রবিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৪১:৪৬

‘সোনাবন্ধু’ দেখতে হলে দর্শকদের ভিড়

‘সোনাবন্ধু’ দেখতে হলে দর্শকদের ভিড়

বিনোদন ডেস্ক: সিনেমা হল কথাটি শুনলেই মনে হয় ঠান্ডা হাওয়া, আরাম চেয়ারে বসে তিন ঘণ্টার পরিপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র।  তবে ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষেত্রে বিষয়টি মোটেও এমন আরামদায়ক ছিল না।  দেশের অধিকাংশ সিনেমা হলের চিত্র দেখলে মনে হয় কেন মানুষ এত কষ্ট করে এখনও সিনেমা দেখতে আসেন।

কিন্তু হঠাৎ ঠাকুরগাঁও বলাকা সিমেনা হলের সেই আগের জৌলুস ফিরে এসেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে মতো দেশের অন্যান্য জেলার গতকাল পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বলাকা সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘সোনাবন্ধু’ সিনেমাটি।

সম্পূর্ণ মৌলিক ও দেশীয় লোকজকাহিনী নিয়ে এই সিনেমাতে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীর গান রয়েছে। যা ইতোমধ্যে ইউটিউবে ঝড় তুলেছে।  সেই সঙ্গে ঠাকুরগাঁও বলাকা সিনেমা হলে ‘সোনাবন্ধু’ ছবিটি দেখার জন্য উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রোববার বিকেলে সোনাবন্ধু ফ্যান ক্লাব ঠাকুরগাঁওয়ের শহরের রোড সুগার মিলের প্রায় শতাধিক যুবক সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখেন।

গ্রাম বাংলার গল্প ও পটভূমি নিয়ে নির্মিত, মাহবুবা শাহরীন মিতু’র কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্যে জাহাংগীর আলম সুমন পরিচালিত, চিত্র নায়িকা পরিমনি, পপি ও সুপার হিরোইন লামিয়া মিমো অভিনীত চলচ্চিত্র ‘সোনাবন্ধু’।  সেই সঙ্গে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ডি এ তায়েব’র বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক।

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ডি এ তায়েব একজন পুলিশ কর্মকর্তা।  তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সাংস্কৃতিক উজ্জ্বল নক্ষত্র।  তার কর্মকাণ্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে ঠাকুরগাঁও পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এবারের কোরবানি ঈদে সিনেমা দেখতে আসা এক চলচ্চিত্রপ্রেমী যুবক সেলিম বলেন, আগের সময়ের সিনেমাগুলোর গান, কাহিনীতে প্রাণ ছিল।  এখন কোথায় সেই গল্প, গান বা নায়ক-নায়িকা।  পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে এসে লজ্জায় পড়তে হয়।  আমি পাঁচ বছর পর ঈদে দেখতে এসেছি ‘সোনাবন্ধু’ সিনেমাটি।  ইউটিউবে সিনেমার ট্রেইলার দেখে খুব ভালো লেগেছে।  পরিবারসহ দেখার মতো একটা সিনেমা এটি।

‘সোনাবন্ধু’ সিনেমার একজন অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও ডি এ তায়েবের চাচা ঠাকুরগাঁও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ জানান, দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাদ সম্বলিত এই সিনেমাটি আমাদের গ্রাম বাংলার কথা বলে।  আমাদের কৃষ্টিকে তুলে ধরে গ্রামীণ পটভূমিতে লোকজ প্রেম-বিরহ-বিচ্ছেদ ফুটে উঠেছে এই চলচ্চিত্রে।

তিনি আরও জানান, আমার বিশ্বাস এই ছবিটি দর্শক গ্রহণ করবে এবং ঠাকুরগাঁও জেলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ সিনেমাটি দেখবে।  সেই সঙ্গে পরিবারবর্গকে সঙ্গে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে এই সিনেমাটি দর্শকদের দেখার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, কিছুদিন আগে দেশের মুক্তিযুদ্ধ নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা ‘ভুবন মাঝি’ আমি নিজে হলে গিয়ে দেখেছি।  অসাধারণ লেগেছে সিনেমাটি।

প্রসঙ্গত, পুরনো কোনো সিনেমা হলের সামনে গেলে বোঝার উপায় নাই এটা একটা সময় সিনেমা হল ছিল।  একটা সময় ছিল যখন সিনেমার টিকিটের জন্য হলের সীমানা পেরিয়ে মানুষের লাইন চলে যেত রাস্তার ওপর।

গ্রীষ্মের দুপুর কিংবা শীতের সকালে ধাক্কা-ধাক্কি, মারামারি, ব্ল্যাকারদের নির্বিকার মুখ হল্লা, হয়তো কখনো বৃষ্টিতে কাকভেঁজা শরীরে হাতের মুঠোয় একটা কিবা দুটো টিকিট পেয়ে আনন্দে ফেটে পড়তো মানুষ।  এটা ছিল একটা সময়ের সিনেমা হলের দৃশ্য।

চলচ্চিত্রের এই বেহাল দশার কারণে একে একে মুখ থুবড়ে পড়েছে সিনেমা হলগুলো।  ঠাকুরগাঁও শহরে টিকে আছে শুধু বলাকা সিনেমা হল। সব মিলিয়ে জেলার দুটি একটি বাদে সকল প্রেক্ষাগৃহই এখন বন্ধ।  চলচ্চিত্র শিল্প ধসের কারণেই এ পরিস্থিতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।  তাই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সমন্বিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন সিনেমা হল মালিকরা।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে