মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৬:৫১:০৭

স্পেস পাচ্ছি না তাই আপাতত সিঙ্গেল!

স্পেস পাচ্ছি না তাই আপাতত সিঙ্গেল!

বিনোদন ডেস্ক: কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পায়েল সরকার এখন তার হাতে বেশ কয়েকটি কাজ রয়েছে।  এর মধ্যেও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই সক্রিয় পায়েল।  নতুন নতুন কাজে আপডেট থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া, ঘোরা-ফেরা সব কিছুর ছবি ফ্যানদের শেয়ার করেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি একজনের সঙ্গে একটু বেশী ছবি শেয়ার করছেন পায়েল।

নাম আবীর সেনগুপ্ত।  ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জমের রাজা দিল বর’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে ছিলেন পায়েল।  আর সেই ছবির পরিচালক ছিলেন আবীর।  গুঞ্জন রয়েছে ওই ছবির সময় থেকে তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে।

যদিও ব্যক্তিগত সম্পর্কে জীবন নিয়ে কখনোই সেরকম মুখ খুলতে দেখা যায়নি পায়েলকে।  রাজের সাথে সম্পর্কটা গুঞ্জন ছিল কিন্তু পরে শোনা যায় তা সত্যি।  যদিও বিচ্ছেদও ঘটে খুব তাড়াতাড়ি।  তবে নতুন এই সম্পর্ক নিয়ে পায়েল যে বেশ সিরিয়াস তা বোঝাই যাচ্ছে তার শেয়ার করা অন্তরঙ্গ ছবির দিকে তাকালে।  একান্ত সাক্ষাতকারে পায়েল জানালেন জীবনের নানা প্রশ্নের উত্তর।

প্র: তা হলে নায়িকার প্রত্যাবর্তন হল অবশেষে?

উ: আমি চলে গেলামই বা কবে!

প্র: কী বলছেন! ‘চলচ্চিত্র সার্কাস’-এর প্রচার থেকে বাদ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ছবি দিয়ে, তার উপর লাল কালির ঢেরা দেওয়া হল...

উ: দেখুন, সেটা তো আমি করিনি।  যিনি করেছিলেন, তিনিই এটা বলতে পারবেন।

প্র: সেটা আপনার প্রযোজক করেছিলেন।  কিন্তু ঝামেলাটা নিশ্চয়ই মিটিয়ে ফেলেছেন?

উ: আমার কাজ ছবি প্রোমোট করা সেটা আমি করব।  আর করছিও।

প্র: কিন্তু এর আগে আপনিই বলেছিলেন ‘চলচ্চিত্র সার্কাস’-এর কোনও কিছুতেই যুক্ত থাকতে চান না।

উ: হ্যাঁ, একটা খারাপ লাগা তৈরি হয়েছিল তখন।  তার পর পরিচালক মৈনাক ভৌমিক আমাকে ফোন করে।  ছবির পিআর করছে যে, সেও অনুরোধ করে।  ওদের কথাতেই রাজি হয়েছি।  যথেষ্ট খেটে কাজটা করেছিলাম।  একটু প্রোমোশন করে দিতে আর কী আছে! মৈনাক বলেছিল, আমার যাতে কোনও অস্বস্তি না হয়, সেটা দেখবে।  এখনও পর্যন্ত সে রকম কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

প্র: প্রযোজকের সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে?

উ: নাহ।

প্র: অনেকে বলছেন, এটাও এক ধরনের কম্প্রোমাইজ।  মিডিয়ার লাইমলাইটে থাকার জন্যই প্রচারে রাজি হয়েছেন।

উ: তা কেন? দীপাবলিতেই আমার আর একটা ছবি রিলিজ করছে।  এত বছর ধরে কাজ করার পর নিজের প্রচার নিয়ে আর ভাবি না।  আমি পেশাদার, তাই ছবিটা প্রোমোট করছি।

প্র: পায়েলের কেরিয়ার ভাল চলছে না বলেও খবর...

উ: (একটু থেমে) কার কোন ছবিটা চলছে বলুন তো? ‘পোস্ত’ ছাড়া আর কোনও ছবি চলেছে? হয় ফ্লপ, না হয় অ্যাভারেজ।  সেখানে দাঁড়িয়ে আমার দিকে আঙুল তোলা উচিত নয়।  ছবি হিট-ফ্লপ আমার হাতে নেই।  এখনও এটা পুরুষশাসিত ইন্ডাস্ট্রি।  ছবি চললে নায়ক বা পরিচালকেরই কৃতিত্ব হয়।  তা হলে খারাপ হলে শুধু নায়িকারই দোষ কেন হবে! যদি ‘কুইন’-এর মতো ছবি পাই আর সেটা না চলে তা হলে মেনে নেব, আমার জন্যই চলেনি।  তার আগে নয়।

প্র: ‘চলচ্চিত্র সার্কাস’ অনেক দিন আগে তৈরি।  এখন রিলিজও খুব তাড়াহুড়ো করেই হচ্ছে... বিষয়টা কী ভাবে দেখছেন?

উ: কোনও ছবি তৈরি হওয়ার পর এত দিন ফেলে রাখা ঠিক নয় বলেই আমার মত।  কিন্তু কী আর করা যাবে।  শেষ পর্যন্ত যে মুক্তি পাচ্ছে সেটাই যথেষ্ট।  মৈনাক খুব ভাল একটা ছবি বানিয়েছে।  বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরা কী হয়, সেটা পরদায় তুলে আনা খুব সহজ নয়।  ছবিটা স্যাটারিকাল।  আমি নায়িকার চরিত্র করছি।  একজন নায়িকাকে অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়।  আমাদের নিয়ে অনেক গসিপ তৈরি হয়।  এই সবটা দর্শক খুব খোলাখুলি দেখতে পারবেন।  ক্যামেরার পিছনে যে মানুষগুলো কাজ করেন, তাঁদের কথাও তো সামনে আসবে।

প্র: নিজের সঙ্গে রিলেট করতে পেরেছেন?

উ: খুব একটা নয়।  এই নায়িকা খুব ফ্র্যাজাইল।  মিষ্টি ব্যাপার রয়েছে।

প্র: ছবির নায়িকার মতো আপনিও তো ভাল ফ্লার্ট করতে পারেন...
উ: পারি, কিন্তু করি না তো।  ট্যালেন্ট নষ্ট করা উচিত নয় (হাসি)!

প্র: মৈনাক ছবিতে কতটা সত্যি বলেছেন?

উ: অনেকটাই বলেছে।  ছবি বানাতে গিয়ে কী কী সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।  আর্ট আর বাজেটের মধ্যে একটা লড়াই চলে...

প্র: (মাঝপথে থামিয়ে) খুব সুন্দর করে বিষয়টা বদলে দিচ্ছেন।  পায়েল সরকার এতটা নিরামিষ জবাব দিলে মানায়!

উ: না না, ট্র্যাকেই আছি (হাসি)... পরিচালককেও স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে কম্প্রোমাইজ করতে হয়।  আর নায়িকা ইন্ডাস্ট্রিটা যে রকম ভেবেছিল, এসে দেখল তা নয়।  এ বার কিন্তু আপনার আসল বিষয়ে ঢুকছি (হাতের মুদ্রায় কোট-আনকোট দেখিয়ে দিলেন)।  অনেক রকম টেম্পটেশন আছে।  সে কোন দিকে যাবে ভেবে পায় না।  অনেকে তার আবেগকে ব্যবহার করে।  নায়িকাদেরও মন ভেঙে যায়, তার পরেও কাজ করতে হয়।  সেটাও এক ধরনের কম্প্রোমাইজ।

প্র: প্রযোজক বা পরিচালকের সঙ্গে তো আপনারও প্রেম হয়েছে।

উ: আমি কারও সঙ্গে একটা ছবি করলেই এ সব রটে যায়।

প্র: রটনাগুলো মিথ্যে নাকি? দু’জন পরিচালকের (রাজ চক্রবর্তী ও আবির সেনগুপ্ত) কথা তো অস্বীকার করতে পারবেন না।

উ: ওটা করছি না।  তবে কোনও প্রযোজককে কখনও ডেট করিনি।  করতে হয়ওনি।  এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি।

প্র: আবিরের সঙ্গে কী সমস্যা হল?

উ: ক্লোজড চ্যাপ্টার।  এটা নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই।  সম্পর্কটা ওয়র্ক করল না।  হয়তো আমিই কোনও রিলেশনশিপের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।  এখনই আর কোনও কমিটমেন্টে যেতে চাই না।

প্র: এটা তো সব নায়িকাই বলেন।

উ: আমি সত্যি বলছি।  সম্পর্কে জড়িয়ে গেলে কাজের ক্ষতি হয়।  আমাদের পেশাটা খুব ডিমান্ডিং।  এই পরিস্থিতিতে দুটো লোকের তালমিলটা জরুরি।  মা-বাবাও কোনও চাপ দেন না।  আসলে ওঁরা আমাকে চিরকাল খুব স্বাধীনতা দিয়েছেন।  সম্পর্কে গেলেই দেখেছি স্বাধীনতাটা হারিয়ে যাচ্ছে, স্পেস পাচ্ছি না।  এটা হয়তো আমারই সমস্যা।  তাই আপাতত সিঙ্গল।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে