মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:২৯:০৪

‘বিয়ের দিনেও বিচ্ছেদের সুর’

‘বিয়ের দিনেও বিচ্ছেদের সুর’

বিনোদন ডেস্ক : বিচ্ছেদ জেনেও কেন বিয়ে করছেন লরা- এর উত্তর জানা না গেলেও নববিবাহিত বর-কনের মুখে হাসি।  লরার পরনে দুধসাদা গাউন। মাথায় সাদা ওড়না।  মুখোমুখি বসে স্টিভেন।  তিনিও বিয়ের পোশাকে।  কিন্তু চোখে বিচ্ছেদের জল।

দু’জনের বন্ধুত্ব সেই স্কুল-জীবনের।  পরে সেই সম্পর্ক পরিণতি পায় প্রেমে। ২০১৩ থেকে দু’জনে ‘লিভ-ইন’ শুরু করেন।  চলে আসে মেয়ে লিডিয়াও।  সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল।  কিন্তু তারা আনুষ্ঠানিক বিয়ের পরিকল্পনাটা করে উঠতে পারছিলেন না কিছুতেই।

অনেক খরচ।  তাছাড়া বিয়ের আগে নিজেদের একটা বাড়িও চাই।  ভাড়া বাড়ির খরচ টানা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।  তাই ঠিক করেছিলেন বছর তিনেকের মধ্যে মাথার ওপর ছাদ একটা তৈরি করবেনই।  কিন্তু সময়টাই যে হঠাৎ নাটকীয়ভাবে ‘ভিলেন’ হয়ে উঠল।

তিন বছর! আর তিন মাসও অপেক্ষা করা সম্ভব হলো না।  কান্না ভেজা গলায় বললেন লরা।  কেন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন স্টিভেন।  তাকে হাসপাতালে নিয়ে ধরা পড়ল লিভার ক্যানসার।  চূড়ান্ত পর্যায়ের।  হাতে আর সময় বলতে মেরেকেটে তিন মাস।

খরচ বাঁচাতে এতদিনে একবারই বেড়াতে গিয়েছি।  একটু একটু করে অর্থ জমিয়েছিলাম।  কোনো প্রাসাদ নয়, থাকার মতো একটা বাড়ি হলেই হবে। তারপরই গাঁটছড়া বাঁধব দু’জনে।  কিন্তু এমন কিছুর জন্য একেবারে প্রস্তুত ছিলাম না, বললেন লরা।

ক্যানসারের ধাক্কাটা সামলাতেই বেশ খানিকটা সময় লেগেছিল দু’জনের।  তবু এ সত্যি না মেনে উপায় কী? তারপরই ঠিক করেন বিয়েটা করবেনই। স্টিভেনের কথায়, না হলে জীবনটা অপূর্ণই থেকে যেত।  কিন্তু সাধ থাকলেও তো সাধ্য নেই।

এ সময় কিছুটা উপহারের মতোই ধরা দেয় ‘গিফ্‌ট অব এ ওয়েডিং’। স্টিভেনকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আলাপ হয় এক নার্সের সঙ্গে।  তিনি সন্ধান দেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির।  লরা-স্টিভেনের মতো মানুষদের ইচ্ছা পূরণই যাদের লক্ষ্য।

বিয়ের আগেই যে এমন কোনো ‘উপহার’ মিলতে পারে কল্পনাও করেননি লরা।  ‘গিফ্‌ট অব এ ওয়েডিং’ তাদের ফেসবুক পেজে লরাদের কথা লিখে। তারপরই ছুটে আসে একের পর এক সাহায্য-বার্তা।  

কেউ লিখেছেন, বিয়ের কেকটা তিনিই অর্ডার দেবেন।  কেউ বা আমন্ত্রণপত্র আর চিত্রগ্রাহকের ব্যবস্থা করতে চান।  নিমন্ত্রিতদের খাবার, মেকআপ, লরার পোশাক— এক একজন এক এক উপহার পাঠাতে শুরু করেন।  

গত শুক্রবার সকলের পাঠানো উপহার দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। শহরের একটি হোটেলে প্রথা মেনে বিয়ে করলেন দু’জনে।  মায়ের ওড়না ধরে দাঁড়িয়েছিল ছোট্ট লিডিয়া।  সামনের মাসেই তিন-এ পা দেবে সে।  

এটাই হয়তো মেয়ের সঙ্গে শেষ জন্মদিন— বিয়ের দিনেও বিচ্ছেদের সুর স্টিভেনের গলায়।
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে