বিনোদন ডেস্ক : টলিউড প্রয়াত রীতা কয়রাল জনপ্রিয় ছিলেন সহকর্মীদের প্রতি তার সহমর্মিতা ও স্নেহের জন্য। একজন বড় দিদির মতোই নানা ভাবে আগলে রাখতেন সবাইকে, বিশেষ করে সহ-অভিনেত্রীদের।
প্রিয়মের টেলিভিশন কেরিয়ারের প্রথমদিকে, ইটিভি বাংলার ‘নিয়তি’ ধারাবাহিকের শ্যুটিং ফ্লোরে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন প্রিয়ম ও রীতা কয়রাল কিন্তু প্রয়াত অভিনেত্রীর উপস্থিত বুদ্ধির জোরে দু’জনেই মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পান। বিশেষ করে প্রিয়মকে প্রাণহানির থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
গত ১৯ নভেম্বর মৃত্যুসংবাদটি পাওয়ার পর থেকেই অত্যন্ত শোকগ্রস্ত প্রিয়ম। এবেলা ওয়েবসাইটের কাছে রীতাদির স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে প্রথমেই জানালেন সেই ঘটনাটির কথা—
‘আমি প্রাণে বাঁচতাম না। অথবা বেঁচে থাকলেও তার কোনও মানেই থাকত না, আমার অভিনেত্রী জীবন শেষ হয়ে যেত কারণ আমার পুরো মুখটাই পুড়ে যেত। ‘নিয়তি’-তে রীতাদি আমার কাকিমার চরিত্রে অভিনয় করত এবং খুব পজিটিভ চরিত্র ছিল।
গল্পে দেখানো হয়েছিল যে নায়িকা মানে আমার চরিত্রটি যাকে ভালবাসে সে ছেড়ে চলে গিয়েছে এবং তখন নায়িকা মা হতে চলেছে। ওই সময়ে তাকে অন্য একজনের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই বিয়ের সিকোয়েন্স প্রায় ডে-নাইট ধরে শ্যুটিং হতো। একদিন রাত প্রায় তিনটে বাজে। অলমোস্ট কারও হুঁশ নেই।
আমার আর রীতাদির সিন চলছিল— সাজেশন শট। শ্যুটিং ফ্লোরে যে বড় বড় চায়না বাল্বগুলো থাকে, তার দুটো অনেকটা নামিয়ে আনা হয়েছিল আমার মাথার উপরে কারণ ক্লোজ শট নেওয়া হচ্ছিল। রীতাদির সাজেশনে আমার শটটা চলছিল। খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার মনোযোগটা ক্যামেরার দিকে ছিল।
আমি খেয়ালই করিনি, ইন ফ্যাক্ট কেউই খেয়াল করেনি যে মাথার উপরে চাইনিজ বাল্ব দুটো পুড়তে শুরু করেছে। সবার প্রথম রীতাদি দেখেছিল। তখন দুটো বাল্বই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করেছে আর একটা বাল্ব সবে ফাটতে চলেছে... রীতাদি সেকেন্ডের মধ্যে আমার মুখটা হাত দিয়ে ঢেকে, আমাকে নিয়ে লাফিয়ে পড়েছিল পাশে রাখা একটা খাটে।
রিফ্লেক্সে আমার হাত দুটো উঠে গিয়েছিল। বাল্বটা ফেটে আমার গলায়, আমার হাতে ছিটকে এসেছিল টুকরোগুলো। চামড়া পুড়ে গিয়েছিল, এখনও সেই দাগ রয়েছে। কিন্তু রীতাদি আমার মুখটা ওভাবে ঢেকে রেখেছিল বলে মুখে কিছুই হয়নি...। শুধু তাই নয়, আর এক সেকেন্ড দেরি হলে আমার মাথার উপর পড়ত জ্বলন্ত বাল্বটা। আমাকে বাঁচানো যেত না হয়তো...।’
এমটিনিউজ/এসএস