিত এই ছবিতে আমার নায়ক ছিলেন রুবেল। এর আগে কোনো দিন ছোটপর্দায়ও অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ছিল না। প্রথমেই এত বড় পরিসরে শুটিং করতে গিয়ে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। প্রম্পট শুনে শুনে সংলাপ বলতে গিয়ে বারবার তালগোল পাকিয়ে ফেলছিলাম। যদিও সেই ছবিটি পরে আর মুক্তি পায়নি।
প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি
সে এক অন্য রকম অনুভূতি। আমার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা পিতার আসন। ছবি মুক্তির আগে পুরো শহরে এর পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল। রাস্তাঘাটে, সর্বত্র আমার নিজের ছবি দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল। সিনেমা মুক্তির আগের দিন আমি গাড়িতে করে নানা এলাকায় ঘুরে ঘুরে ছবির পোস্টার দেখেছিলাম। আর মুক্তির পর বড় পর্দায় নিজেকে দেখে তো রীতিমতো অবাক। নিজেকে রুপালি পর্দায় দেখতে একটু নার্ভাসও লাগছিল। অভিনয় ঠিকঠাক হয়েছে কি না, সেই চিন্তাও মাথায় ঘুরছিল তখন। এ বিষয়টির সঙ্গে অভ্যস্ত হতে আমার প্রায় এক বছর সময় লেগেছে।
প্রথম পুরস্কার
নিজেকে আমি খুব সৌভাগ্যবতী মনে করি। কারণ, আমার জীবনের প্রথম পুরস্কারটিই হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সাজঘর সিনেমার জন্য ২০০৭ সালে আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। সত্যি কথা বলতে আমি তখন এই সম্মানসূচক পুরস্কার নেওয়ার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। প্রস্তুত ছিলাম না এই অর্থে, তখন আমি কেবল কাজ শুরু করেছি। পুরস্কারের আশাও করিনি। প্রথমে খবরটা পাওয়ার পরে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরদিন সব পত্রপত্রিকায় নিজের নাম দেখে নিশ্চিত হয়েছিলাম। লাল জামদানি শাড়ি পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমার প্রথম জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেছিলাম। জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে সেই স্মৃতি।
প্রথম দেওয়া উপহার
আমি রাশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। প্রথম সেমিস্টার শেষ হওয়ার পর ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে এসেছিলাম। সেবারই প্রথম আমার বাবার জন্য এক জোড়া সুন্দর জুতা উপহার হিসেবে নিয়ে আসি। এটা বলছি ১৯৯৯ সালের কথা। তখন হাতে গোনা কয়েকটি ব্র্যান্ডের জুতা বাংলাদেশে পাওয়া যেত। আমার নিজের আবার জুতার ভীষণ শখ। তাই চেয়েছিলাম আমার বাবাকেও বিদেশের ফ্যাশনেবল এক জোড়া জুতা পরাব। সেটি বাবা বেশ পছন্দও করেছিলেন।
প্রথম প্রেম
প্রেম করার সুযোগই তো পাইনি। প্রেমের আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তম সেমিস্টারে থাকতে আমার বিয়ে হয়ে যায়। আর তা ছাড়া আমার বাবা তো সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। তাই এলাকার কেউ তাঁর ভয়ে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার সাহস পেতেন না। তবে একটা মজার স্মৃতি পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারি। ১৯৯১ সালের ঘটনা। বাবা সে সময় বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমি সেখানকার একটি স্কুলের ক্লাস সিক্সে পড়ি। শাবনাজ-নাঈম অভিনীত চাঁদনি তখন ব্যাপক আলোচিত একটি ছবি। আর ছবির নায়িকা শাবনাজও তখন সুপারহিট। স্কুলের অনেক ছাত্র আমার চেহারার সঙ্গে শাবনাজের তুলনা করত। কিন্তু কেউ সামনে বলার সাহস পেত না বলে স্কুলের দেয়ালে লিখে রেখে যেত। হা হা হা...।
অনুলিখন: নাদিয়া মাহমুদ
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস